Wednesday, January 30, 2019

বিবাহে সাবধান


বর্ণ চার প্রকার- বিপ্র, ক্ষত্রিয়, বৈশ্য, শুদ্র।
গোত্র- গো-শব্দের উৎপত্তি গম্-ধাতু থেকে, অর্থ-
গতি। আর 'ত্র' হ'ল ত্রৈ-ধাতু থেকে, মানে ত্রাণ করা।
তাই গোত্র মানে দাঁড়াবে বংশের ধারা বা গতি যাঁর
মাধ্যমে রক্ষিত হয় সেই স্মরনীয় পিতৃপুরুষ বা ঋষি।
তিনিই গোত্র পিতা।
প্রবর- প্রত্যেক গোত্রেরই একাধিক প্রবর থাকে। প্রবর
মানে বংশের মধ্যে প্রকৃষ্ট বরণীয় ব্যক্তি।
গোত্র প্রবর্ত্তক ঋষির ঔরসজাত সন্তান বা কৃষ্টিজাত সন্তানদের মধ্যে যিনি বা যাঁরা ভক্তি, জ্ঞান, গুণ, চরিত্র, কর্মদক্ষ, সাধনার দিক দিয়ে সবচেয়ে প্রকৃষ্ট বরণীয় তিনি বা তাঁরাই প্রবরনামে অভিহিত হয়ে থাকেন।
এখানে মনে রাখতে হবে ভিন্ন গোত্র হলেও প্রবর এক হতে পারে। যেমন, বাৎস ও সাবর্ণ্য আলাদা গোত্র। কিন্তু এই দুই গোত্রের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ, কারন এই দুই গোত্রের প্রবর একই। অনেক সময় এমন হয় -কারো গোত্রের পাঁচটি প্রবর, তার মধ্যে কোন একটি প্রবর অন্য গোত্রের সাথে মিলে যাচ্ছে। সেখানে ঐ গোত্র দুটি ভিন্ন হলেও বিবাহ নিষিদ্ধ। যেমন, অত্রি ও কাত্যায়ন এই
দু'টি গোত্রের তিনটি করে প্রবর, তার মধ্যে একটি প্রবর
উভয়ের এক। অতএব, অত্রি গোত্রের সাথে কাত্যায়ন
গোত্রের বিবাহ অবিধেয়। যদি একটি প্রবরও মিলে যায়
তবে বুঝতে হবে অতীতে দুটি বংশধারা কোনওসময়
এসে মিলে গিয়েছিল। এইভাবে রক্তের মিল হলে,
ভাইবোনের মধ্যে বিয়ে হলে যা হওয়ার তাই হবে।
ফলে এই বিবাহ নিষিদ্ধ।
তাই শ্রীশ্রীঠাকুর- বললেন-"
আপৎকালেও জনন-অনুশাসনকে অগ্রাহ্য
ক'রো না।"(বিবাহ-বিধায়না,১৪৯)।
-------------------------
★ চারপ্রকার বর্ণের প্রতিলোমজাত সন্তানদের ছয়
ভাগ করা হয়েছে।
১। ক্ষত্রিয়ের বিপ্রজাত কন্যাতে= সূত
২। বৈশ্যের ক্ষত্রিয়জাত কন্যাতে= মাগধ
৩। বৈশ্যের বিপ্রজাত কন্যাতে = বৈদেহ
৪। শুদ্রের বৈশ্যাজাত সন্তান = আয়োগব
৫। শুদ্রের ক্ষত্রিয়জাত সন্তান। = ক্ষতা
৬। শুদ্রের বিপ্রজাত কন্যাতে সন্তান=চন্ডাল।
প্রতিলোমজাত ছেলে সন্তানদের বিবাহ নিষিদ্ধ।
কিন্তু কন্যার বিবাহ দেয়া যাবে তবে তা অবশ্যই
উচুবর্ণে।পরপর সাত পুরুষ ঐরকম শ্রেয় বরে বিবাহ হবার পর প্রতিলোম কন্যার প্রতিলোমের কুপ্রভাব দুর
হতে পারে।(যাজ্ঞবল্ক-সংহিতা,১ম অধ্যায়)
★ চার বর্ণের অনুলোমজ সন্তানদের ছয়টিভাগ।
১। বিপ্রের ক্ষত্রিয়জাত সন্তান = মূর্ধাভিষিক্ত
২। বিপ্রের বৈশ্যাজাত সন্তান। = অম্বষ্ঠ
৩। বিপ্রের শুদ্রজাত সন্তান = পারশব
৪। ক্ষত্রিয়ের বৈশ্যজাত সন্তান_= মাহিষ্য
৫। ক্ষত্রিয়ের শুদ্রাজাত সন্তান = উগ্রক্ষত্রিয়
৬।বৈশ্যের শুদ্রজাত সন্তান। = করণ।
অনুলোমজাত সন্তানদের বিবাহ সম্পর্কে ঠাকুর
বলেছেন- অনুলোমজাত ছেলেদের বিবাহ হবে সমান
থাকে অর্থাৎ মাতৃবর্ণ যেমন তেমন ঘরে। আর মেয়েদের
বিবাহ হবে কমপক্ষে পিতৃবর্ণে। এর উল্টোপাল্টা করলে প্রতিলোম ঢুকে যাবার সম্ভাবনা। সমান-সমাণ বর্ণে বিবাহ - সদৃশ (শ্রেষ্ঠ)।।
পুরুষের বর্ণ উচ্চ এবং নারীর বংশ নীচু-অনুলোম।।
নারীর বংশ উচু এবং পুরুষের বর্ণ নীচু প্রতিলোম।।
বংশানুক্রমিক কিছু ব্যাধি আছে সেগুলো নিয়ে খোজখবর নেয়া দরকার।
যে বংশের সাথে বিয়ে হবে তার অন্ততঃ তিন পুরুষের
মধ্যে কেউ পাগল আছে কিনা দেখতে হবে, বিশেষত
মাতৃকুলে। যদি থাকে তবে সেই বংশে বিয়ে দিলে সন্তানদের মধ্যে পাগল হবার সম্ভাবনা স্বীকার
করে নিয়ে তবে বিয়ে দিতে হবে।
আমরা ঘোড়া-গরুর প্রজননের ব্যাপারে কখনই
নিকৃষ্টজাতের ঘোড়া-ষাঁড় দ্বারা প্রজননক্রিয়া সম্পন্ন
করাই না। সেখানে বীজের উকৃষ্টতা রক্ষা করে চলি।
কারন সেটাই জীববিজ্ঞানেরর নিয়ম। অথচ মানুষের
বেলায় আধুনিকতার দোহাই দিয়ে সৃষ্টিকে করে তুলি নিগৃহীত ও বিনিন্দিত।
সব পাপের প্রায়শ্চিত আছে কিন্তু প্রতিলোমের কোন
উপায় নেই। এটাই বিধির বিধান।
একই বিপ্র বর্ণের মধ্যে দুইটি থাক― কুলীন ওবংশজ। বংশজগন কুলীন বিপ্রদের চাইতে কোন কোন গুনে হীন। কুলীন বিপ্রসন্তান বংশজ মেয়েকে বিয়ে করতে পারে, কিন্তুু কখনও বংশজের ঘরে মেয়ে দিতে পারে না,
দিলে প্রতিলোম হয়ে যাবে।
বারেন্দ্রশ্রেনীর বিপ্রদের মধ্যেও দুটি ভাগ আছে―কুলীন ও কাপ। রাঢ়ী ও ও বারেন্দ্রশ্রনীর মধ্যে পরস্পর কন্যা আদানপ্রদানে কোন বাধা নেই। কারন এরা আদিতে একই ছিল। বিপ্রদের মধ্যে আরেকটি থাক হল 'শ্রোত্রিয়'। এরা নিম্নকৃষ্টিসম্পন্ন। রাঢ়ী, বারেন্দ্রশ্রেনীর কুলীন, ভঙ্গ কুলীন, কাপগন শ্রোত্রিয়ের মেয়ে নিতে পারেন কিন্তু শ্রোত্রিয়ের ঘরে মেয়ে দিতে পারেন না।
বাংলার কায়স্থদের মধ্যে আছে কুলীন ও মৌলিক।
এখানেও কুলীনেরা মৌলিকের মেয়ে নিতে পারে,
কিন্তু মৌলিক কখনই কুলীনের মেয়ে বিয়ে করতে পারে না। ঘোষ,বসু,গুহ ও মিত্র উপাধি যাঁদের তাঁরাই কুলীন। মৌলিক কায়স্থদের আবার দুটি ভাগ- আটঘর এবং বাহাত্তরঘর। আটঘরের মৌলিকদের বলা হয় 'সিদ্ধ মৌলিক', এঁদের মধ্যে আছেন- সেন, সিংহ, দত্ত, দাস, কর, গুহ, পালিত, দেব। আর বাহাত্তরঘরেরর মধ্যে আছেন -হোড়, আইচ, সুর, ভঞ্জ, লোধ, হুই, রুদ্র, রক্ষিত, রাউত,তেজ,আশ,গুণ , বর্দ্ধন প্রভৃতি উপাধি।
আটঘরের কায়স্থগন বাহাত্তরঘরেরর থেকে উচু।
তাই আটঘরেরা বাহাত্তরঘর থেকে মেয়ে আনতে পারেন,
কিন্তু দিতে পারবেন না। দিলে প্রতিলোম হবে।
আবার শ্রীশ্রীঠাকুর বললেন - "যজমান তার নিজের
ঋত্বিকের কন্যাকে বিবাহ করতে পারে না,
অন্যদিকে ঋত্বিক তার স্বীয় যজমানকে বিয়ে করতে পারে না, কারন যজমান শিষ্যা ও কন্যাসমা।"
মেয়েদের বিয়ে দেরী হলেও ভাল কিন্তু নীচু বংশে বিয়ে দেয়া ভাল নয়।
বিপ্র বা বামুনদের মধ্যে এক ধরনের পতিত বামুন
আছে যাদের জেলের বামুন, কৈবর্ত্তের বামুন,
মাহিষ্যের বামুন ইত্যাদি।
বৈশ্য যদি শুদ্রের মেয়ে বিয়ে করে, তার সন্তান হয়
করণ। আর করনের মেয়ে যদি বামুনে বিয়ে করে তাহলে তার সন্তান হয় তাম্বুলি। আবার তাম্বুলির মেয়ে যদি বামুনে বিয়ে করে তবে তাদের সন্তান হয় বারুজীবী।
পারশবগণ বঙ্গদেশে নমঃশুদ্র নামে পরিচিত। এদের
চারটি ভাগ। শ্রীপালী(শিউলি), ধানী, মগা, জিয়েনী। এদের মধ্যে শ্রীপালী যারা তাঁরাই পারশব। অন্য ৩টি থাকের সাথে শ্রীপালীদের বিবাহাদি চলবে না।
শ্রীপালী ছেলেরা কেবল স্ব-সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়ে করতে পারবে।
বাইরে কোথাও করতে হলে উগ্রক্ষত্রিয়, করণ ও শুদ্র
কন্যাকে বিয়ে করতে পারবে।
পারশবরা বৈশ্য বা ক্ষত্রিয়ের মেয়ে বিয়ে করলে সেটা মায়ের দিক থেকে প্রতিলোম হবে। পারশব মেয়েদের
স্ব-সম্প্রদায়ের মধ্যে বিয়ে দিতে হবে।
এছাড়া একমাত্র বিপ্রের সাথে দেয়া যায় অনুলোম বিধিতে।
মাহিষ্য,উগ্রক্ষত্রিয়(আগুরী), করণ -এইসব অনুলোমজ
সন্তানদের বিবাহ হবে অবশ্যই স্বঘরে অথবা ইষৎ
অনুলোমক্রমিক হ'তে হবে।
আবার অনুলোম বিয়ে করলেই তাতে সুফল ফলে না। এরও নীতি আছে, বিধি আছে। শ্রীশ্রীঠাকুর
বললেন -প্রথমে সবর্ণা বিবাহ করতে হবে। সেই সবর্ণা স্ত্রীর পুত্রসন্তান জাত হওয়া চাই। তারপর পুরুষ অসবর্ণা স্ত্রী গ্রহন করতে পারে। এমনতর ব্যবস্থার কারন, ঐ সবর্ণা স্ত্রীতে জাত পুত্রের মধ্য দিয়েই মানুষের পুরুষপরম্পরাগত বংশবৈশিষ্ট অবিকৃত ও অক্ষুন্ন
থেকে প্রবাহিত হ'তে পারে। কিন্তু অনুলোমজাত
ঐধারা ঠিক-ঠিক অবিকৃত থাকে না।
অসবর্ণাজাত সন্তান সবর্ণাজাত সন্তান থেকে একটু
নেমে যায়।
সবর্ণাজাত পুত্রের মত তাদের দেবকার্য্য ও পিতৃকার্য্যে অধিকার থাকে না।
এছাড়া -আবৃত(বিপ্রকর্ত্তক উগ্রকন্যায় জাত), আভীর
( বিপ্রকর্ত্তক অম্বষ্ঠ কন্যায় জাত), ঝল্ল-মল্ল(ব্রাত
্যক্ষত্রিয় কর্ত্তক সবর্ণা স্ত্রীতে জাত সন্তান),
কোনাই চাষী, খড়িয়া, সূত্রধর, রথকার, শঙ্খবনিক এদের বর্ণ নির্ণীত না হওয়া পর্যন্ত্য সবারই বিবাহ
স্বঘরে করতে হবে।
"নবসায়ক" নামে ৯টি সম্প্রদায় আছে ― গোপ, মালী,
তন্ত্রী (তাঁতী), মোদক, বারুজীবী, কুম্ভকার, কর্ম্মকার,
ও নাপিত এদের সম্পর্কে শ্রীশ্রীঠাকুর বলেছেন-
"যতদিন এদের বর্ণ নিঃসন্দিগ্ধভাবে স্থিরীকৃত
না হচ্ছে ততদিন এদের বিয়ে-থাওয়া অবশ্যই নিজ সম্প্রদায়ের মধ্যে করতে হবে।
"যত্র ত্বেতে পরিধ্বংসা জায়ন্তে বর্ণদূষকাঃ।
রাষ্ট্রিকৈঃ সহ তদ্রাষ্টাং ক্ষিপ্রমেব বিনশ্যতি।"
- যে রাষ্ট্রে সমাজধ্বংসকারী বর্ণদূষক জাতক জন্ম
গ্রহন করে, রাজ্যবাসী সমস্ত প্রজাবর্গের সাথে
সেই রাষ্ট্র অচিরেই ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়।।(১০/৬১,মনুসংহিতা)

যুক্তির আলোয় গীতা

গীতা বইটি আমি মোটামুটি পড়েছি ।  আমি শ্রদ্ধা নিয়েই বইটি পড়েছি এবং এর কাব্যিক গুণ উপভোগ করেছি। গীতা একটি অতুলনীয় গ্রন্থ বলে আমি মনে করি, তবে তা সমালোচনার উর্দ্ধে নয়। গীতা মানুষের লেখা, ইহা অলৌকিকভাবে পৃথিবীতে আসেনি। গীতাকে বুঝতে হবে যুক্তির আলোয়। অন্ধভক্তি যেমন ক্ষতিকারক হতে পারে, তেমনি কেবলই সমালোচনা করার মানসিকতা নিয়ে গীতা পড়লে গীতার মর্ম্ম বুঝতে অসুবিধা হবে।
ইদানীং ফেসবুকে আমাদের বিশিষ্ট বন্ধু শ্রীমানব্রহ্মদ্বিট ঘোষ মহাশয় (নাম পরিবর্ত্তিত) আধুনিক বিজ্ঞানের দৃষ্টিকোণ থেকে গীতার বিরুদ্ধে কিছু অভিযোগ তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। ফেসবুকে তাঁর অনেক অনুগামী তার সঙ্গে সায় দিয়ে গীতাকে হেয় প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করে চলেছেন। আমি এখানে গীতা সম্বন্ধে তাঁর এবং আরও কারও কারও কতকগুলি অভিযোগ এবং সেসম্বন্ধে আমার বক্তব্য খুব সংক্ষেপে আলোচনা করছি।
গীতায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ নিজেকে নক্ষত্রদের মধ্যে চন্দ্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন। শ্রীমানব্রহ্মদ্বিট ঘোষ মহাশয় এর মানে করেছেন যে কৃষ্ণ এখানে চাঁদকে একটি নক্ষত্র বলে মনে করেছেন। কিন্তু চাঁদ যেহেতু নক্ষত্র নয়, একটি উপগ্রহমাত্র, সেহেতু কৃষ্ণের এই বাণী তাঁর বিজ্ঞান বিষয়ে অজ্ঞানতাকে প্রকাশ করছে বলে শ্রীঘোষের মনে হয়েছে। গীতায় কৃষ্ণ, সাধককে পরমাত্মার ধ্যানে বায়ুহীন স্থানে নিষ্কম্প প্রদীপশিখার মতো অচঞ্চল থাকতে বলেছেন। কিন্তু বায়ুশূন্য স্থানে অক্সিজেনের অভাবে প্রদীপ তো জ্বলতেই পারে না, অতএব এখানেও কৃষ্ণের বিজ্ঞান বিষয়ে অজ্ঞানতা প্রকট বলে ঘোষ মহাশয় ঘোষণা করে দিয়েছেন। এছাড়া কৃষ্ণের অর্জ্জুনকে বিশ্বরূপ দেখানোর ব্যাপারটিতে এবং আরও কিছু কিছু ব্যাপারেও তার গুরুতর আপত্তি আছে। তার সমস্ত লেখাটির মধ্যে গীতার প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাও নাই। তার সঙ্গে সায় দিয়ে তার বহু অনুগামী সদলবলে গীতার মুণ্ডপাত করার চেষ্টা করে চলেছেন। আমি এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে গীতার দর্শন সম্বন্ধে আরও কিছু কথা বলতে চাই, অবশ্যই আমার যোগ্যতা অনুযায়ী।


গীতায় চাঁদকে আদৌ নক্ষত্র বলা হয় নি। নক্ষত্রদের মধ্যে চাঁদ শোভা পায় এবং চাঁদকে তারাপতি বলে, সেই প্রসঙ্গই গীতায় উল্লিখিত হয়েছে। প্রসঙ্গত, রাশিচক্রে চাঁদের গতিপথে সাতাশ নক্ষত্র রয়েছে এবং চাঁদ রোজ এক এক নক্ষত্রে রাত কাটায়। এই জন্য চাঁদকে তারাপতি বলে। যে কেউ চাঁদের এই সাতাশ নক্ষত্রকে খালি চোখে আকাশে পর্য্যবেক্ষণ করতে পারেন। এই নক্ষত্রগুলির নাম অশ্বিনী, ভরণী, কৃত্তিকা, রোহিণী, মৃগশিরা ইত্যাদি। চাঁদ কবে কোন নক্ষত্রে থাকে তা পঞ্জিকায় লেখা থাকে। ‘’ছাত্রে ভর্ত্তি ক্লাসের মধ্যে শিক্ষক প্রবেশ করলেন’’ বললে যেমন শিক্ষককে ছাত্র বলা হয় না তেমনি ‘’নক্ষত্রদের মধ্যে চাঁদ’’ বললে চাঁদকে নক্ষত্র বলা হয় না। জ্যোতির্বিজ্ঞান না জানার ফলে শ্রীঘোষ বিষয়টি ভুল বুঝেছেন।
বায়ুহীন স্থানে প্রদীপশিখার মতো পরমাত্মার ধ্যানে অচঞ্চল থাকার কথা গীতায় রয়েছে। এখানে ''বায়ুহীন'' বলতে বায়ুপ্রবাহ হীন বলেই বুঝতে হবে। বায়ুপ্রবাহে প্রদীপ শিখা নিভে যায়।‘’নিবাত-নিষ্কম্প প্রদীপশিখা’’ কথাটির প্রয়োগ বাংলায় আছে এবং এখানে নিবাত মানে বায়ুপ্রবাহহীন। অক্সিজেন ছাড়া প্রদীপশিখা জ্বলে না, কৃষ্ণ এইটুকু বিজ্ঞানও জানেন বলে অভিযোগ করলে নিজের মূর্খামিই প্রকাশিত হয়। আত্মা ও পরমাত্মার ধারণা আসে পৃথিবীতে প্রাণের প্রবাহকে বুঝে নিতে গিয়ে। আগ্রহী পাঠক এ ব্যাপারে বঙ্কিমবাবুর মনোজ্ঞ আলোচনা পড়ে নিতে পারেন।
গীতায় কৃষ্ণ বলছেন চন্দ্র ও সূর্য্য তাঁর দুই চোখ। এ'টি একটি কাব্যিক তুলনা। কিন্তু এতেও শ্রীমানব্রহ্মদ্বিট ঘোষ মহাশয়ের আপত্তি। প্রসঙ্গত, কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য্য বলেছিলেন, ‘পূর্ণিমা চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি।’ বাস্তবে রুটি একটি খাদ্য, চাঁদ একটি উপগ্রহ এবং চাঁদ রুটির চেয়ে অনেক বড়। তবুও সুকান্ত অমন লিখেছেন। কবিদের অমন তুলনা করার দরকার হয়। শুধু বিজ্ঞান নয়, কবিতাও আমাদের দরকার। কবি সুকান্তর চাঁদকে রুটির সঙ্গে তুলনা করাটা ভাল হয়েছে না মন্দ হয়েছে সে সমালোচনা চলতেই পারে, কিন্তু কবির কথার মর্ম্মও বোঝা দরকার। প্রসঙ্গত, প্রাচীন কবিরা কাব্যপ্রতিভা ও কল্পনাশক্তিতে ন্যূন ছিলেন না।
প্রসঙ্গক্রমে আরও একটা কথা এখানে বলে রাখি। ভারতীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানে পঞ্চগ্রহ বলতে মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি; সপ্তগ্রহ বলতে রবি (সূর্য), সোম (চন্দ্র), মঙ্গল,বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি; নবগ্রহ বলতে রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রাহু ও কেতুকে বোঝায়। ইউরেনাস, নেপচুন প্লুটোকে খালি চোখে দেখাই যায় না। বিদ্যাসাগরের বর্ণপরিচয় বইয়ে ‘নয়ে নবগ্রহ’ বলতে রবি, সোম, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি, শুক্র, শনি, রাহু ও কেতুকেই বুঝতে হবে। বিদ্যাসাগরের সময়ে নেপচুন প্লুটো ইত্যাদি আবিষ্কৃতই হয় নি। কেউ যদি বলেন যে বিদ্যাসাগর মহাশয় ‘পাঁচে পঞ্চগ্রহ’ না বলে ‘নয়ে নবগ্রহ’ বলে ভুল করেছেন তাহলে বিদ্যাসাগরের নয়, তার নিজের অজ্ঞতাই প্রকাশিত হবে। গীতায় শ্রীকৃষ্ণও বলেছেন যে তার শরীরে পঞ্চগ্রহের অধিষ্ঠান। এখানে পঞ্চগ্রহ কথাটা বলায় গীতাকারের কোনো ভুল হয় নি এবং সমগ্র বিশ্বকেই কৃষ্ণের শরীর বলে ধরতে হবে। ঈশ্বর বলতে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকেই বুঝতে হবে, এটা গীতাকার বুঝতেন বলেই আমার মনে হয়েছে।
সূর্য্য ও চন্দ্রকে গ্রহ বলার কারণ হল ওরাও রাশিচক্রে (zodiac-এ) পশ্চিম থেকে পূর্ব্বে ঘূর্ণায়মান। আকাশে চোখ রাখলে খালি চোখেই আপনারা যে কেউ এসব দেখতে পাবেন। আজকের দিনে নিজস্ব আলোহীন এবং সূর্য্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান বৃহৎ জ্যোতিষ্কগুলিকে গ্রহ বলা হয়। আমাদের ভূগোল বইগুলিতে সূর্য্য ও চাঁদকে আর গ্রহ বলা হয় না। সেক্ষেত্রে আমরা সূর্য্যের চারদিকে ঘূর্ণায়মান বৃহৎ জ্যোতিষ্কগুলিকে বোঝাতে গ্রহ শব্দটির বদলে অন্য কোনো নতুন শব্দ সৃষ্টি করে নিতে পারতাম। কিন্তু তা আমরা করি নি। প্রাচীনদের সৃষ্টি করা গ্রহ শব্দটিই আমরা ব্যবহার করব এবং সূর্য্যচন্দ্রকে গ্রহ বলার জন্য তাদেরই দোষ দেব --- এমনটা করা অন্যায়। এখানে এত কথা বলছি কারণ বহু আত্মবিস্মৃত ব্যক্তি জ্যোতিষে ও পঞ্জিকায় সূর্য্যচন্দ্রকে গ্রহ বলার জন্য প্রাচীনদের তাচ্ছিল্য করে থাকেন। এরা ইতিহাস ও জ্যোতির্বিজ্ঞানের কোনোটাই না জেনে, সরেজমিনে আকাশ না চিনে নিজেদের বিজ্ঞ ও প্রাচীনদের অজ্ঞ বলে মনে করে থাকেন। রাহু-কেতুকে গ্রহ বলার জন্য প্রাচীনদের তাচ্ছিল্য করে এরা গানও লিখেছেন (অবশ্য তাদের উদ্দেশ্য সাধু, তা হল জ্যোতিষীদের বুজরুকির বিরোধিতা করা)। এরা জানেন না যে রাহু মানে ascending node of lunar orbit এবং কেতু মানে descending node of lunar orbit। এই দুটি বিন্দু (ক্রান্তিবৃত্ত ও চন্দ্রকক্ষের দুই ছেদবিন্দু) সূর্য্য ও চন্দ্রের বিপরীতে প্রতি ১৮ বছরে রাশিচক্রে এক পাক খায়। রাহকেতুর সাহায্য নিয়ে সূর্য্য ও চন্দ্রগ্রহণের সঠিক ভবিষ্যতবাণী প্রাচীনেরা করতে পারতেন যা আজকের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতকেরাও পারেন না।
এবার আসি কৃষ্ণ কর্তৃক অর্জ্জুনকে বিশ্বরূপ দর্শন করানোর প্রসঙ্গে। গীতার এই অধ্যায়টি কাব্যিক সৌন্দর্য্যে অসাধারণ। এর সঙ্গে তুলনীয় উৎকৃষ্ট মানের কবিতার উদাহরণ আমার আর একটিও জানা নাই। এই বিশ্বরূপ দর্শন হল মনোজগতে বিশ্বতত্ত্বকে উপলব্ধি করার একটি রূপক। ভাষার আলোতেও বিশ্বরূপ দর্শন সম্ভব। শব্দব্রহ্মের উপলব্ধিই ব্যাকরণবিদের বিশ্বরূপ দর্শন তথা মোক্ষলাভ। আমার ''বর্ণসঙ্গীত'' গ্রন্থে বিষয়টি বিস্তারিত বলা হয়েছে। সেখানে বর্ণমালার আলোয় পুরাণাদি উদ্ভাসিত করে ভারতের ইতিহাসকে দেখানো হয়েছে এবং এক অখণ্ড বিশ্ববীক্ষার সন্ধান দেওয়া হয়েছে। আপনারা যে কেউ বিশ্বরূপ দর্শন করতে চাইলে বর্ণমালার জপ করে দেখতে পারেন। মৎপ্রণীত 'বর্ণসঙ্গীত' গ্রন্থে এই ব্যাপারে বলা হয়েছে যে,''বর্ণমালার জপ কর যদি শীঘ্র মোক্ষ পাবে।'' প্রসঙ্গত, অক্ষর শব্দের একটি অর্থ হল পরমব্রহ্ম। অক্ষর পরিচয় হলে (বর্ণমালার প্রতিবর্ণের অর্থ বুঝলে) ব্রহ্মজ্ঞান হয়।
অনেকে গীতাকে বর্ণাশ্রম প্রথার ধারক ও বাহক বলে মনে করেন। গীতায় গুণ অনুযায়ী বর্ণবিভাজন বা কর্ম্মবিভাগের কথা আছে। বর্ণবিভাজন (division of labor) ভালই, কিন্তু জন্মসূত্রে বর্ণ বিভাজন মোটেই কাম্য নয়। গীতা জন্মসূত্রে বর্ণবিভাজনকে সমর্থন করেছে বলে তো আমার মনে হয় নি। গীতার মতে যেকোনো বর্ণের মানুষই কৃষ্ণকে জানতে বা ঈশ্বর লাভ করতে পারেন। সে ব্যাপারে বাধা নাই। গীতায় কৃষ্ণের পদ থেকে শূদ্রের ও মুখ থেকে ব্রাহ্মণের জন্মের ব্য়াখ্যা আছে। এখানে মুখ মানে mouth এবং পদ মানে leg বুঝলে চলবে না (মানুষের মুখ থেকে বা পদ থেকে মানুষ জন্মায় না)। পদ মানে যা পালন (প) দান (দ) করে, মুখ মানে মুখ্য অংশ --- এইভাবে ভাবুন। আর কৃষ্ণ বলতে সমাজশরীরকে বুঝতে হবে। তাহলে শূদ্ররা সমাজকে গতি দেয়, চলনা করে। ব্রাহ্মণরা বুদ্ধি দেয়। আমরা গীতাকে বুঝলে গীতাকে কাজে লাগিয়ে ব্রাহ্মণ্যবাদীরা আমাদের শোষণ করতে পারবে না। ব্রাহ্মণ, শূদ্র, মুসলমান, খ্রীষ্টান --- যে কেউ গীতা পড়তে পারেন। স্ত্রী এবং শূদ্ররাও গীতা পড়ে পরাগতি লাভ করতে পারেন বলে গীতায় বলা হয়েছে। তাদের ছোটো করার জন্য এমন বলা হয়েছে বলে তো আমার মনে হয়নি। আমি চাই জাতপাত নিপাত যাক। জন্মসূত্রে বর্ণবিভাজন দুর হলেও সনাতন হিন্দুধর্ম্মের অনেক কিছুই অবশিষ্ট থাকে। কেউ যদি মনে করেন যে গীতা জন্মসূত্রে বর্ণবিভাজনকে সমর্থন করছে, তবে গীতার ওই অংশটি তাকে মানতে হবে না । মন্দকে মন্দ বললে তাতে দোষ দেখি না। আমাদের উচিৎ হবে পূর্ব্বসূরীদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আরও এগিয়ে যাওয়া।
গীতায় কৃষ্ণ অর্জ্জুনকে যুদ্ধে প্ররোচনা দিয়েছেন বলেও কেউ কেউ অভিযোগ করতে পারেন। সে অভিযোগ চলতেই পারে। একইভাবে মার্কসের শ্রেণী সংগ্রামের তত্ত্বটির বিরদ্ধেও অনেকে অভিযোগ করেছেন এবং সে অভিযোগ অসঙ্গত কিছু নয়। রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম আমরা অনেকেই মানতে পারি না। তবু এখানে গীতাকারের বক্তব্যটাও বোঝার চেষ্টা করতে হবে। সেটা হল অপশাসনের অবসান ঘটাতেই হবে, এজন্য সব রকম মোহ পরিত্যাগ করা ও পুরুষকার অবলম্বন করা দরকার। বিবেকানন্দ বলেন, ''গীতা পাঠ অপেক্ষা ফুটবল খেলিলে তোমরা স্বর্গের অধিকতর নিকটবর্ত্তী হইবে।'' কিন্তু তার পরের লাইনটা অনেকেই জানেন না। সেটা হল, ''কারণ ফুটবল খেলিয়া দেহমন শক্তপোক্ত হইলে তোমরা গীতার অর্থ সহজে বুঝিবে।'' এইভাবে ফুটবল খেলে দেহমন শক্তপোক্ত করে গীতার অর্থ বুঝে মোক্ষ লাভ করা যাবে, এই হল বিবেকানন্দের বক্তব্য। এখানে বলে রাখি বিবেকানন্দ রচনাবলী এখন হাতে না থাকায় বিবেকানন্দের ঐ লাইন দুটি এখানে ঠিক ঠিক ভাবে উদ্ধৃত করা গেল না। আপনারা কেউ সংশোধন করে দিলে ভাল হয়। তবে বিবেকানন্দের বক্তব্যটা এইরকমই বটে । গীতায় কৃষ্ণও বলতে চাইছেন যে নির্বীর্য্য ও দুর্বল হলে আমাদের চলবে না।
এখানে আর একটা গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে রাখতে চাই। সেটা হল গীতার কৃষ্ণ ও অর্জ্জুন ঐতিহাসিক ব্যক্তিবিশেষ নন এবং কুরুক্ষেত্রের যুদ্ধটাও কোনো ঐতিহাসিক যুদ্ধবিশেষ নয়। রামায়ণ-মহাভারত-পুরাণাদিতে ব্যক্তি চরিত্রগুলি নয়, তাদের ক্রিয়াগুলিই প্রধান। কৌরবদের পরাজয় আর পাণ্ডবদের জয় মানে এক শাসন ব্যব্যস্থা গিয়ে আর এক শাসনব্যবস্থা আসার কাহিনী। কৌরবরা ছিল প্রাচীনপন্থী এবং সেতুলনায় পাণ্ডবরা ছিল উদীয়মান (এবং ফলত পাণ্ডুর) ধনতন্ত্রের প্রতিভু। অন্ধ ধৃতরাষ্ট্র কোনো ব্যক্তিবিশেষ নয়, যেসব অন্ধ আইন রাষ্ট্রকে ধরে রাখে ধৃতরাষ্ট্র বলতে সেগুলিকেই বুঝতে হবে। অর্জ্জুন মানে যে শুক্ল ধন অর্জ্জন করে, তাকে ধনঞ্জয়ও (ধন জয় করে যে) বলে। দুঃশাসেনর রক্তপান মানে অপশাসনের শক্তি শোষণ করা, blood drink করা নয়। মহাভারত ক্রিয়াভিত্তিক ভাষায় লিখিত ভারতের সামাজিক ও রাজনৈতিক ইতিহাস যার কিছু কিছু ব্যাখ্যা আমরা ফেসবুকের ‘’বঙ্গযান’’ পেজে দিয়েছি। কৃষ্ণ বিষ্ণুর অবতার। বিষ্ণু বলতে নগদ নারায়ণকে বুঝতে হবে। আসলে বিষ্ণুর দশাবতার পুঁজির দশবিধ রূপ। দশাবতারের কাহিনীতে আছে ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশের ইতিহাস। দশাবতারের আধ্যাত্মিক ব্যাখ্যা থাকতেই পারে, কিন্তু এর অর্থনৈতিক ব্যাখ্যাটাও বুঝে নেওয়া দরকার।
আমি শ্রীমানব্রহ্মদ্বিট ঘোষ মহাশয়ের গীতা সমালোচনাকে বালখিল্য আচরণ বলে উড়িয়ে দিতে পারতাম, কিন্তু ফেসবুকে তার অনেক অনুগামী এবং তাদের মধ্যে প্রথাগত শিক্ষায় উচ্চশিক্ষিত বহু ব্যক্তি রয়েছেন যারা এই ধরণের সমালোচনাকে বাহবা দিচ্ছেন এবং ভুলগুলি ধরে দিতে গেলে ফোঁস করে উঠছেন। এজন্য আমাকে এখানে বিষয়টি কিঞ্চিত ব্যাখ্যা করতে হল। গীতার সমালোচনা চলতেই পারে। কিন্তু ভাল করে না বুঝে এবং মনে মনে শ্রদ্ধা না নিয়ে গীতার বা আর কোনো ধর্ম্মগ্রন্থের এই ধরণের সমালোচনা করতে যাওয়াটা বুদ্ধিমানের কাজ নয়।
গীতা বহু ভাষায় অনূদিত হয়েছে এবং বিদেশেও বহু মানুষ গীতা পড়েন। ইহা একটি দর্শনের বই যা পৃথিবীর সবাই পড়তে পারেন এবং তার রস আস্বাদন করতে পারেন।
যেসব আধুনিক বিজ্ঞানমনস্ক ও যুক্তিবাদী পাঠক গীতার মর্ম্ম বুঝতে চান তারা শ্রীবঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় মহাশয়ের লেখা গীতার টীকা পড়তে পারেন। অন্ধভক্তি নয়, আধুনিক পাঠকের উপযুক্ত যুক্তি দিয়েই সাহিত্যসম্রাট গীতার ব্যাখ্যা করেছেন। এখন আপনাদের মতামত কাম্য।

সমুদ্রপুত্র রাজা গৌড় গোবিন্দ ও শ্রীহট্ট

  সিলেটের   ‎ গৌড় গোবিন্দ এবং আজকের   ‎ শাহজালাল বিভিন্ন তথ্যপঞ্জী এবং পরবর্তিতে আবিষ্কৃত তাম্রফলক ও শিলালিপি থেকে সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস স...

Popular Posts