Wednesday, September 13, 2017

পরমেশ্বর ভগবান শিবের গাঁজা খাওয়া এবং গাঁজার ইতিকথা

অনেকে শিবকে নিয়ে এই ভাবে কটুক্তি করে যে, শিব গাঁজা খায়, আর গাঁজাখোর শিবকে হিন্দুরা পূজা করে, ইত্যাদি ইত্যাদি ইত্যাদি।যারা এই ভাবে কটূক্তি করে, তারা জানে না শিবের আসল পরিচয় এবং তারা এটাও জানে না যে, গাঁজা আসলে কোনো মাদকদ্রব্য নয়। এই দুটি বিষয় সবার কাছে পরিষ্কার হবে, আজকের এই পোস্টে। প্রথমেই বলি শিব কে ? হিন্দুশাস্ত্র মতে, সৃষ্টিকর্তা বা ঈশ্বর হলো পরমব্রহ্ম, যাকে শুধু ব্রহ্মও বলা হয়। পরমাত্মারূপে এই ব্রহ্ম সবকিছুর মধ্যে বিরাজিত, এই জন্যই হিন্দু শাস্ত্রে বলা হয়েছে,
“সর্বং খল্বিদং ব্রহ্ম”
এর অর্থ হলো- সকলের মধ্যে ব্রহ্ম বিদ্যমান। - (ছান্দোগ্য উপনিষদ, ৩/১৪/১, বেদান্ত দর্শন)
পরমব্রহ্ম, ব্রহ্মা-বিষ্ণু-মহেশ্বর, এই তিনটি রূপে তার কাজ সম্পন্ন করে থাকেন। ব্রহ্ম, যখন সৃষ্টি করেন, তখন তার নাম ব্রহ্মা; যখন তিনি পালন করেন, তখন তার নাম বিষ্ণু; যখন তিনি বিনাশ করেন, তখন তার নাম শিব বা মহেশ্বর। এই ব্যাপারটা আর একটু পরিষ্কার করার জন্য বলছি, অনেকে বা সকলেই জানেন যে, বিষ্ণু হলো পালন কর্তা। তাহলে বিষ্ণুর অবতারদের তো যুদ্ধ, ধ্বংস, বিনাশ এই সব করার কোনো প্রয়োজন নেই। কিন্তু বিষ্ণুর আংশিক অবতার রাম কি যুদ্ধ করে রাবনের বংশকে বিনাশ করে নি ? বিষ্ণুর পূর্ণ অবতার শ্রীকৃষ্ণ কি নিজে কংস, শিশুপাল, নরকাসুরকে হত্যা করে নি ? কৃষ্ণ কি ভীমের মাধ্যমে জরাসন্ধ, দুর্যোধনকে হত্যা করায় নি ? কৃষ্ণ, পাণ্ডবদের মাধ্যমে কুরুবংশকে ধ্বংস করে নি ? বিষ্ণু যদি কোনো আলাদা সত্ত্বা হতো আর তার কাজ শুধু যদি পালন করা হতো, তাহলে কি সে এই যুদ্ধ, বিনাশগুলো করতো ? আসলে এগুলো করিয়েছেন ব্রহ্ম, আমাদের শাস্ত্রকাররা তাদেরকে শুধু বিষ্ণুর অবতার হিসেবে কল্পনা করে ঘটনাগুলোকে ব্যাখ্যা করেছেন মাত্র। না হলে পৃথিবীতে এত বিষ্ণুর অবতার, সেই তুলনায় ব্রহ্মা ও শিবের কোনো অবতার নেই কেনো ? আসলে- ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও মহেশ্বর তো আলাদা কেউ নয়। ব্রহ্ম, যখন সৃষ্টি করেন, তখন তারই নাম ব্রহ্মা; যখন তিনি পালন করেন, তখন তারই নাম বিষ্ণু এবং যখন তিনি বিনাশ করেন, তখন তারই নাম শিব বা মহেশ্বর; যে কথা বলা আছে গীতার এই শ্লোকে-

“অবিভক্তংচ ভূতেষু বিভক্তমিব চ স্থিতম্।

ভূতভর্তৃ চ তজজ্ঞেয়ং গ্রসিষ্ণু প্রভবিষ্ণু চ।।”
অর্থ- পরমেশ্বরকে যদি যদিও সমস্ত ভূতে বিভক্তরূপে বোধ হয়, কিন্তু তিনি অবিভক্ত। যদিও তিনি সর্বভূতের পালক, তবু তাঁকে সংহার কর্তা ও সৃষ্টিকর্তা বলে জানবে।
শিব পৃথিবীতে জন্ম নেয় নি; তাহলে যে পৃথিবীতে জন্ম নেয় নি, তার কোনো খাদ্যের প্রয়োজন হবে না, । তাহলে শিবের গাঁজা খাওয়ার প্রশ্ন আসছে কোথা থেকে ? আমাদের মুনি-ঋষিরা ধ্যান করতেন। ধ্যান আসলে গবেষণা। হিন্দিতে ধ্যান শব্দের অর্থ মনোযোগ। তার মানে কোনো কিছুর প্রতি মন নিবিষ্ট করাই হলো ধ্যান। আর যেখানে মন নিবিষ্ট হয়, সেখানেই কোনো নতুন কিছুর উদ্ভব বা আবিষ্কার হয়। এই ধ্যান বা গবেষণা করতে গিয়ে আমাদের মুনি-ঋষিরা উপলব্ধি করেছিলেন, প্রকৃতির লক্ষ লক্ষ গাছ পালার মধ্যে রয়েছে অজস্র ভেষজ বা ঔষধি গুন। এ থেকেই তারা আবিষ্কার করেন আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা শাস্ত্র, যা পৃথিবীর প্রথম চিকিৎসা জ্ঞান। এই চিকিৎসা জ্ঞান বেদের অংশ বলেই এর নাম আয়ুর্বেদ। অর্থাৎ বেদ এর যে জ্ঞান মানুষের আয়ু বাড়ায় তাই আয়ুর্বেদ। এই আয়ুর্বেদ বলছে, গাঁজার রয়েছে অসংখ্য ঔষধি গুন, যা স্বল্পমাত্রার ব্যবহারে মানুষ তার উপকার পেতে পারে। কিন্তু গাঁজা খেলে যেহেতু একধরণের নেশা হয় এবং মানুষ এটা বার বার খেতে বাধ্য হয়, তাই আধুনিক যুগ শুরু হলে, অনেকেই এটাকে মাদক হিসেবে বিবেচনা করতে শুরু করে এবং এটা এবং এর সেবনকারীরা, সমাজে একেবারে ঘৃণিত না হলেও তারা সমালোচনার পাত্র হয়ে পড়ে। স্বল্প পরিমানের গাঁজা খাওয়ার যে বিজ্ঞানভিত্তিক কী উপকারিতা, সেটা আমি একটু পরেই বিস্তারিতভাবে আলোচনা করবো; কিন্তু গাঁজা খেলে যে তাৎক্ষণিকভাবে কোনো কাজে বা কোনো বিষয়ে গভীর মনোযোগের সৃষ্টি হয় বা গাঁজা সেবনকারী কোনো বিষয়ে গভীরভাবে মনোযোগ দিতে পারে, এটা কিন্তু বাস্তবভাবে প্রমাণিত। এজন্যই আমাদের মুনি-ঋষিরা তাদের ধ্যান বা গবেষণায় মনোযোগ বৃদ্ধির সুবিধার্থে স্বল্প পরিমান গাঁজা সেবন করতেন। আমাদের মুনি ঋষিদের পরম্পরা হলো বর্তমানের সাধু-সন্ন্যাসী, এই পরম্পরা চলে আসছে প্রায় ৮/১০ হাজার বছর আগে থেকে; তো মুনি ঋষিরা যা করতেন, তার কিছু কিছু বৈশিষ্ট্য আমাদের সাধু সন্ন্যাসীদের মধ্যে এখনও আছে। এই ভাবে সমাজ সংসার ত্যাগ করা, পাহাড় জঙ্গল শ্মশানে বিচরণকারী সাধু-সন্ন্যাসীদের মধ্যে গাঁজা সেবনের প্রচলন এখনও আছে এবং প্রাচীন বা মধ্যযুগেও ছিলো। কিন্তু মধ্যযুগের শেষ এবং আধুনিক যুগের শুরুর দিকে যখন গাঁজাকে মাদক হিসেবে বিবেচনা করা শুরু হলো, তখন সাধু-সন্ন্যাসীদের মতো ব্যক্তি কেনো গাঁজা খায়, এই প্রশ্নের জবাবে আমাদের সাধু-সন্ন্যাসীরা বিব্রত হলো; কারণ, এর ভেষজগুন সম্পর্কে তাদের কোনো স্পষ্ট এবং বিজ্ঞানভিত্তিক ধারণা ছিলো না, কিন্তু তারা যেহেতু খায় এবং তাদেরকে যেহেতু এটা খেতে হবে, তাই আত্মপক্ষ সমর্থন ক’রে এটা সেবনের জন্য তারা বলে দেয়, আমাদের মহাদেব শিবও গাঁজা সেবন করতেন এবং শিবের বেশ ভূষা যেহেতু সাধু সন্ন্যাসীদের মতোই এবং সে সব সময় থাকে ধ্যানমগ্ন, সেহেতু শিবের সাথে গাঁজা সেবনের এই গল্প খুব সুন্দরভাবে মানিয়ে যায় এবং লোকজন তা বিশ্বাস করে ফেলে। এভাবেই সমাজে শিবের গাঁজা সেবনের গল্প ছড়িয়ে পড়ে এবং শেষ পর্যন্ত তা মধ্যযুগের শেষ কবি ভারতচন্দ্র রায়গুনাকরের অন্নদামঙ্গল কাব্যের মাধ্যমে তা লোকমনে একেবারে সুপ্রতিষ্ঠিত রূপ পায়; কারণ, সেই কাব্যে বলা আছে, স্বয়ং শিবঠাকুর গাঁজা-ভাং খেয়ে কচুরিপানায় উপর দিয়ে দিব্যি হেঁটে বেড়াতেন। এইসব বিবেচনা থেকেই বাংলা গান বানানো হয়েছে,
“গাঁজার নৌকা পাহাড় বাইয়া যায়।”
হিন্দু শাস্ত্রে গাঁজার অবস্থান মহাদেবের সাথে জড়িয়ে আছে
মূলত বন জঙ্গল পাহাড়ে বসবাসকারী ও বিচরণকারী আমাদের স্বল্পজ্ঞানী সাধু সন্ন্যাসীরা নিজেদের গাঁজা সেবনকে বৈধতা দেওয়ার জন্য মহাদেব শিবের উপর এই কলঙ্ক লেপন করে এবং যেহেতু মনে করা হয় যে, সাধু সন্ন্যাসীরা শাস্ত্র পড়ে এবং তারা শাস্ত্র সম্পর্কে ভালো জানে এবং যেহেতু বেশ ভূষা ও ধ্যানমগগ্নতার দিক থেকে শিব হলো সাধু-সন্ন্যাসীদের রোল মডেল, সেহেতু জনসমাজে শিবের নামে গাঁজা খাওয়ার এই অপপ্রচার খুব সহজেই বিশ্বাসযোগ্যভাবে ছড়িয়ে পড়ে। যা হোক, অপপ্রচার করে যতই শিবের নামে গাঁজা খাওয়ার অপবাদ দেওয়া হোক, একটা প্রশ্নে এই থিয়োরি সম্পূর্ণ ধ্বসে পড়বে, আর তা হলো, পৃথিবী যে শিব জন্ম নেয় নি, তার খাবারের প্রয়োজন হবে কেনো ? আর যদি কেউ বলে, পৃথিবীতে শিব ছিলেন। তখন তাকে প্রশ্ন করবেন, তাহলে সেই শিব মরলেন কোথায় এবং কিভাবে ?
কেন গাঁজা খারাপ?
মারিজুয়ানা বা গাঁজা ভারতবর্ষে ১৯৮৫ পর্জন্ত লিগাল ছিল। এরপর আমেরিকান প্রেসারে তৎকালীন রাজীব গান্ধীর সরকার তা বন্ধ করে দেয়। কেন করে দেয়? বিস্তারিত বলার আগে আসুন জেনে নেই এর আসল নাম। Cannabis sativa যা এই গোত্রের হেড প্ল্যান্ট। যার শুকানো ফুল থেকে মারিজুয়ানা বা গাঁজা তৈরি হয়। এর কুঁড়ি কে ঘষে ঘষে হাশিশ বা চরস তৈরি হয়। এই গুল্মের আরেকটি ভেরাইটি প্ল্যান্ট হল হেম্প আর এই গাছের পাতা অথবা বীজ থেকে ভাং তৈরি হয়। ভাং ভারতে যদিও ম্যাস লেভেলে ইউজ হয় কারন কালচারাল একটা ইম্প্যাক্ট থেকেই যায় কারন সেখানে ভাং ব্যাবহার করা হয় মহাদেবের প্রসাদ হিসাবে তাছাড়া সেখানে অনেকেই আজও মদ বা সিগারেটের বদলে গাঁজা সেবন করে। এমনকি আয়ুর্বেদের মেডিসিন তৈরিতে গাঁজা কাঁচামাল হিসাবেও ব্যাবহার হয়। যারা অর্গানিক অর্গানিক বলে লাফাচ্ছেন ইনারা কেন জানি মেডিসিন, এলকোহল কিংবা নিকোটিন সেবন করার সময় এই অর্গানিক শব্দটা ভুলে যান। কারন একটাই “ মানুষ কি বলবে !”
আসুন দেখি পবিত্র বেদ কি বলে।
অথর্ব্ববেদ

অধ্যায় নম্বর ১১, ভারাক নম্বর ৬, মন্ত্র নম্বর ১৫ কি বলে?
পঞ্চ রাজ্যানীবিরুধাম সোমাসরেস্থানী ব্রুম্ম
দার্ভো ভাংইয়াভা শাস্তেনো মুঞ্ছান্তাভাবমহাসা।।
অনুবাদঃ আমরা আবাহন করি অতিগুরুত্বপুর্ন ৫টি ঔষধি গুল্ম যাদের প্রধান হলেন সোম। যার মূল, ডাটা, পাতা, বীজ, ফুল এবং ফল আমাদের কাছে পবিত্র। এবং আমরা আবাহন করি দুর্বাঘাস এবং সেই উদ্দিপক গুল্মকে যা থেকে সোমরস বা ভাং তৈরি হয় এবং তাঁদের শক্তিকে এবং আমরা প্রার্থনা করি তাঁদের দ্বারা যাতে আমরা সমস্ত পাপ তথা সমস্ত রোগ যন্ত্রনা থেকে মুক্তি পাই।
অথর্ব্ববেদ অধ্যায় নম্বর ১১, ভারাক নম্বর ৬, মন্ত্র নম্বর ১৫


আমরা সবাই জানি সোমরস কি আর ভাং কিসের মাধ্যমে তৈরি হয়। বেদ যাকে সম্মান দিচ্ছে সেখানে কিছু মানুষদের খারাপ কথায় কি কিছু যায় আসার কথা? বেদ বার বার আমাদের বলেছেন গাঁজা বা কেনিবাস হল সৃষ্টির সবথেকে পবিত্র ৫টি গাছের মাঝে একটি। যা আমাদের আনন্দ দেয় , জ্ঞ্যান শক্তি বিকশিত করে আর রোগ মুক্তি দান করে।
এত গুরুত্বপুর্ন এই গাছকে তাহলে কেন নিষিদ্ধ বা ব্যান করা হল? চলুন দেখে নেই বিস্তারিত, ১৯৬১ সালে আমেরিকান প্রেসারে এসে ইউনাইটেড নেশনর একটি কনভেনশনের মাধ্যমে এই গাছটিকে সিন্থেটিক ড্রাগের ক্যাটাগরিতে ফেলে দেয়া হয়।
ইউএন ! পড়ালেখা করা স্যুট বুট পড়া এত জ্ঞ্যানীরা এটা বুঝলেন না এটা সিন্থেটিক ড্রাগ কিভাবে? এই প্ল্যান্টে কি কোনভাবে কৃত্তিমতা আছে? উনারা এটা কিভাবে বুঝলেন না একটা টবে মাটি নিলাম, বীজ দিলাম, কেনিবাস গাছ হল, এর শুকনো পাতা কিভাবে সিন্থেটিক ড্রাগ হয়? যারা সিন্থেটিক ড্রাগ বোঝেন না এরা এই লিঙ্কে দেখুন https://en.wikipedia.org/wiki/Designer_drug যে কারনে একে সিন্থেটিক বলা হচ্ছে তা হল পেস্টিসাইড। প্রশ্ন হল এমন অনেক অনেক মারিজুয়ানার গাছ আছে জাতে পেষ্টিসাইড করা লাগে না। তাহলে এটা সিন্থেটীক কিভাবে হল?? কোকেন আর হেরোইন এর মতন এই মুল্যবান গাছটিকেও একি ক্যাটাগরিতে ফেলে দেয়া হল। যদিও এসব ক্ষতিকর ড্রাগ থেকে গাঁজার অবস্থান অনেক অনেক দূরে। যাইহোক, তখন ভারত এই ট্রিটিতে সাইন করতে অপারগতা প্রকাশ করে কারন তখন গাঁজা ব্যাবহার করে ভারতে আয়ুর্বেদিক ঔষধ বানানো হতো। আর এতে বাইরের ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি এইদেশে সুবিধা করতে পারছিল না কারন আয়ুর্বেদ সাইডেফেক্ট ছাড়া অনেক অসুখ বা রোগ নির্মুল করে ফেলত। তাছাড়া একে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা বিজ্ঞ্যানে পেনিসিলিন হিসাবেও ব্যাবহার করা যেত। মানে আয়ুর্বেদে এই গাছটির মান অনেক উপরে।
১৯৬১ নারকটিক এক্ট

এবার একটা ব্যাপার চিন্তা করুন।
প্রেসার কে দিল? আমেরিকা ।
অথচ ভারতের মাঝে এই গাছটি ইলিগাল।
ইলিগাল কে করালো? আমেরিকা।
মজার ব্যাপার হলো আমেরিকার মোট ২৭টি স্টেটে মারিজুয়ানা লিগ্যাল মেডিসিন পারপাসের কারনে।
আরও মজার ব্যাপার হলো এই ২৭টি স্টেটের মাঝে ১১টি স্টেটে এই গাছকে রিক্রিয়েশনের জন্য ব্যাবহার করা হয়। তাছাড়া শুধু আমেরিকা না এই গাছটি ৪০+ বেশীর দেশে লিগ্যাল। মজার ব্যাপার হল এইসব দেশে গ্রস হেপিনেস ইন্ডেক্স ভারত থেকে অনেক অনেক বেশী। ইউরোপ, আমেরিকা ও আফ্রিকার অনেক দেশ ইতোমধ্যেই চিকিৎসাশাস্ত্রের খাতিরে গাজাকে বৈধতা দিয়েছে। প্রাথমিকভাবে যুক্তরাষ্ট্রে কলোরাডোতে প্রথম বৈধতা দেয়া হয়েছিল। এরপর কলোরাডোতে গাজা বৈধকরণের সফলতার পর অন্যান্য রাজ্যগুলোও ধীরে ধীরে এগিয়ে আসছে। এর বাইরে নতুন করে চিলি তাদের দেশ গাজাকে শুধু বৈধতাই দেয়নি, প্রতিটি নাগরিক সর্বোচ্চ পাঁচটি গাজা গাছ লাগাতে পারবে সেই অনুমোদনও দিয়েছে। শুধু তাই নয়, কানাডা, স্পেন, হল্যান্ড ও অস্ট্রিয়া মারিজুয়ানাকে ঔষধ হিসেবে গ্রহণের অনুমতি দিয়েছে।
কেন এই প্রপাগান্ডা?
আসলে এই ষড়যন্ত্র যা দেখছেন তা সব আমেরিকান ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি, এলকোহল বেভারেজ, লিকার আর টোব্যাকো কোম্পানি গুলোর সমন্বয়ে তৈরি। কেন? প্রথমে আসি ফার্মাসিটিক্যাল কোম্পানি এই গাঁজা দিয়েই পেইন কিলার আর ঔষুধ বানিয়ে আপনার কাছে উচু দামে বিক্রী করে। তাই গাঁজা কে লিগাল করা হলে উনাদের ধান্দার ১২টা বেজে যাবে। এবার ভাবছেন আমি এসব কি বানিয়ে বলছি? একদম না। অভিজিৎ প্রতাপ আর যাই করুক বানানো জিনিস বিশ্বাস করে না। বিনা ফ্যাক্টে আমি কোন কথা বলি না। ওয়াশিংটন পোষ্টের রিপর্ট অনুযায়ী আমেরিকার যেসব স্টেটে মারিজুয়ানা লিগ্যাল সেসব স্টেটে পেইনকিলারের ব্যাবহার কমে এসেছে। একি ভাবে ঐসব স্টেটে এলকোহল খাবার প্রবনতাও ১০% কমে এসেছে। তাহলে ব্যাপারটা এই দাঁড়ালো যে মারিজুয়ানা লিকার আর টোব্যাকো ইন্ডাস্ট্রিকে ধ্বংস করছে।

https://www.washingtonpost.com/news/wonk/wp/2016/07/13/one-striking-chart-shows-why-pharma-companies-are-fighting-legal-marijuana/?utm_term=.d1f295dd7647



আর সমাজসেবার নামে মানুষদের ১২টা বাজানোর জন্য আর একটি ইন্ডাস্ট্রি হল এনজিও বা হেলথ অর্গানাইজেশনস গুলো। এদের ভাষ্য মতে
মারিজুয়ানা আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ!

এবার একটু চিন্তা শক্তিতে শান দিন। এদের ফান্ড কোথা থেকে আসে? গেস করুন তো? আমি বলছি ফার্মাসিটিক্যাল , লিকার আর টোব্যাকো কোম্পানি গুলো থেকে। আমেরিকার অনেক বড় কোম্পানি গুলো মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার এনজিও গুলোকে ডনেট করে যাতে পাব্লিকের মাঝে এরা গাঁজা নিয়ে একটি নেগেটিভ পারসেপ্সন বানিয়ে রাখতে পারে।



https://www.washingtonpost.com/news/wonk/wp/2017/04/19/11-charts-that-show-marijuana-has-truly-gone-mainstream/?utm_term=.ba5bb9905e04


http://www.paho.org/disasters/index.php?option=com_content&view=article&id=545%3Adrug-donations&Itemid=661&lang=en



এরকম শুধু আমেরিকান কোম্পানিগুলো না। অনেক ভারতীয় কোম্পানি গুলোও করে থাকে। আর এসব কাজ এরা এতটাই সিক্রেটলি করে থাকে যে এদের নাম এক্সপজ করা সম্ভব হয় না। তবে একজনের নাম বলা যাবে । ২*২=৪ আপনারা মিলিয়ে নিবেন! উনার টাইটেল মালিয়া। ভারতের বিখ্যাত ব্যাবসায়ী জিনি আইপিএল সহ অনেক কিছুর সাথেই ইনভল্ব।
যদি এখন কেউ বলেন এর স্বাস্থ্যগত ঝুঁকির কথা তাহলে বলবো, যেকোনো কিছুকে লিমিটের বাইরে গ্রহন করলে সাইড এফেক্ট থাকবেই। ভাত বেশী খেলে শারীরিক ঝুঁকির কথা আশা করি যারা শিক্ষিত আছেন তাঁদের বুঝিয়ে বলা লাগবে না। বেশী পানি পান করলেও আপনি বমি করবেন। এরমানে এই না পানি বা ভাত আমাদের স্বাস্থ্যের জন্য খারাপ। হেলথ কন্ডিশনের ব্যাপারে কথা বললে বলতে হয়, গাঁজার থেকে সিগারেট আর এলকোহল ১১৪% বেশী ক্ষতিকর। তাহলে এসব লিগ্যাল কেন?
ভারতে প্রতি ৯৬ মিনিটে একজন মানুষ মদ খাবার জন্য মারা যান। অন্যদিকে গাঁজা সেবন করার জন্য লাষ্ট একজন মারা গিয়েছিলেন জিনি রাস্তা ক্রস করার সময় মদে মাতাল এক গাড়ী চালক উনাকে ধাক্কা দেন। আর এখানেও মদেরই এফেক্ট জাজ্বল্যমান।
আমরা জানি আয়ুর্বেদ অথর্ব্ব বেদের অন্তর্গত। আর অথর্ব্ববেদ কে আমাদের মাঝে নিয়ে এসেছিলেন পরমেশ্বর শিব। আমাদের মুনি-ঋষিরা তাদের ধ্যান বা গবেষণায় গাঁজার উপকারিতা সম্পর্কে জেনেছিলেন এবং তা লিপিবদ্ধ করেছিলেন আমাদের আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে; আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের সেই কথাই নতুন করে প্রমাণিত হয়েছে আধুনিক বিজ্ঞানের গবেষণায়, এবার নজর দেওয়া যাক সেই দিকে।
গাঁজা, পুরুষের বন্ধ্যাত্বকে দূর করে:
হ্যাঁ,এমনই অবিশ্বাস্য কথা বলছেন বিজ্ঞানীরা। সম্প্রতি বিজ্ঞানীদের এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে, গাঁজার নেশা করলে তা গিয়ে প্রভাব ফেলে ব্রেনের ক্যানাবিনয়েড রিসেপটরে, এই ক্যানাবিনয়েড রিসেপটরে গাঁজার ধোয়া যখন তা পৌঁছায় তখন তা স্পার্ম উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। এইভাবে সন্তানের জন্ম দিতে অক্ষম পুরুষদের চিকিৎসার ক্ষেত্রে গাঁজা ফলদায়ক। ডিটেইলস রিপোর্টি দেখত হলে ক্লিক করুন নিচের এই লিঙ্কে:
http://zeenews.india.com/bengali/lifestyle/marijuana-can-help-in-infertility_139329.html
গাঁজা খেলে ভালো থাকে চোখ : হ্যাঁ, এরকমই কথা বলেছেন বিজ্ঞানীরা। গাঁজা খেলে রাত্রিকালীন দৃষ্টিশক্তির উন্নতি হয়। কারণ, গাঁজার মধ্যে রয়েছে ক্যানাবিনয়েডস, যা অল্প আলোতেও দেখার ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। গাঁজার উপর দীর্ঘদিন ধরে গবেষণা চালিয়েছেন কানাডা বিশ্ববিদ্যালয়ে একদল গবেষক। তাদের গবেষণাতেই উঠে এসেছে এই তথ্য। তারা বলেছেন, গাঁজার মধ্যে লুকিয়ে রয়েছে আলো শনাক্তকরণ ক্ষমতা। মারিজুয়ানা বা গাঁজা বা ক্যানাবিস-এ রয়েছে ৫০০টি প্রাকৃতিক যৌগ। এরমধ্যে কমপক্ষে ৮৫টি যৌগ মিলে তৈরি করে ক্যানাবিনয়েডস। যারমধ্যে সবচেয়ে বেশি গুণসম্পন্ন হল THC বা টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল ও CBD বা ক্যানাবিনল। বিস্তারিত রিপোর্টটি পাবেন নিচের এই লিঙ্কে :
http://zeenews.india.com/bengali/health/marijuana-can-cause-this-benefit-to-you_147425.html

গাঁজা প্রতিরোধ করে অ্যালঝেইমারস : বয়স হলে স্মৃতিশক্তি লোপ পাওয়ার রোগ অ্যালঝাইমার এর উদাহরণ রয়েছে সারা বিশ্বে। ডায়বেটিস, ওবেসিটির মতোই বর্তমান সময়ের অন্যতম দুঃশ্চিন্তার বিষয় অ্যালঝাইমার। এই অসুখের চিকিৎসা এখনও অজানা বিশ্বের কাছে। তবে সম্প্রতি জানা গিয়েছে গাঁজার মধ্যে খুব কম পরিমানে থাকা ডেল্টা-৯- টেট্রাহাইড্রোক্যানাবিনল বা টিএইচসি রুখে দিতে পারে অ্যালঝাইমারকে। ইউনিভার্সিটি অফ সাউথ ফ্লোরিডার নিউরোসাইন্টিস্টরা জানাচ্ছেন বয়স্ক মস্তিষ্কের অ্যামাইলয়েড বিটার পরিমান কমিয়ে দিতে পারে গাঁজা সেবন। গবেষকরা বলেন খুব কম পরিমানে গাঁজা সেবনের ফলে ধরে রাখা যাবে স্মৃতিশক্তি। গবেষকরা এখন টিএইচসি-র মধ্যে ড্রাগ ককটেলের ব্যবহার নিয়ে গবেষনা করছেন।
দেখুন, জার্নাল অফ অ্যালজাইমারস ডিজিসে প্রকাশিত হয়েছে গবেষনার রিপোর্ট।
http://zeenews.india.com/bengali/lifestyle/marijuana-can-beat-aljhimers_120146.html
এছাড়াও দেখুন, গবেষকরা বলছেন পরিমাণমতো গাঁজা ওষুধ হিসেবে সেবন করলে নাকি অনেক উপকার৷ বিজ্ঞানীদের বাতলে দেওয়া এমনই নয়টি উপকার তুলে ধরা হল এই প্রতিবেদনে !
মৃগীরোগ কমায় : যুক্তরাষ্ট্রের ভার্জিনিয়া কমনওয়েলথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা ২০১৩ সালেই জানিয়েছেন, মারিজুয়ানা বা গাঁজা একটি নির্দিষ্ট মাত্রায় নিলে মৃগী বা এই ধরণের কিছু স্নায়ুরোগ থেকে দূরে থাকা যায়৷ বিজ্ঞান বিষয়ক সাময়িকী জার্নাল অফ ফার্মাকোলজি অ্যান্ড এক্সপেরিমেন্টাল থেরাপিউটিক্সে ছাপাও হয়েছে তাদের এই গবেষণালব্ধ তত্ত্ব৷
গ্লুকমা দূরে রাখতে সহায়তা করে : যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল আই ইন্সটিটিউট জানিয়েছে, মারিজুয়ানা গ্লুকোমার ঝুঁকিও কমায়৷ গ্লুকোমা চোখের এমন এক রোগ যা চির অন্ধত্ব ডেকে আনে৷ এখানে মারিজুয়ানা বলতে যা বোঝানো হচ্ছে, তা গাঁজারই আমেরিকান নাম।
গাঁজা, ক্যানসারেরও ‘অ্যানসার’! এই বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্র সরকারিভাবেই স্বীকার করেছে৷ ২০১৫ সালে সেই দেশের ক্যানসার বিষয়ক ওয়েবসাইট ক্যানসার অর্গ-এ জানানো হয়, মারিজুয়ানা অনেক ক্ষেত্রে টিউমারের ঝুঁকি কমিয়ে ক্যানসার প্রতিরোধকেরও ভূমিকা পালন করে৷
কেমোথেরাপির ক্ষতি কম : ইউএস এজেন্সি ফর ড্রাগ জানিয়েছে, মারিজুয়ানা ক্যানসার রোগীর রোগ যন্ত্রণা অন্যভাবেও কমায়৷ ক্যানসার রোগীকে এক পর্যায়ে কেমোথেরাপি নিতে হয়৷ কেমোথেরাপির অনেক পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া৷ মারিজুয়ানা কেমোথেরাপির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াজনিত অনেক ক্ষতি লাঘব করে৷
স্ট্রোক কম হয় : এটি যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অফ নটিংহ্যামের গবেষকদের উদ্ভাবন৷ তাঁরা গবেষণা করে দেখেছেন, মারিজুয়ানা মস্তিষ্ককে সুস্থ রাখতেও সহায়তা করে৷ ফলে স্ট্রোক-এর ঝুঁকি কমে৷
গাঁজা মাল্টিপল সক্লেরোসিস বিরোধী: মানুষের স্নায়ুতন্ত্রের একটি বিশেষ স্তর ক্ষতিগ্রস্থ হলে ‘মাল্টিপল সক্লেরোসিস’ বা এমএস নামের এক ধরণের স্নায়ুরোগ হয়৷ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী মারিজুয়ানা সেবন করলে এই রোগের ঝুঁকিও কমে৷
ব্যথা নিরোধ : ডায়াবেটিস চরম রূপ নিলে রোগীদের অনেক সময় হাত-পা এবং শরীরের নানা অংশে জ্বালা-যন্ত্রণা হয়৷ ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা বলছেন, ক্যানাবিস সেই যন্ত্রণা লাঘব করতে সক্ষম৷
হেপাটাইটিস ‘সি’-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া কমায় : হেপাটাইটিস সি-র পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও কমায় মারিজুয়ানা৷ নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধের মতো গাঁজা সেবন করিয়ে দেখা গিয়েছে এই রোগে আক্রান্তদের শতকরা ৮৬ ভাগেরই পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অনেক কমেছে।

উপরের এই প্রতিবেদনটি যে আমার বানানো নয়, তার প্রমান পাবেন নিচের এই লিঙ্কে গেলে।
http://www.chandpurweb.com/health/2016/04/21/25051

গাঁজা শরীরের বিষ-ব্যথা সারায়: একটু আগেই অন্য একটা রিপোর্টে এই বিষয়টি উল্লেখ করেছি, এখানে করছি বিস্তারিত। গাঁজার এই উপকারের কথার বর্ণনা রয়েছে ভারতবর্ষের প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় চিকিৎসা শাস্ত্র অর্থাৎ আয়ুর্বেদ শাস্ত্রে। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বর্তমানে গাঁজা, ভাং ও মারিজুয়ানার ওপর গবেষণা করে জেনেছেন যে, এ সব দ্রব্য থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন ব্যথানাশক ওষুধ প্রস্তুত করা সম্ভব, যা মানুষের কোনো ক্ষতি করবে না। গবেষণাটি করেছে ফ্রান্সের বায়োমেডিকেল ইনস্টিটিউট। এর নেতৃত্ব দিয়েছে আইএনএসইআরএম। ফ্রান্সের গবেষকরা জানান, 'তারা ইঁদুরের মস্তিষ্কের যে অংশের কোষের নিউরনে গাঁজা বা মারিজুয়ানা ক্রিয়া করে তা ওষুধ প্রয়োগ করে নিষ্ক্রিয় করেন প্রথম। এর পর ওই ইঁদুরের শরীরে এসব পদার্থ প্রবেশ করিয়ে দেখা গেছে যে, তাতে ইঁদুরটি বেহুশ হয় না। বরং ওটির প্রাণচাঞ্চল্য ঠিকই থাকে। এ অভিজ্ঞতা থেকে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ব্যথানাশক হিসেবে গাঁজা বা মারিজুয়ানার ভালো গুণ মানুষের বিভিন্ন রোগের ওষুধ এবং অস্ত্রোপচারের জন্য চেতনানাশক হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। শিগগিরই গাঁজা ও মারিজুয়ানার নির্যাস থেকে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াহীন এ ওষুধ প্রস্তুত হবে।
গাঁজার ক্ষতি সিগারেটের চেয়ে কম : যারা গাঁজাকে খুব নিম্নশ্রেণির নেশা বলে মনে ক’রে সিগারেট ফুঁকেন, তাদের জন্য আছে দাঁত ভাঙ্গা জবাব। আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া ও আলাবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞানীরা এক গবেষণায় দেখেছেন, ভাং ও গঞ্জিকা সেবনে ফুসফুসের ক্ষতি, তামাক পাতায় প্রস্তুত সিগারেটের চেয়ে কম।

এই দুটি বিষয়ের উপর করা রিপোর্ট দেখতে পারেন, নিচের এই লিঙ্কে :
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%81%E0%A6%9C%E0%A6%BE
গাঁজা সেবনকারীর হাড় জোড়া লাগে খুব তাড়াতাড়ি : সম্প্রতি ইসরায়েলের একদল বিজ্ঞানী তাদের গবেষণায় দেখেছেন যে, গাজা সেবনকারীদের মধ্যে কারও হাড় ভেঙ্গে গেলে তা যারা গাজাসেবন করেন না তাদের চেয়ে দ্রুত জোড়া লাগে। পরীক্ষার অংশ হিসেবে গবেষকদল গাজায় থাকা নন-সাইকোঅ্যাকটিভ কমপাউন্ড ক্যানাবাইডিয়ল (সিবিডি) কিছু ইদুরের উপর পরীক্ষা করেন। গবেষকদলের গবেষক ড. ইয়াঙ্কেল গাবেত বলেন, ‘আমরা দেখেছি যে সিবিডি হাড় জোড়া হতে এবং খুব দ্রুত ক্ষতস্থান সারিয়ে তুলতে বেশ কার্যকরীই শুধু নয়, অন্যান্য উপাদানের চেয়ে অধিক কার্যকরী। হাড়ের নতুন টিস্যু তৈরিতে এর রয়েছে ব্যাপক ভূমিকা। সিবিডি’র মাধ্যমে একবার হাড় জোড়া লাগলে তা আগের তুলনায় অনেক বেশি শক্ত হয়।’ গবেষকদলের মতে, মানবশরীর প্রকৃতিগত ভাবেই এন্ডোক্যানাবাইনয়েড ব্যবস্থা চালু রাখে যা বিভিন্ন প্রক্রিয়ায় মেরুদণ্ডের উপর কাজ করে। মানুষের মস্তিস্ক এবং শরীর ক্যানাবাইনয়েডের সংস্পর্শে আসলে স্বাভাবিকভাবেই সাড়া দেয়, তা সেটা আভ্যন্তরীন পর্যায়েই হোক অথবা গাজা সেবনের মাধ্যমেই হোক। এছাড়াও এক গবেষণায় দেখা গেছে, গাজা রক্তচাপ সুন্দরভাবে নিয়ন্ত্রন করতে এবং এইচআইভি প্রতিহত করতে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।শুধু তাই নয় কয়েক প্রকার ক্যান্সার নিরাময়েও পর্যন্ত গাজা ভালো ফল দেয়। বিশেষ করে যারা লিওকোমিয়ায় আক্রান্ত, তাদের চিকিৎসার জন্য দীর্ঘদিনই চিকিৎসকরা অনুমোদন সাপেক্ষে গাজা ব্যবহার করে আসছেন। যা হোক, প্রাচীন ভারতবর্ষের বিভিন্ন মিথ বা সাহিত্যে গাজার ব্যবহার দেখা যায়। কোথাও নেশাদ্রব্য হিসেবে গাজার ব্যবহার দেখা যায়নি। এর ভিত্তিতে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতীয় শাস্ত্রবিদেরা এবং অন্যান্য গবেষকরা দাবি করছেন যে, গাজার ক্ষতি নেই বরংচ রয়েছে শারিরীক লাভ। মানব শরীরের বিভিন্ন সমস্যা দূরীকরণে গাজা মহৌষধ হিসেবে কাজ করতে পারে। কিন্তু ভারতের সেকুলার সরকার, আয়ুর্বেদ শাস্ত্রের এই জ্ঞানকে পাত্তা না দিয়ে কেমিক্যালজাত মাদকের সাথে সাথে গাজাকেও মাদকের পর্যায়ভূক্ত করে এবং ১৯৮৫ সালে আইন করে গাজাকে অবৈধ ঘোষণা করে।
এই রিপোর্টটি সত্য কিনা, তা যাচাই করতে চাইলে দেখুন লিঙ্কটি।
উপরে বলেছি, আমাদের মুনি-ঋষিরা গাঁজা সেবন করতেন, এটা শুনে যাদের কষ্ট হয়েছে বা মেনে নিতে পারেন নি, তাদের জন্য উইকিপিডিয়া বলছে, “হাজার বছর আগে প্রাচীন ভারতে হিন্দু ও শিখদের মাঝে এবং নেপালে কেনাবিস গ্রহণের রেওয়াজ ছিল।এই বনজ উদ্ভিদের নাম ছিল সংস্কৃত ভাষায় গঞ্জিকা বা গাঁজা।” এটা যে শুধু হিন্দু মুনি-ঋষিরাই খেতো, তাই নয়, প্রাচীন কালের ইহুদি খ্রিষ্টানরা সেবন করতো এমন কি সেবন করতো, মামলুক আমলের মুসলিম সুফীরাও। দেখুন, উইকিতে কিভাবে বলা আছে এই কথা- “কান্নাবিসকে প্রাচীন ইহুদি ও ক্রিস্টানরা ধর্মীয় অনুষ্ঠানে ব্যবহার করত। মামলুক সময়ে বিভিন্ন সূফী সম্প্রদায়রা কান্নাবিস গ্রহণ করত।”উইকির এই লিঙ্কটি দেখতে পারেন নিচে-

https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE



তাস খেলা একটি অত্যন্ত বুদ্ধিদীপ্ত ও মজাদার খেলা, কিন্তু এই খেলার সাথে যখন টাকা যুক্ত হলো অর্থাৎ তাস খেলা যখন জুয়ায় পরিণত হলো, তখন সমাজ তাকে খারাপভাবে দেখতে শুরু করলো এবং যারা তাস খেলে, তারা সমালোচনার পাত্র হয়ে পড়লো। শুধু এই ভয়েই অনেকে ইচ্ছা থাকা সত্ত্বেও তাস খেলে না। এটা কিন্তু তাসের দোষ নয়, দোষ মানুষের; যারা তাসকে ঐ খারাপভাবে ব্যবহার করা শুরু করেছিলো।একইভাবে উপকারী গাঁজাকে যারা নেশার দ্রব্যে পরিণত ক’রে একে সমালোচিত করেছে, দোষ সেই মানুষদের, কোনোভাবেই গাঁজার নয়।
এবার আসি গাঁজার লিগ্যাল আর ইলিগ্যাল কন্ডিশনে কার কি লাভ হচ্ছে?
ইলিগাল হয়া মানে এই নয় যে গাঁজা পাওয়া যায় না। গাঁজার ব্ল্যাক মার্কেট খুব চাঙ্গা। এমনকি বাংলাদেশে স্মাগলার বা কালো বাজারীদের প্রথম পছন্দ হল গাঁজা। এতে ব্ল্যাক মার্কেট বুম হচ্ছে সন্দেহ নেই। আর এসব ব্ল্যাক মার্কেট চালাচ্ছেন সেসব লোকেরা যারা পৃথিবীতে বড় বড় লিকার আর টোব্যাকো কম্পানীর মালিক। ২*২=৪ মেলাতে পারছেন। কিভাবে ২ দিক থেকে মুনাফা আসছে?
আজও ভারতের হিমাচল প্রদেশে ৬০০০০ কেজির ইলিগ্যাল গাঁজা চাষ হচ্ছে! বিশ্বাস হয় না?
http://indiatoday.intoday.in/story/indian-village-malana-himachal-pradesh-cannabis-livelihood/1/826614.html
দেখে নিন। যার মাঝে মাত্র ১% ধরা পড়ে। তো বাকি কোথায় যায়? ?? বিচক্ষন মস্তিষ্ক বুঝে নিন। আমেরিকা শুধু মেডিক্যাল পারপাস বা রিক্রিয়েসনের জন্য গাঁজার ব্যাবহার করছে না বরং হেম্প(গাঁজার আরেক নাম) চাষ করে আরও অনেক প্রডাক্ট বানানো হয়। যেমন বডিক্র্যাফট, ফুড সাপ্লিমেন্টস, প্লাস্টিক প্রডাক্টস ইত্যাদি যা অলরেডি আমেরিকার ইকনমিকে বুষ্ট করছে। হেম্প ইন্ডাস্ট্রি ২০২০ সালের মাঝে আমেরিকা ৬লাখ কোটি টাকা আয় করবে। ভাবুন একবার অঙ্কটা !
মানে ভারতের পুর্ব দিকের স্টেট গুলো নিন আর তার জিডিপি কেল্কুলেট করুন। তাও এই অঙ্ক থেকে অনেক কম। বিশ্বাস হয় না?
http://www.independent.co.uk/news/world/americas/marijuana-industry-expected-to-reach-44-billion-by-2020-a6933106.html
কিন্তু এরজন্ম স্থান ভারতে এই ইন্ডাস্ট্রি প্রায় নাই।







আরও আছে ! ফর্বস এর রিপর্ট অনুযায়ী হেম্প ইন্ডাস্ট্রি ২০২০ সালের মাঝে আমেরিকার মেনুফেকচারিং ইন্ডাস্ট্রি থেকেও বেশী জব ক্রিয়েট করবে।
https://www.forbes.com/sites/debraborchardt/2017/02/22/marijuana-industry-projected-to-create-more-jobs-than-manufacturing-by-2020/#44459dcd3fa9
আমেরিকায় যেসব স্টেটে গাঁজা লিগ্যাল সেসব স্টেটে সিন্থেটিক ড্রাগ ব্যাবহার যেমন হেরোইন, কুকেইন অনেকাংশে কমে এসেছে। নেদারল্যান্ডে মারিজুয়ানাকে লিগ্যাল করে দেয়া হয়েছে । ফলাফলঃ ক্রাইম রেট কমা, এওয়ারনেস বেড়েছে আর ট্যাক্সের টাকা সরকারের পকেটে।
ব্যাপারটা এখন একদম পরিষ্কার যে কিভাবে আমেরিকা আর ভারতের তৎকালীন দুর্নীতিগ্রস্থ সরকার মিলে আমাদের সাথে ২ নাম্বারী করল? মানে আমাদের মাল আমাদের কাছ থেকে নিয়ে গিয়ে আমাদেরকেই আবার বিক্রি করছে। অতিরিক্ত সব কিছুই খারাপ, এমনকি যদি অতিরিক্ত ভাত বা জল খাওয়া হয়, সেটাও খারাপ। তাহলে আপনি অতিরিক্ত গাঁজা খাবেন কেনো ? আপনার প্রয়োজনে এবং কার্যসিদ্ধির জন্য যতটুকু খাওয়া প্রয়োজন তাই খাবেন। যেমন সপ্তাহে একবার আপনি যদি বিয়ার বা অয়ান পান করেন তাঁর মেডিক্যাল বেনিফিট অনেক। কেন কিভাবে তা জিজ্ঞ্যেস করার আগে একটু গুগুল করে নিন।
শেষে একটা কথা না বললেই নয়, গাঁজার উপকারিতা নিয়ে পোস্ট লিখলাম বলে, এটা মনে করার কোনো কারণ নেই যে, আমি কাউকে গাঁজা খেতে উৎসাহিত করছি বা আমি গাঁজা খাই। শিব সম্পর্কে কটূক্তির জবাব দিতে গিয়ে, আমি শুধু প্রকৃত সত্যটাকে জানালাম, এখন এটাকে কে কিভাবে ব্যবহার করবে, সেটা তার বা তাদের ব্যাপার। আমার এই পোষ্ট এতক্ষন মন দিয়ে পড়ার জন্য অনেক ধন্যবাদ। ভাল থাকুন সবাই। নমস্কার ।
হর হর মহাদেব ।

সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts