Saturday, July 18, 2020

ভাগবত পুরান নিয়ে কৃৈষ্ণবদের ভন্ডামি

অনেকেই বলে থাকেন যে ব্যাসদেব নাকি সর্ব শাস্ত্র রচনা এবং বেদ কে পরিবর্ধন করে শান্তি পাচ্ছিলেন না। অর্থ্যাৎ উনি নাকি সকল বেদ (উপনিষদ সহ), পুরান লিখেও নাকি শান্তি পাচ্ছিলেন না। পরে উনি নাকি ভাগবত রচনা করেন। ভাগবত ব্যাবসায়ীরা এও বলে থাকেন যে উনি নাকি আত্মপলব্ধির চরম পর্যায়ে এসে নাকি ভাগবত রচনা করেন। তাই ইহা সর্ব শাস্ত্রের সার(!!!!) । আজ দেখবো এই বাক্য কতটুকু সত্য আর কতটুকু মিথ্যা।

ইস্কনের বিশাল এক পন্ডিত উনাদের এক ভিডিওতে  আমার উপোরক্ত কথাগুলই বলেছেন। উনি এ-ও বলেছিলেন যে ব্যাসদেব নাকি ১০৮ খানা উপনিষদ রচনা করেছেন। আবার কোন কোন স্থানে লেখা ১০০৮ খানা উপনিষদ। আসল উপনিষদ কয়টি তা আজও আমি জানি না।  আল্লাহপনিষদও আজকাল ব্যাসদেবের রচনা বলে চালিয়ে দেয়া হচ্ছে। তো আমার ইস্কনি প্রভু বলেছেন যে ১৮টি মহাপুরান রচনার পর উনি নাকি অমল পুরান বা ভাগবত রচনা করেন। তাহলে ১৮ পুরানের মাঝে তো ভাগবত একটি। তাহলে ১৮ পুরান রচনার পর উনি আবার কোন ভাগবত রচনা করেন? আমার মাথায় ঢুকছে না।

তো উনার স্লিপ অফ টাং হয়েছে মানে ১৭ এর স্থানে প্রভু উত্তেজনা বসত ১৮ বলে ফেলেছেন মেনে আমি উনার কথা মেনে নিচ্ছি। আর ১৮ নাম্বার পুরান হিসাবে ভাগবত কে মেনে নিচ্ছি। এবার দেখি শাস্ত্র কি বলে? আসুন শুরু করা যাক।

প্রথমেই উনাদের প্রানপ্রিয় ভাগবত পুরানে দেখি।

ভাগবত ১২/১৩/ শ্লোক ৪-১০



 

আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি যে বিভিন্ন পুরানের শ্লোক সংখ্যা দেয়া হয়েছে । এখানে ৪ এবং ৫ নং শ্লোক খেয়াল করুন। ভাগবত পুরান আসছে ৫ নম্বরে। ব্রহ্ম, পদ্ম, বিষ্ণু, শিব এবং এরপর ভাগবত। মানে ভভাগবত পুরান মতেই ভাগবত ৫ নম্বর পুরান। মানে ১৭ পুরান পরে ১৮ নম্বরে গিয়ে ইহা রচনা হয় নাই। শুধু এখানেই না আরও আছে।

আসুন বিষ্ণু পুরানের ৩য় অংশের, ষষ্ঠ অধ্যায়, ২১-২৫ নম্বর শ্লোকে তাকাই।




স্ক্রীনশট খেয়াল করুন। এইখানে স্পষ্ট বলা আছে যে কোন পুরান কিভাবে রচনা হয়েছে। তার আগে ২০ নম্বর শ্লোক দেখে নেই। পুরানজ্ঞ পুরুষ ১৮ টি পুরানের কথা বলেন এর মধ্যে প্রাচীনতম হল ব্রহ্ম পুরান। ব্রহ্ম, পদ্ম, বিষ্ণু, শিব এবং এরপর ভাগবত এখানেও তাই। তাহলে লেটেষ্ট কি? এখানে বা আগের শ্লোক মতে ব্রম্মান্ড পুরান হল ১৮নং পুরান। তাহলে আমার কৃৈষ্ণব প্রভুজি কি বলেছিলেন? আর এখানে কি দেখতে পাচ্ছি?
এরপর শেষে আসছি লিঙ্গ পুরানে। যা ১৮ পুরানের একটি। লিঙ্গ পুরানের পূর্বভাগের ৩৯ তম অধ্যায়, ৬১- ৬৩ নং শ্লোক পড়ে নিতে পারেন।


সেখানেও বলা হচ্ছে একই কথা। ভাগবত পুরান এখানেও পঞ্চম। আর সর্বশেষ পুরানের নাম এখানেও ব্রহ্মাণ্ড পুরান।    

তাহলে দেখতে পাচ্ছি সকল পুরান একই কথা বলছে। বিষ্ণু পুরানে তো স্পষ্ট করে বলেই দেয়া হচ্ছে যে প্রথমে রচনা  হয়েছিল ব্রহ্ম পুরান, এরপরে পদ্ম, বিষ্ণু, শিব এরপর ভাগবত। মানে সেখানে রচনা পর্জন্ত ক্রনলজিকাল অর্ডারে বলেই দেয়া হয়েছে। এমনকি নারদ পুরানও যদি ঘেটে দেখেন তাহলে পাবেন একই কথা। একই লিষ্ট। কোথাও লেখা নেই যে সর্বশেষ হল ভাগবত পুরান। সকল স্থানেই সর্বশেষ ব্রহ্মাণ্ড পুরানকে বলা হয়েছে।

তাহলে প্রমানিত হল যে জনৈক কৃৈষ্ণব যে মিথ্যা এবং নিজের মনের বানোয়াট কথা বলছেন। উনাদের যে দাবী মিথ্যা তা পুরান থেকেই প্রমান হল। এবার উনারা কি দেখাতে পারবেন যে সর্বশেষ পুরান হল ভাগবত পুরান। ভন্ড ইস্কন তথা কৃৈষ্ণব থেকে সাবধান হন। 

হর হর মহাদেব। 


সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts