Wednesday, December 26, 2018

অভিশাপ এর রকমফের

আমরা অনেকেই অভিশাপের নাম শুনি। অভিশাপের অনেক ক্ষমতা। আমাদের পুরান গুলিতে অভিশাপের অজস্র ঘটনা বর্তমান। সাধারণত বলা যায়--- কেউ ক্রুদ্ধ হয়ে, বা দুঃখিত হয়ে, বা লাঞ্ছিত হয়ে দোষীর সর্বনাশ কামনা করাই অভিশাপ। 
অভিশাপ দুরকম -- একটা তান্ত্রিক অভিশাপ অপরটি দৈবিক অভিশাপ। দুই অভিশাপেরই ক্ষমতা সমান। 
তান্ত্রিক অভিশাপ হল -- পূর্বেই দোষীকে শাপ দিয়ে পড়ে তন্ত্র দ্বারা নানান পূজা করে দোষীর অমঙ্গল ঘটনো হয়। দৈবিক অভিশাপ হল ত্রিদেব, সূর্য, চন্দ্র, দেবতা, গঙ্গা যমুনা কে সাক্ষী করে অভিশাপ দেওয়া।
অভিশাপ দিতে হলে খুব তপঃ শক্তি লাগে। কারন এতে অনেক তপঃ শক্তি নষ্ট হয়। আবার সব সময় এমন যুক্তি খাটেও না। অনেক সময় শয়তান লোকের অভিশাপ লেগে যায়। আসলে ব্যাপার টা হল এমন- আমি একটা বিশাল পাথর ছুড়ে কাউকে মারতে চাই, তাহলে আগে আমাকে সেই বিশাল পাথর তোলার শক্তি অর্জন করতে হবে। একটা পাঁচ বছরের শিশু নিশ্চয়ই বিশাল পাথর তুলতে পারবে না। ঠিক তেমনই তপঃ শক্তি না হলে শাপ দেওয়া যায় না।
সাধারণত তেজস্বী ব্রাহ্মণ, সাধু, সন্ত, বিধবা নারী, লাঞ্ছিতা কন্যা --- এদের অভিশাপ ভয়ানক রূপে প্রতিফলিত হয়, অনেক সময় দোষীর সাথে নির্দোষীরাও শিকার হয়। পুরানে দেবযানীর অভিশাপ, ভীস্মকে অম্বার অভিশাপ, সীতার রাবণকে অভিশাপ, পার্বতীর অগ্নি দেবতা কে অভিশাপ, নারদ মুনি যে দুজন কে শাপ দিয়েছিল তারা গাছ হয়ে জন্মেছিল, নন্দী দ্বারা দক্ষকে অভিশাপ, দক্ষ দ্বারা চন্দ্রকে অভিশাপ, দুর্বাসা দ্বারা ইন্দ্রকে অভিশাপ, গণেশ দ্বারা চন্দ্রকে অভিশাপ – এমন অজস্র অভিশাপ এর ঘটনা পুরানে দেখা যায়। অভিশাপ থেকে ভগবান ও রেহাই পান না। মন্দাদোরীর অভিশাপ ভগবান রাম মাথা পেতে নিয়েছিলেন। গান্ধারীর অভিশাপ ভগবান কৃষ্ণ মাথা পেতে নিয়েছিলেন।
কিছু অভিশাপ এমন হয় বংশ পরম্পরা ধরে চলে। যেমন প্রাচীন কালে রাজা, জমিদার রা অনেক নিরীহ লোকের ক্ষতি করতেন। এমনকি নারীদের মান সম্মান হানি করতেন। তাঁদের অভিশাপে রাজারা নির্বংশ বা কোন প্রতিবন্ধকের শিকার হতেন। রাজবংশের অভিশাপ বংশ পরম্পরা ধরে চলে। মা কামাখ্যার অভিশাপে এখনও কোচবংশীয়রা কামাখ্যা মন্দিরে যেতে পারেন না।
অভিশাপ থেকে বাঁচার উপায়? সর্বদা সাধু, সন্ত, যোগী দের সম্মান করতে হবে। নিজেও শান্তিতে থাকবো --- অপরকে শান্তিতে থাকতে দেবো --- এই নীতি নিতে হবে। কখনো কারোর সাথে দুর্ব্যবহার করা চলবে না। করলেও সঙ্গে সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে নিতে হবে। পুরান বলে একটা দিনে ব্রহ্ম কাল, কাল বেলা, রাক্ষসী বেলা ইত্যাদি থাকে।
গ্রহ নক্ষত্রের যোগে কারোর কারোর নাকি বিশেষ সময়ে জিহ্বা তে মা সরস্বতী অধিষ্ঠান করেন। সেই জন্য সব সময় মুখ দিয়ে সবার মঙ্গল কামনা করতে হবে। কাউকে কটু কথা বলা যাবে না। আর ক্ষমা করতে শিখতে হবে। ক্ষমা মহৎ গুন।

Monday, December 3, 2018

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র এবং মহামৃত্যুঞ্জয় স্তোত্রম্

মহামৃত্যুঞ্জয় মন্ত্র
==============
ওঁ ত্র্যম্বকং যজামহে সুগন্ধিং পুষ্টিবর্ধনম।
উর্বারুকমিববন্ধনান্মৃত্যোর্মুক্ষীয় মামৃতাৎ স্বাহা।
ভাবার্থ --- হে সৃষ্টিকর্তা, ধর্তা ও হর্তা পরমাত্মন! তুমি আমাদের জন্য সুগন্ধিত, পুষ্টিকারক তথা বলবর্ধক ভোগ্য বস্তু দান করো। আমরা অত্যন্ত শ্রদ্ধা ও ভক্তিসহকারে তোমার ভজন করি। হে দেব! আমরা পূর্ণায়ু ও পূর্ণভোগ করেই যেন এই শরীর রূপী বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারি।
-
ব্যাখ্যা --- খরমুজ পাকলেই বিনা কষ্টে সে তার ডাল থেকে মুক্ত হয়ে যায়। হে প্রভো! আমরা যেন এই জন্ম-মৃত্যু চক্র থেকে মুক্ত হয়ে কিন্তু তোমার অমৃতময়ীস্নেহ থেকে যেন বিমুখ না হই। তোমার অমৃতধারার বরদ হস্ত সদা যেন আমাদের উপরে থাকে।


মহামৃত্যুঞ্জয় স্তোত্রম্
===============
চন্দ্রার্কাগ্নিবিলোচনং স্মিতমুখং পদ্মদ্বয়ান্তস্থিতং
মুদ্রাপাশমৃগাক্ষসত্রবিলসৎপাণিং হিমাংশুপ্রভম্।
কোটীন্দুপ্রগলৎসুধাপ্লুততমুং হারাদিভূষোজ্জ্বলং
কান্তং বিশ্ববিমোহনং পশুপতিং মৃত্যুঞ্জযং ভাবয়েৎ।।
রুদ্রং পশুপতিং স্থাণুং নীলকণ্ঠম উমাপতিম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
নীলকন্ঠং কালমূর্ত্তিং কালজ্ঞং কালনাশনম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
নীলকণ্ঠং বিরূপাক্ষং নির্মলং নিলয়প্রদম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
বামদেবং মহাদেবং লোকনাথং জগদ্গুরুম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
দেবদেবং জগন্নাথং দেবেশং বৃষভধ্বজম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
ত্র্যক্ষং চতুর্ভুজং শান্তং জটামকুটধারিণম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
গঙ্গাধরং মহাদেবং সর্বাভরণভূষিতম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
ভস্মোদ্ধূলিতসর্বাঙ্গং নাগাভরণভূষিতম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
অনন্তমব্যয়ং শান্তং অক্ষমালাধরং হরম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
আনন্দং পরমং নিত্যং কৈবল্যপদদায়িনম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
অর্দ্ধনারীশ্বরং দেবং পার্বতীপ্রাণনায়কম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
প্রলয়স্থিতিকর্ত্তারমাদিকর্ত্তারমীশ্বরম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
ব্যোমকেশং বিরূপাক্ষং চন্দ্রার্দ্ধকৃতশেখরম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
গঙ্গাধরং শশিধরং শঙ্করং শূলপাণিনম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
অনাথঃ পরমানন্তং কৈবল্যপদগামিনি।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
স্বর্গাপবর্গদাতারং সৃষ্টিস্থিত্যন্তকারণম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
কল্পায়ুর্দ্দেহি মে পুণ্যং যাবদায়ুররোগতাম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
শিবেশানাং মহাদেবং বামদেবং সদাশিবম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
উৎপত্তিস্থিতিসংহারকর্তারমীশ্বরং গুরুম্।
নমামি শিরসা দেবং কিং নো মৃত্যুঃ করিষ্যতি।।
শ্রীমার্কণ্ডেয়পুরাণে মার্কণ্ডেয়কৃত মহামৃত্যুঞ্জয়স্তোত্রং সম্পূর্ণম্।।

সমুদ্রপুত্র রাজা গৌড় গোবিন্দ ও শ্রীহট্ট

  সিলেটের   ‎ গৌড় গোবিন্দ এবং আজকের   ‎ শাহজালাল বিভিন্ন তথ্যপঞ্জী এবং পরবর্তিতে আবিষ্কৃত তাম্রফলক ও শিলালিপি থেকে সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস স...

Popular Posts