Tuesday, February 18, 2020

আপনারা যারা ইস্কনকে সহ্য করতে পারেন না তাঁদের জন্য একটি লেখা ইস্কন প্রায় বলে থাকে । সেই হাস্যকর দাবীর খন্ডন

যারা অনলাইনে নিয়মিত এরা দেখে থাকবেন অনেক মুসলিম পেজে একটা হিন্দু বিদ্বেষী পোস্ট খুব ঘুরে বেড়ায় । হিন্দু ভায়েরা মন খারাপ করবেন না। আমি শুধু জানতে চাই..... (https://www.facebook.com/biswahinduporishad/posts/906298112741835)

যারা দেখেন নাই দেখে নিন। ঠিক একি ভাবে হিন্দুদের মাঝে আরও বিভ্রান্তি ছড়ানোর জন্য ইস্কনের কৃৈষ্ণবরা পাগলের প্রলাপের মতন একটি পোষ্ট ভাইরাসের মতন ছড়িয়ে যাচ্ছেন। যাতে মানুষের মাঝে ইস্কন নিয়ে কোন সন্দেহ না থাকে। আর এরা এদের নোংরা ধর্ম ব্যাবসা আরও দ্বিগুণ গতিতে ছড়াতে পারে। যারা দেখেন নাই দেখে নিন

(https://www.facebook.com/UnitedHinduBengali/posts/480507685407083:0)

বলা বাহুল্য ফেসবুকে যত হিন্দু পেজ দেখেন তাঁর ৮০-৯০% পেজ ইস্কনের হয়ে কাজ করে থাকে। এর মাঝে সবথেকে বড় ইস্কনী পেজ হল United Hindu concern নামে এই পেজটি।
যাইহোক এদের এসব ছ্যাব্লামির উচিৎ দাঁত ভাঙ্গা জবাব দেবার তাগিত অনুভব করলাম। আমাকে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করেছেন Bijaydhari Mrtyunjay Karna আমরা ২ জন মিলে এই পোস্ট তৈরি করেছি। যে যেভাবে পারেন কপি করেন। কারন আমাদের উদ্দেশ্য নিজেদের নাম ফাটানো নয়। আসুরিক সচেতনতা তৈরি করা। তাই আমাদের কোন কপিরাইট নেই। অনুমুতি ছাড়াই কপি করেন।

যেসব হিন্দু ইসকনকে সহ্য করতে পারে না
তাদের উদ্দেশ্যে লেখা:-

1. আপনি পারবেন পাকিস্তানের সিন্ধু প্রদেশে মিথি
নগরীতে নগর কীর্তন করতে?

উত্তরঃ প্রথমত কীর্তন কোন শাস্ত্রীয় কাজ না। আর যদি করা না করা হয়ে থাকে
তাহলে বলবো টাকা বা ডলার দিলে অসামা বিন লাদেনও পাকিস্তানে আস্তানা গাড়তে পারে।

2. পারবেন পাকিস্তানে ভক্তিবেদান্ত ট্রাস্ট, ইসকন
মন্দির গড়তে?

উত্তরঃ ইসকন কোন মন্দির না। যেখানে পরমেশ্বর শিবের অপমান হয় তা অসুরদের আস্তানা। তাই মন্দির বলে মন্দিরকে অপমান করার কোন মানে হয় না। আর ডলার থাকলে ইস্কন কেন? অনেক টেররিষ্ট অরগানাইজেসন বানানো যায়। আপনারা নিজেদের দেখেই বুঝে নিন।

3. ইরানে রথযাত্রা করতে পারবেন?

উত্তরঃ টাকা থাকলে কেন নয়?

4. যুদ্ধবিধ্বস্ত ইরাকে পারবেন রথযাত্রা,
জন্মাষ্টমী পালন করতে?

উত্তরঃ প্রাসদের লোভ দেখিয়ে সবই সম্ভব। যেমন আফ্রিকা তে খ্রিষ্টানরা বাইবেল বিলাচ্ছে। আর ঐখানে রথযাত্রা আর জন্মাষ্টমি পালন হয় মানে এই নয় এইখানে অন্যনায় পূজা হয়। ঐসব জায়গায় লাষ্ট কবে কালী পূজা বা দুর্গা পূজা হয়েছে? জানাবেন কিন্তু !

5. ইসলামী রাজতন্ত্র সৌদি আরবে পারবেন বাদশা
আব্দুল্লাহ'কে বেদ উপহার দিতে?

উত্তরঃ কোন ইস্কনী ছাগল এই কাজ করলো ছবি সহ প্রমান দিন। ইস্কন বেদ অস্বীকার করে। বেদ মানলে অশাস্ত্রীয় হরে কৃষ্ণ নাম আর কাল্পনিক রাধার পূজা করতো না।

6. অতীতের হিন্দু দেশ আজারবাইজানে পুনরায়
বৈদিক সনাতন ধর্ম প্রচার করতে?

উত্তরঃ আজারবাইজান হিন্দু দেশ ছিল প্রমান দিন ফ্রবু। আর হ্যাঁ সনাতন বৈদিক ধর্ম হল পঞ্চমতের পূজা আর তাঁর সম্মান। ইস্কন কাল্পনিক রাধার উপাসনা আর কৃষ্ণ নামক অবতারকে ঈশ্বর মানে যা মটেও বৈদিক নয়। তাই ফালতু প্যান প্যান বন্ধ করেন।

7. সাহস আছে ইসরাইলের তেল আবিবে নামহট্ট
মন্দির ও নগর কীর্তন করতে?

উত্তরঃ কেন নয়? ইসরাইল একটি উদার রাষ্ট্র। সেখানে আপনি আপনি হিন্দু ধর্মের নাম করে ইস্কন যা অপকর্ম করে যাচ্ছে তা টের পেলে তখন সাহসটা আপনাদের উপর ভারী হয়ে পড়তে পারে ফ্রবু। নামহট্ট মন্দির নামে কোন কিছু প্রাচীন ত্রেতা যুগ বা দ্বাপর যুগে ছিল কিনা দেখান তো? রেফারেন্স সহ । এসব অশাস্ত্রীয় ফালতু কাজ কারবার আপনাদের দ্বারাই সম্ভব। কীর্তন নিয়ে আগেই বলেছি। তাই এই নিয়ে খামাকা কথা বলছি না।

8. হরিনাম ছড়াতে পারবেন বানিজ্যিক রাজধানী
দুবাইয়ে?

উত্তরঃ হরিনাম না। অশাস্ত্রীয় হরে কৃষ্ণ নাম যার শাস্ত্রগত কোন ভিত্তি নেই।
শুধু যা করছেন তা টাকার জোরে। আপনাদের শাস্ত্রগত কোন ভিত্তি নেই।

9. বাহারাইনে পারবেন মন্দির তৈরী ও রাজপথে
কীর্তন করতে?

উত্তরঃমন্দির বানিয়ে আমরা যাগ যজ্ঞ করবো। রাস্তায় বগল তুলে নাচার কাম বাঁদরের। আমাদের মতন আর্যদের না।

10. কুয়েতে পারবেন রথযাত্রা র্যালি করতে?

উত্তরঃ আগেই এরকম ফালতু প্রশ্নের উত্তর দেয়া হয়েছে। তাই খামাকা একি ত্যানা পেচ্যানো বন্ধ করেন।

11. মিসরে পারবেন নামহট্ট মন্দির করার প্রস্তাব
করতে?
উত্তরঃনামহট্ট মন্দির নামে কোন কিছু প্রাচীন ত্রেতা যুগ বা দ্বাপর যুগে ছিল কিনা দেখান তো? রেফারেন্স সহ । এসব অশাস্ত্রীয় ফালতু কাজ কারবার আপনাদের দ্বারাই সম্ভব। কীর্তন নিয়ে আগেই বলেছি। তাই এই নিয়ে খামাকা কথা বলছি না।

12. সুদানে পারবেন জন্মাষ্টমী করতে?

উত্তরঃএরকম ভুগি চুগি মার্কা উত্তর আগেই দেয়া হয়েছে। শুধু দেশের নাম চেঞ্জ করে একি কথা আর কত?

১৩. আরব জাহানে গীতার আলো ছড়িয়ে দিতে ?

উত্তরঃউহু! গীতার আলো না। আপনারা গীতার অপব্যাখ্যা ছড়াচ্ছেন। আপনাদের মতে গীতা কৃষ্ণ আমি বলতে নিজেকে বলছেন। যা একদম ভুয়া কথা আর তা মহাভারত পড়লেই দেখা যায় যে উনি আমি বলতে নিজেকে বুঝান নাই। তাই নিজেদের ব্যাবসার জন্য আপনারা গীতাকে ব্যাবহার করছেন মাত্র।

১৪. কমুনিস্ট রাশিয়ায় প্রচন্ড বরফ উফেখা করে রথ
যাত্রা করতে ?

উত্তরঃএরকম ভুগি চুগি মার্কা উত্তর আগেই দেয়া হয়েছে। শুধু দেশের নাম চেঞ্জ করে একি কথা আর কত?

১৫ ঘানার রাজপথে হরিনাম করতে ?

উত্তরঃবার বার একি ভুল। হরি নাম না। বলেন অশাস্ত্রীয় হরে কৃষ্ণ নাম। যার সাথে শ্রী হরির কোন সম্পর্ক নেই।

১৫. পারবেন সাদা-কালো -বাদামী-হলুদ বর্ণ বা
জাতিভেদ ভুলে মানুষ হিসেবে সকলকে একই
প্লাটফর্মে দাড় করাতে ?

উত্তরঃহা হা হা হা এটা সবথেকে আত্মঘাতী ছিল ফ্রবু! আপনাদের পুরান পাপী, মহা বদ ফ্রবুফাদ নিজেই বর্নবাদী ছিল প্রমান চান?
এই নিন মিলিয়ে দেখে নিন।

Prabhupada: Sudra is to be controlled only. They are never given to be freedom. Just like in America. The blacks were slaves. They were under control. And since you have given them equal rights they are disturbing, most disturbing, always creating a fearful situation, uncultured and drunkards. What training they have got? They have got equal right. That is best, to keep them under control as slaves but give them sufficient food, sufficient cloth, not more than that. Then they will be satisfied.

Room Conversation, October 5, 1975, Mauritius ‒

Prabhupada: So here, this man was cheating. Because here it is said: nrpa-linga-dharam. He was dressed like a king. Just like king is very gorgeously dressed. But his bodily feature, he was a black man. The black man means sudra.

Room Conversation, January 21, 1977, Bhuvanesvara ‒

Ramesvara: That’s the trend, then, everywhere, because unemployment is increasing.

Prabhupada: And especially in your country it will be dangerous because these blacks, if they don’t get employment, they will create havoc, these blacks. And they are not civilized. They want money, and if they don’t get money, then they will create havoc.
শুধু তাই না। নারী বিদ্বেষী অনেক অনেক কথা বা কমেন্ট এই বরাহ তার সারাজীবনে করে গেছে। প্রমান লাগলে ববেন কিন্তু ফ্রবু! তাই আর যাইহোক এই একজাতি বা সম-অধিকারের বুলি আপনার নোংরা পাপী মুখে মানায় না।

না , আপনি পারবেন না। এসব একমাত্র ইসকনই করতে
পারে।

উত্তরঃ কেন পারবো না? আমার আপনার পকেটে এরকম হিপ্পি পথভ্রষ্ট সাদাদের টাকা ভরে দিন। রিটার্ন অন ইনভেষ্টমেন্ট হিসাবে আপনি আমিও আমাদের নাম প্রচার করবো। টাকা সব পারে ফ্রবু! প্রমান আপনারা নিজে।

ইসকনকে পছন্দ করেন না ঠিক আছে।
কিন্তু দয়া করে তাঁদের নামে অপপ্রচার করবেন না।

উত্তরঃকোন অপ-প্রচার না। যা সত্যি তাই বলা হয়েছে।

সারা পৃথিবীর মানুষের মাথায় গোবর পুরা না।

উত্তরঃ হ্যাঁ । একদম ঠিক । তাই এখনও অনেক হিন্দু আছে যারা ইস্কন দেখতে পারে না।

ইস্কনের অনেক বিদেশী গুরু উচ্চ শিক্ষিত,
পিএইচডি ডিগ্রী ধারী। অনেক হিন্দু গুরু আমেরিকা
বা বৃটেনের সংসদে বক্তৃতা দেয়ার জন্য
আমন্ত্রিত হন।

উত্তরঃ বিল গেটস সহ অনেক ব্যাবসায়ীও অনেক জায়গায় বক্তৃতা দেন। এরমানে কি এই উনারা হিন্দু ধর্মের পন্ডিত? ভুগি চুগি মার্কা কথা বলার কিছু লিমিট থাকে। শিক্ষিত মানেই সচেতন না ফ্রবু! আমি ডাক্তার মানেই এই নয় যে আমি রসায়ন বুঝবো বা ফার্মেসি বিদ্যা জানবো। এরা উচ্চ শিক্ষিত হতে পারে। কিন্তু ধর্ম জানে না। যে দিন জানবে সেদিন আপনাদের ইস্কন ধসে পড়বে।

পারলে যুক্তি দিয়ে তাদের মুখেমুখি হন !
ধন্যবাদ

কেন? নিজেদের মুরদ নেই? যুক্তি দিয়েই বলেছি যা এতক্ষন বললাম। পাড়লে খন্ডান।

হর হর মহাদেব !

Saturday, February 15, 2020

মহাশিব রাত্রির পূজা পদ্ধতি

আজকাল অনেকেই দেখি সারাদিন উপোস করে যেকোন মন্দিরে গিয়ে ডাব আর জল দিয়ে শিবরাত্রীতে মন্দিরের শিবলিঙ্গে স্নান করিয়ে সমগ্র আয়োজন শেষ করে থাকেন। যা একদম ভুল ব্যাপার। সমগ্র সনাতন ধর্মে শুধুমাত্র এই একটি রাতকেই মহা পূন্যময় রাত আর এই পূজাকেই মহা বলে বিশেষায়িত করা হয়েছে। কারন , এই রাতেই প্রভু পরম প্রেমময় হয়ে ভক্তের সকল মনঃকামনা পূর্ণ করেন।  এই রাতে প্রভুকে ৪ প্রহরে পূজা দেবার নিয়ম। যেমনটা শিব বা লিঙ্গ পুরাণে বর্ণিত রয়েছে। এই ৪ প্রহরের মাঝে মাঝে বিভিন্ন বৈদিক ঋষিকৃত স্তব স্তোত্রাদি পাঠে রাতটি অতিবাহিত করতে হয় এবং পরেরদিন সকালে পারণের মাধ্যমে উপোস ভাংতে হয়।
অনেকেই বলেন শুধু ভাল স্বামীর আশায়ই শিব পূজা করতে হয় যা একদম সঠিক নয়। অনেকেই দেখি শিবকে বৈষ্ণব ভেবে ইস্কন সহ অন্যান্য আসুরিক সম্প্রদায়ের সাথে তাদের মতানুযায়ী শিবরাত্রী করেন। এতে মহাদেব পরমেশ্বর শিবের চরম অপমান করাই হয়ে থাকে।
যাইহোক, আর কথা না বাড়িয়ে আসুন জেনে নেই কিভাবে এই মহাশিব রাত্রীর পূজা করতে হবে।
প্রথমে জানবো অর্ঘ্য কি।
অর্ঘ্যঃ ছোট কুশীতে বেলপাতা, লাল ফুল (জবা না) , তিল, আতপ চাল, লাল চন্দন আর জলই হলো অর্ঘ্য।
যদি এতগুলো পাওয়া না যায়, তাহলে শুধু জল আর আতপ চাল হলেই হবে।
মন্ত্র পাঠ করে কুশীর জল শিবের মাথায় দিতে হবে।
প্রতি প্রহরেই অর্ঘ দিয়েই প্রতিবার নিচের মন্ত্র পড়ে এদের পুজা করতে হবে 





পূজা মানে প্রতি মন্ত্রে একটি ফুল নিয়ে মন্ত্র পড়ে পড়ে কোন পাত্রে বা তামার পাত্রে এই ফুল গুলো রেখে দিতে হবে । 

ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে ওঁ গৌর্যৈ নম
ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে গন পতয়ে নমো
ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে ব্রম্যাদষ্ট্য অষ্টমুর্তি গনেভ্য নমো
ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে অষ্টমুর্তিগনেভ্য নমো

ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে ওঁ বৃষভায় নমো
ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে ওঁ নন্দিকায় নমো
ওঁ এতে গন্ধে পুষ্পে শিবাদি সপরিবারায় সবাহনায় নমো


১ম প্রহরে স্নান

দুধ দিয়ে স্নান করাবেন


মন্ত্র: ওঁ হৌং ঈশানায় নমো: 
ওঁ ইদং স্নানীয় দুগ্ধং ওঁ হৌং ঈশানায় নমো 

অর্ঘ্য মন্ত্র : ওঁ শিবরাত্রি ব্রতং দেব পুজাজপ পরায়ণ:। করোমি বিধিবদ্দত্তং গৃহানার্ঘং মহেশ্বর।। এষোহর্ঘ্য ওঁ হৌং ঈশানায় নমো: 


২য় প্রহর

দই দিয়ে স্নান।

মন্ত্র: ওঁ হৌং অঘোরায় নম।এতৎ স্নানীয় দধনা ওঁ নমো শিবায় নমো।।


অর্ঘ্য মন্ত্রঃ ওঁ নমো শিবায় শান্তায় সর্বপাপহরায় চ। শিবরাত্রৌ দদামর্ঘ্যং প্রসীদ উময়া সহ।এষোহর্ঘ্য ওঁ হৌং অঘোরায় নমো।।


৩য় প্রহর

ঘৃত (ঘি) দিয়ে স্নান

ইদং স্নানীয় ঘৃতং ওঁ হৌং বামদেবায় নমো

অর্ঘ্য মন্ত্রঃ ওঁ দুঃখ দারিদ্র্য শোকেন দগ্ধোহহং পার্বতীপ্রিয়।শিবরাত্রৌ দদামর্ঘ্যং উমাকান্ত গৃহাণা মে। এষোহর্ঘ্য ওঁ বামদেবায় নমো



৪র্থ প্রহর

মধু দিয়ে স্নান করাবেন।

মন্ত্রঃ ইদং স্নানীয় মধুঃ ওঁ হৌং সদ্যোজাতায় নমো।।

অর্ঘমন্ত্রঃ ওঁ ময়া কৃতান্যনেকানি পাপানি হর-শংকর।শিবরাত্রৌ দদামর্ঘ্যং উমাকান্ত গৃহাণা মে।

এষোহর্ঘ্য ওঁ হৌং সদ্যোজাতায় নমোঃ।।

এছাড়াও ৪ প্রহরে আর কি কি দেয়া যায় তা নিম্নে দেয়া হল। 

প্রথম প্রহরঃ দুধ,দই,ঘি,মধু,শর্করা,গন্ধাদি,জলধারা,
আতপ,চাল,তিল,
পুষ্প,পদ্মপুষ্প,করবীপুষ্প,ধূপ,দ্বীপ,নৈবেদ্য,পক্কান্ন, শ্রীফল যুক্ত অর্ঘ্য,তাম্বুল।

দ্বিতীয় প্রহরঃ
চন্দন,তন্ডুল,যব,পুষ্প,পদ্মপুষ্প,লাড্ডু,বীজপূর ফল দ্বারা অর্ঘ্য,ধূপ,দীপ,পায়েস,
তাম্বুল।

তৃতীয় প্রহরঃ চন্দন,তন্ডুল,গম,মন্দারপুষ্প,ধূপ,দীপ,পিঠানানাবিধ শাক,নৈবেদ্য,কর্পূর দ্বারা আরত্রি ,দাড়িম্বযুক্ত অর্ঘ্য দান।

চতুর্থ প্রহরঃ চন্দন,তন্ডুল,মাষকলাই,মুগ,প্রিয়ঙ্গু,কদলী দ্বারা অর্ঘ্য।

প্রতি প্রহরে শঙ্খীপুষ্প,চম্পকপুষ্প,
জাতিপুষ্প, পঞ্চামৃত ইত্যাদি অর্পন করিবে। 
প্রতি প্রহরে জপ পূর্ব প্রহর অপেক্ষা দ্বিগুন হবে। প্রতি প্রহরে স্তোত্র, গীত,বাদ্য,নিত্য এবং নানা প্রকার গান করিবে।

রেফারেন্সঃশিবপুরাণ,জ্ঞানসংহিতা,অধ্যায়৭২।

Thursday, February 6, 2020

বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদে সমগ্র বাঙ্গালি হিন্দু সমাজ :


যিনি নারীর মুখ দেখেন না এবং নারীকে কোনোভাবেই ডাকেন না, চৈতন্যদেবের মতে তিনিই প্রকৃত বৈষ্ণব বা বৈরাগী। এই বিশ্বাস থেকেই চৈতন্যদেব তার সদ্য বিবাহিতা স্ত্রী ও মাকে পরিত্যাগ করেছিলো এবং এক বৃদ্ধা নারীর মুখ দেখা ও তাকে ডাকার অপরাধে চৈতন্যদেব, তার শিষ্য ছোট হরিদাসকে বর্জন করেছিলো ; এরপর এক বছর আশে পাশে ঘোরাঘুরি করার পরও চৈতন্যদেব তাকে ক্ষমা না করায় ছোট হরিদাস জলে ডুবে আত্মহত্যা করেছিলো এবং এই সংবাদ যখন চৈতন্যদেবের নিকট আসে, তখন চৈতন্যদেব বলেছিলো- ইহাই প্রকৃতি সম্ভাষণের প্রায়শ্চিত্ত।
এই সেই চৈতন্যদেব, যার জীবনাদর্শ মানলে পরিবার, সমাজ, সংসার, রাষ্ট্রের ধ্বংস অনিবার্য। কারণ, গার্হস্থ্য ধর্ম- যেটা পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের ভিত্তি, সেটা চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব মতবাদে নেই। বৈষ্ণব মতবাদের মূল কথা হলো সংসার পরিত্যাগ করে মাধুকরী অর্থাৎ ভিক্ষার দ্বারা জীবিকা অর্জন; বৈষ্ণব মতবাদে বিয়ে শাদী, সংসার, সন্তানের জন্মদান বলে কিছু নেই।
চৈতন্যদেবের জন্ম ১৪৮৬ সালে, সমাজ সংসারে তার প্রভাব শুরু হয় মোটামুটি ১৫০০ সালের পর থেকে। হরিনাম প্রচারের নাম করে ২৪ বছর বয়সে চৈতন্যদেব, তার সদ্য বিবাহিতা দ্বিতীয় স্ত্রী বিষ্ণু প্রিয়া এবং মাকে পরিত্যাগ করে সংসার ছেড়ে চলে যান। অথচ হরিনাম প্রচারের জন্য সংসার পরিত্যাগ করতে হবে, এমন কথা সনাতন ধর্মের কোথাও বলা নেই। সনাতন ধর্মের প্রধান পুরুষ শ্রীকৃষ্ণ, তিনিও কখনো এমন কথা কোথাও বলেন নি বা নিজে কখনো সংসার থেকে পালিয়ে বেড়ান নি, তাহলে চৈতন্যদেব কার আদর্শে উদ্বুদ্ধ হয়ে স্ত্রী ও মায়ের প্রতি উত্তর দা্য়িত্বকে অবহেলা বা অবজ্ঞা করে সংসার ত্যাগ করেছিলেন ?
যা হোক, বাঙ্গালি হিন্দু সমাজের খুব কম হিন্দুই এটা জানে যে- প্রচলিত মতে বৈষ্ণব ধর্ম, যাকে আমি বলি কৃৈষ্ণব মতবাদ, সেটা সনাতন ধর্ম থেকে আলাদা। মুহম্মদের অনুসারীদের যেমন বলে মুসলমান, তেমনি চৈতন্যদেবের অনুসারীদেরকে বলে বৈষ্ণব বা বৈরাগী। এই বৈষ্ণব বা বৈরাগীদের কালচার, সনাতনী হিন্দুদের থেকে অনেকটা আলাদা; যেমন বৈরাগীরা কেউ মারা গেলে তাকে সনাতনী হিন্দুদের মতন পোড়ায় না, তাকে মাটিতে পুঁতে রাখে, অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় শ্রাদ্ধ করে না, দেয় চৈতন্যের নামে মহাপ্রভুর ভোগ। সনাতনী হিন্দুদের সাথে বৈষ্ণব সমাজের কালচারে এই দুটিই মূলত প্রধান পার্থক্য, কিন্তু এছাড়াও আরও কিছু সূক্ষ্ম ব্যাপার আছে যেটা বৈষ্ণব বা সনাতনী কেউ খুব একটা খেয়াল করে না। যেমন- বৈষ্ণব মতবাদে মূর্তিপূজা বলে কিছু নেই, কিন্তু বর্তমানে সব বৈষ্ণব ই সনাতনী সমাজের সাথে মিলে মূর্তিপূজা করে। বৈষ্ণবদের আরাধ্য চৈতন্যদেব এবং তার কয়েকজন পারিষদ যারা পঞ্চতত্ত্ব নামে খ্যাত, বৈষ্ণবরা মূলত এদেরই পূজা প্রা্র্থনা করে। বৈষ্ণব সমাজ, সনাতনী হিন্দু সমাজ থেকে আলাদা হতে পারে নি মূলত শ্রীকৃষ্ণের জন্য; কারণ, চৈতন্যদেবের আরাধ্য যেমন ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, তেমনি সনাতনী সমাজের আরাধ্যও শ্রীকৃষ্ণ।
হিন্দু সমাজে বৈষ্ণবরা আধিপত্য বিস্তার করেছে তাদের গুরুগিরি ব্যবসার মাধ্যমে। এই বৈষ্ণব গুরুদের প্রায় সবাই বিবাহিত, তাদের সংসার আছে, ছেলে মেয়ে আছে, যেটা চৈতন্যদেবের আদর্শের সম্পূর্ণ বিরোধী, তারপরও এরা নিজেদের বৈষ্ণব বলে দাবী করে এবং বৈষ্ণব মতবাদ সমাজে প্রচার করে!
চৈতন্যদেব- স্ত্রী ও সংসার পরিত্যাগ করেছিলেন, তিনি কোনো ছেলে মেয়েরও জন্ম দেন নি। তার কারণ তিনি
কাম অর্থাৎ যৌনতায় বিশ্বাস করতেন না। এজন্য তিনি উত্তেজক খাদ্য পরিহার করে নিরামিষ খাবার খেতেন। এই সূত্র ধরে চৈতন্য অনুসারীরা প্রচার করে যে কৃষ্ণভক্ত হতে হলে নিরামিষ খাবার খেতে হবে, এর জন্য তারা গীতার অপব্যাখ্যা করে বলে যে সাত্ত্বিক মানে নিরামিষ খাবার । কিন্তু গীতায় সাত্ত্বিক বলতে নিরামিষকে বোঝানো হয় নি, বরং গীতার ৯/২৭ নং শ্লোকে খাবার দাবারের ব্যাপারে চুড়ান্ত স্বাধীনতা দিয়ে বলা হয়েছে যে, “তোমরা যা কিছু আহার করো তা আমাকে নিবেদন করে আহার করো।” কিন্তু বৈষ্ণব সমাজ মানুষকে নিরামিষ খাওয়াতে বদ্ধ পরিকর।
আগেই বলেছি- তিনিই বৈষ্ণব, যিনি নারীর মুখ দেখেন না বা নারীকে ডাকেন না। নারী ছাড়া কোনো পরিবার গড়ে উঠে না, আর পরিবার ছাড়া সমাজ রচিত হয় না; এই সূত্রে পৃথিবীতে বৈষ্ণব সমাজ বলে আদৌ কিছু নেই। তাই জন্ম সূত্রে কারো বৈষ্ণব বা বৈরাগী হওয়ার সুযোগ নেই, যেহেতু তার পিতা মাতা বিয়ে করার অপরাধে বৈষ্ণব নয়। কিন্তু চৈতন্যদেবের অনুসারী বা ভক্তরা দেদারসে বিয়ে করছে, সন্তানের জন্ম দিচ্ছে, সংসার করছে, বিভিন্ন রকম মূর্তির পূজা করছে, যা সম্পূর্ণ সনাতনী কালচার- আর নিজেদেরকে ভাবছে বৈষ্ণব, এটা আসলে ভণ্ডামীর চুড়ান্ত রূপ।
অন্যদিকে সনাতনী হিন্দু সমাজের অনেকেই ছেলে মেয়ের মুখের ভাত বা অন্নপ্রাশন উপলক্ষ্যে, পিতা মাতার মৃত্যুতে বা অনেক সময় শখ বা খেয়ালের বশেও চৈতন্যের নামে মহাপ্রভুর ভোগ দিয়ে মানুষকে খাওয়ায়, আবার অনেক সময় অনেকে বছরে দু একবার বাড়িতে কীর্তনও দেয়, আর কীর্তনীয়ারা গিয়ে শুরু করে পঞ্চতত্ত্বের পূজা আর গাইতে শুরু করে- জয় গুরু গৌরাঙ্গ, জয় গুরু গৌরাঙ্গ, জয় গুরু গৌরাঙ্গ, জয় জয়; যেখানে শুধু গৌরাঙ্গ বা চৈতন্যেরই আরাধনা, শ্রীকৃষ্ণের কোনো কথাই নেই।




এই ভাবে সনাতনী হিন্দু সমাজ, বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদে পড়ে নিজেদের অজ্ঞাতেই চর্চা করছে বৈষ্ণব মতবাদের, যেখানে প্রধান চৈতন্যদেব, শ্রীকৃষ্ণ নয়। এছাড়াও বৈষ্ণবদের মিথ্যা প্রচারে কোনো প্রশ্ন ছাড়াই প্রায় সকল হিন্দুই বিশ্বাস করে যে চৈতন্যদেব হলেন মহাপ্রভু। কিন্তু বাস্তবে মহাপ্রভু হলেন শ্রীকৃষ্ণ। এভাবে বৈষ্ণবরা সনাতনী হিন্দু সমাজকে আস্তে আস্তে বৈষ্ণব মতবাদে প্রায় কনভার্ট করে ফেলেছে। বৈষ্ণব মতবাদের এই ফাঁদে পড়ে আবার প্রায় সকল হিন্দু এটা বিশ্বাস করে যে চৈতন্যদেব হলেন কলিযুগের অবতার বা ভগবান এবং এর ফলে দ্বাপর যুগের অবতার শ্রীকৃষ্ণকে তারা ফলো করে না, ফলে বৈষ্ণব সমাজের কারণে সনাতনী হিন্দু সমাজ আস্তে আস্তে শ্রীকৃষ্ণ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে, যা হিন্দু সমাজের সর্বনাশকে ডেকে আনছে; কারণ, আগেই বলেছি চৈতন্যদেব বা বৈষ্ণব মতবাদেক ফলো করলে আস্তে আস্তে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্র ধ্বংস হতে বাধ্য, অন্যদিকে শ্রীকৃষ্ণের আদর্শের মাধ্যমে যে কোনো ব্যক্তি আত্মরক্ষা করে টিকে থাকতে এবং বাড়তে সক্ষম, যা সমাজ রক্ষার মূল ভিত্তি।
চৈতন্যদেবকে মহান করে তোলার জন্য বৈষ্ণবদের আরেকটি মিথ্যা প্রচার হলো চৈতন্যদেব কলিযুগের অবতার বা ভগবান, কলিহত জীবকে উদ্ধার করার জন্য তিনি এই ধরাধামে এসেছিলেন। আমরা যেহেতু কলিযুগের মানুষ, এবং যখন কোনো হিন্দু, চৈতন্যদেবের এই কলিযুগের অবতার বা ভগবান তত্ত্বে বিশ্বাস করে, তখন সে আর শ্রীকৃষ্ণকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না, যেহেতু শ্রীকৃষ্ণ জন্ম নিয়েছিলেন দ্বাপর যুগে; এইভাবে তথ্য সন্ত্রাস করে এবং শ্রীকৃষ্ণের পাশে রাধাকে দাঁড় করিয়ে, শ্রীকৃষ্ণের চরিত্র সম্পর্কে নানা প্রশ্ন তোলার সুযোগ দিয়ে, বৈষ্ণবরা, যার মধ্যে আধুনিক ইসকনও অন্তর্ভূক্ত, এরা সনাতন হিন্দু সমাজের ফোকাস শ্রীকৃষ্ণের উপর থেকে সরিয়ে নিয়ে গিয়ে চৈতন্যদেবের উপর নিবদ্ধ করছে এবং হিন্দুসমাজের সুদূরপ্রসারী ক্ষতি করছে; কারণ, আগেই বলেছি বৈষ্ণব মতবাদ আসলে হিন্দু সমাজের ধ্বংসের পথ।
যা হোক, বিভিন্ন কারণে বিভিন্নভাবে চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব মতবাদ সনাতনী হিন্দু সমাজে ঢুকে পড়ার ফলে সনাতনী হিন্দুরা যেমন বৈষ্ণব কালচারকে পালন করছে, তেমনিভাবে বৈষ্ণব নামধারীরাও চৈতন্যদেবের নামে মহাপ্রভুর ভোগ দেওয়া এবং মৃত্যুর পর লাশ না পোড়ানো ছাড়া আর অন্য সকল ক্ষেত্রে সনাতনী কালচার পালন করছে। এর ফলে হিন্দু সমাজের সবাই যেমন এক দিক থেকে বৈষ্ণব, তেমনি বৈষ্ণব সমাজেরও কেউ বৈষ্ণব নয়, সবাই সনাতনী হিন্দু। মূলত চৈতন্যদেবের বৈষ্ণব মতবাদ, সনাতনী হিন্দু সমাজে ছড়িয়ে পড়ার ফলে, বৈষ্ণব ও সনাতনী মিলে একটা জগাখিচুড়িতে পরিণত হয়েছে, ফলে এখানে আর কারোরই কোনো বিশুদ্ধতা নেই।
বাস্তবতার কারণে- শুধু বৈষ্ণবরা নয়, পৃথিবীর সকল মানুষ সনাতনী কালচার পালন করে বা পালন করতে বাধ্য, কিন্তু হিন্দু সমাজে বৈষ্ণবদের ধর্মীয় আধিপত্যের কারণে প্রায় সকল হিন্দু চৈতন্যদেবকে কলিযুগের অবতার বা ভগবান মনে করে এবং নিজেদের মুক্তি বা উদ্ধারের জন্য চৈতন্যের শরণাপন্ন হয়ে তার নামে কারণে অকারণে ভোগ দেয় এই মনে করে যে তারা ধর্মপালন করছ। কিন্তু বাস্তবে চৈতন্যদেবকে অবতার বা ভগবান মনে ক’রে, যিনি কৃষ্ণ তিনিই চৈতন্য এই মিথ্যা থিয়োরিতে বিশ্বাস ক’রে, শুধু বৈষ্ণবরাই নয়, সমগ্র হিন্দু সমাজ এক ভীষণ পাপ করছে এবং এটা তারা করছে বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদে পড়ে। সমগ্র হিন্দু সমাজকে যতক্ষণ এই বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদ সম্পর্কে সচেতন করা না যাবে বা তাদেরকে এই বৈষ্ণব মতবাদ থেকে রক্ষা করা না যাবে, ততক্ষণ হিন্দু সমাজের অধঃপতন কেউ ঠেকাতে পারবে না।
জন্মসূত্রে যে সব অবৈষ্ণব, বৈষ্ণবদের মিথ্যা প্রচারে বিশ্বাস করে চৈতন্যদেবকে কলিযুগের অবতার বা ভগবান মনে করে এবং নিজের আত্মার মুক্তি বা উদ্ধারের জন্য সারাক্ষণ চৈতন্য ভজনায় রত থাকে, তাদের ক্ষেত্রে একটা মজার ব্যাপার লক্ষ্য করা যায়, আর তা হলো- সারাজীবন এরা বৈষ্ণব সেজে থাকার পরও নামের শেষে দাস বা মহন্ত লাগায় না এবং মৃত্যুর পর তাদেরকে না পুড়িয়ে সমাধিস্থ করে যাওয়ার নির্দেশ দিয়ে যায় না। এই ধরণের ব্যক্তিদেরকে যদি বলা হয় যে- আপনি তো সারাক্ষণ চৈতন্য বা গৌরাঙ্গ ভজনায় মেতে থাকেন, তো আপনি কি বৈষ্ণব ধর্ম গ্রহণ করেছেন বা বৈরাগী হয়েছেন বা মারা যাওয়ার পর কি আপনাকে দাহ না করে সমাধিস্থ করা হবে ?
তখন দেখবেন এদের আসল রূপ, বলবে- বৈরাগী হবো কেনো বা বৈরাগীদরে মতো আমাকে সমাধিস্থ করা হবে কেনো ? এরা আসলে জানেই না যে বৈষ্ণব মতবাদ এবং সনাতন ধর্ম প্রকৃতপক্ষে আলাদা দুটো ব্যাপার। শ্রীকৃষ্ণকে ছেড়ে বা শ্রীকৃষ্ণকে পাশে রেখে যখন কেউ চৈতন্যদেবকে তার উদ্ধারকর্তা হিসেবে ধরে নিয়ে চৈতন্যদেবের ভজনা শুরু করে, তখন সে আর সনাতনী থাকে না, হয়ে যায় বৈষ্ণব; খুব কম হিন্দুই এই তত্ত্ব জানে, আর এটাই আসলে বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদ, যে মতবাদের ফাঁদে পড়ে প্রায় সকল হিন্দু কম বেশি বৈষ্ণব মতবাদের চর্চা করে চলেছে এবং এর ফলে দু চার জন সনাতনী হিন্দু বৈষ্ণব মতবাদকে গ্রহন করে নিজেদের নামের পাশে দাস/মহন্তও লাগাচ্ছে, এই ঘটনা ঘটেছে আমার পাশের গ্রামেই এবং আমার থানার পাশের থানার একটি ঋষি/মাটিয়াল অধ্যুষিত গ্রামের সবাই বৈষ্ণব মতবাদ গ্রহণ করে বৈরাগী হয়ে গেছে, তারা এখন এত উচ্চ মাত্রার বৈরাগী যে সবার হাতে অন্ন এবং জল খান না এবং বৈরাগী ছাড়া অন্য কারো সাথে নিজেদের ছেলে মেয়ের বিয়ে পর্যন্ত দেন না।
কাগজে কলমে এইভাবে বৈষ্ণব হওয়ার হার যদিও খুবই কম, কিন্তু যারা ইসকনে সক্রিয়ভাবে যোগ দিচ্ছে, তাদের নামের পাশে তো দাস লাগানো বাধ্যতামূলক; এই ভাবে বৈষ্ণব মতবাদ, আস্তে আস্তে সমগ্র হিন্দু সমাজকে গিলে খাওয়ার চেষ্টা করছে এবং কারণে অকারণে সব হিন্দুকে নিরামিষ খেতে উদ্বুদ্ধ করে বা বাধ্য করে, তাদের কাম ক্রোধ কমিয়ে, গার্হস্থ্য ধর্মের প্রতি তাদেরকে উদাসীন বা বিরাগী করছে, এর ফলে আস্তে আস্তে সমগ্র হিন্দু সমাজ জনসংখ্যা হারিয়ে বিলুপ্তির পথে এগিয়ে চলেছে এবং শক্তি হারিয়ে অসুর জাতের সাথে লড়াইয়ে টিকতে না পেরে জন্মভূমি ত্যাগেও বাধ্য হচ্ছে। আর এর সবই ঘটছে সনাতনী হিন্দু সমা্জের উপর বৈষ্ণব মতবাদের অশুভ প্রভাবের ফলে। গত ৪/৫শ বছর ধরে বৈষ্ণব মতবাদ এইভাবে সনাতনী সমাজের ক্ষতি করে চলেছে, তাই এখনই যদি এ সম্পর্কে সকল হিন্দু সচেতন না হয় এবং বৈষ্ণব মতবাদকে যদি রুখতে না পারে, বৈষ্ণব মতবাদের ফাঁদে পড়ে সমগ্র সনাতনী হিন্দু সমাজ বিলুপ্ত হতে বাধ্য।

Tuesday, February 4, 2020

কৃষ্ণ মহাদেবকে যুদ্ধে হারিয়েছিলেন ! কৃৈষ্ণবদের এই দাবীর খন্ডন।

ইস্কনি কৃৈষ্ণব আর বৈষ্ণবরা প্রায়ই ভাগবতে কৃষ্ণ আর মহাদেবের যুদ্ধের রেফারেন্স দিয়ে বলে, মহাদেবকে কৃষ্ণ হারিয়েছিল তার কৃষ্ণই শিবাপেক্ষা অধিক শক্তিশালী।
আসলে ওরা জানে না এর উত্তর মহাভারতেই দাওয়া আছে। মহাভারতে গুরু দ্রোণ আর পিতামহ ভীষ্ম যখন উভয় পক্ষের যোদ্ধাদের নিয়ে আলোচনা করেন তখন বলেন, "কৃষ্ণার্জুন দ্বৈতকে শুধুমাত্র শিবই হারাতে পারে।" যদিও কর্ণ এবং দুর্যোধন এর বিরোধিতা করে।
কিন্তু জানেন কি শিব কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণার্জুন এর (একই সাথে পক্ষে এবং) বিপক্ষে যুদ্ধকরেন। হ্যা, অশ্বত্থামার কথা বলছি। তিনি শিব তথা রুদ্রের অবতার ছিলেন। তার সম্পর্কেও ভীষ্ম পিতামহ বলেন তার মত যোদ্ধা উভয় পক্ষের কেউই নেই। কিন্তু তিনি নিজের প্রাণের মোহ ত্যাগ করতে পারেন না, যদি তিনি তা ত্যাগ করতে পারেন তবে তাকে আটকে পারবে না।
আশ্চর্য হতে পারেন, অশ্বত্থামা যুদ্ধে ছিলেন তবুও কেন পাণ্ডবরা জয়ী হলো? এর উত্তরটা মনে রাখুন এর উত্তরেই বৈষ্ণবদের প্রশ্নের জবাব আছে।
কুরুক্ষেত্রে কৃষ্ণার্জুনের বিপক্ষে বিভিন্ন দৈবাস্ত্র প্রয়োগ করেও আশ্বত্থামা অবাক হলেন যে তার বাণ থেকে নির্গত কোন দৈবাস্ত্রই তাদের স্পর্শ করছে না, কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এদেখে তিনি বুঝতে পারলেন যে কৃষ্ণার্জুন দ্বৈত সাধারণ কেউ নয়। তিনি তার রথ ঘুরিয়ে সরস্বতী নদীর তীরে নিয়ে বেদব্যাসকে প্রশ্ন করলে ভগবান তাকে তার রহস্য উন্মোচন করেন।
বেদব্যাস বলেন, "কৃষ্ণার্জুন আগের জন্মে নর-নারায়ণ ঋষি ছিলেন। তারা মহাশিব ভক্ত ছিলেন। তারা ঘোর তপস্যা করে শিবের থেকে বর লাভ করেন। ভগবান শিব তাদের বরদেন যে তারা সর্বদাই যুদ্ধে বিজয়ী হবেন, এমনকি শিবের সাথে যুদ্ধ করলেও তারাই জয়ী হবে। অশ্বত্থামা নিজে রুদ্রাবতার, তাই তার হাতের কোন দৈবাস্ত্র কৃষ্ণার্জনের কোন ক্ষতি করে না।"
বুঝলেন তো কার বলে কৃষ্ণ জগতজয়ী, আর তার ভক্তরা করে বেড়ায় শিবনিন্দা। প্রমাণ নিম্নে বর্ণিত একদম রেফারেন্স সহ।




অর্জুন উবাচঃ
_____________
"সংগ্রামে ন্যহনম শত্রুন্সুরুঘইরবিমলৈরহম।
অগ্রতো লক্ষ্যয়ে যান্তম পুরুষম পাবকপ্রভম।। ৪
জ্বলন্তম শূলমুদ্যম্য যা দিশম প্রতিপদ্যতে।
তস্যা দিশি বিদির‍্যান্তে শত্রভো মে মহামুনে।। ৫
তেন ভগ্নানরিসর্বন্মদ্ভগনান্মন্যতে জনহ্।
তেন ভগ্নানি সৈন্যানি প্রস্থতো নুব্রজাম্যহম।। ৬
ভগবমস্তন্মমাচাক্ষব কো বৈ স পুরুষোত্তমঃ।
শূলপাণির্ময়া দ্রষ্টস্তেজসা সূর্য্যসন্নিভিঃ।। ৭
ন পদ্ভয়া স্প্রশতে ভূমি না চ শূলম বিভুঞ্চতি।
শূলাচ্ছূলসহস্রানি নিষ্পেতুসতস্য তেজসা।।"৮
~ মহাভারত (৭/২০২ঃ৪-৮)
অনুবাদঃ
__________
" হে মহামুনি, যুদ্ধের সময় একদিন লক্ষ্য করলাম যে আমার রথের অগ্রে এক উগ্র অগ্নি সদৃশ পুরুষ বিচরণ করছেন,তাঁর হাতে জ্বলন্ত শূল, মনে হচ্ছিলো যেন সূর্য্য ও অগ্নির সকল তেজ তাঁর শরীরেই পুঞ্জীভূত হয়েছে। আমার অস্ত্রসমূহের অনেক পূর্বে গিয়েই তিনি আমার শত্রুদের বধ করে রাখছিলেন। আমার অস্ত্রগুলো কেবল শত্রুদের মৃত শরীরে আঘাত করছিল। সেই পুরুষের পদতল ভূমি স্পর্শ করছিল না। হে ঋষি, আমাকে বলুন উগ্রতেজস্বী সেই পুরুষোত্তম কে ছিলেন?"
মহর্ষি বেদব্যাস পরবর্তী ২ শ্লোকে অর্জুনের প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে বলছেনঃ
ব্যাস উবাচঃ
_____________
"শূলপাণিমহাকর্ষণ তেজসা সূর্য্যসন্নিবাহঃ।
প্রজাপতিনা প্রথমম তৈজসম,পুরুষম প্রভুম।
ভুবনাম ভূর্ভূবম দেবম সর্বলোকেশ্বরম প্রভুম।। ৯
ঈশানাম বরদাম পার্থ দ্রষ্টবানসি শঙ্করম।
তম গচ্ছ শরণম দেবার্মম বরদম ভূবনেশ্বরম।।" ১০
~ মহাভারত (৭/২০২:৯-১০)
অনুবাদঃ
___________
"বৎস ! তুমি শূলহস্তা যে তেজস্বী পুরুষকে দেখেছ তিনি ভগবান শঙ্কর, যার থেকে প্রজাপতিগণের সৃষ্টি হয়েছিলো। ইনি ত্রিভুবনকে ধারণ করেন তাই সর্বলোকের ঈশ্বর ও প্রভু।তাই এনাকে ঈশানও বলা হয়।হে পার্থ তুমি সেই অভীষ্ট বর প্রদানকারী ভগবান ভুবনেশ্বরের শরণাপন্ন হও।"
বস্তুতঃ যজুর্বেদের শ্রীরুদ্রমের নিম্নোক্ত মন্ত্রেই ভগবান রুদ্রদেবকে এই বলে স্তুতি করা হয়েছে যে তিনি তাঁর ভক্তদের সকল শত্রুদের পূর্বেই বধ করে রাখেন।
"নমো অগ্রেবধায় চ, দূরে বধায় চ।।"
~ যজুর্বেদ (৪/৫/৮)।
অনুবাদ ;
"সেই রুদ্রদেবকে নমষ্কার যিনি ভক্তের আগে গিয়ে শত্রুকে সংহার করেন এবং দূরে থেকে শত্রুর মনোবল হরণ করেন।।"

Sunday, February 2, 2020

ভাগবত পুরান এর কিছু তথ্য

শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ এটা কবে রচিত? এটা কি কৃষ্ণদৈপরায়ণ ব্যাসদেব রচনা করেছেন? এরস্কন্ধ, অধ্যায় ও শ্লোক সংখ্যকত?


উত্তর- বেশীর ভাগ হিন্দুরাই বলবে এটা কৃষ্ণদৈপরায়নব্যাসদেব রচনা করেছেন মহাভারতেরযুগে এবং এতে শ্লোক সংখ্যা১৮হাজার। প্রমাণ হিসেবে তারা ঐগ্রন্থের একটি শ্লোক দেখিয়েপ্রমাণের চেষ্টা করবে। শ্লোকটাএকটু দেখেনি-


"অষ্টাদশ শ্রী ভাগবত মিষ্যতে" শ্রীমদ্ভাগবত ১২।১৩।৯.

অর্থাৎ ভাগবতে মোট ১৮০০০শ্লোক আছে।

এবার আমার কথাগুলো মনোযোগদিয়ে পড়ুন, আশা করি অনেক নতুনতথ্য পাবেন।




এর শ্লোক সংখ্যা কখনোই ১৮০০০ নয়, কেননা গণনা করলে এতে মাহাত্মসহ মোট ১৪৭৬৪টা শ্লোক (প্রায়) পাওয়া যায়। মানে এই গ্রন্থে ভেজাল আছে এটা ১০০ ভাগ নিশ্চত।এখন বলতে পারে যে আমার কথাটাযে ঠিক তার প্রমাণ কি??? কথাটা অযোক্তিক নয়, তাই আপনাদেরজন্য প্রমাণ উপস্থাপন করলাম।যারা যাচাই করতে চান তারা রামকৃষ্ণমিশন থেকে গীতাপ্রেস এর শ্রীমদ্ভাগবত পুরাণ কিনে যাচাই করে নিবেন-মোট স্কন্ধ ১২টা।মোট অধ্যায় ৩৩৫টা,মাহাত্য সহ মোট অধ্যায় ৩৪৫টা। মোট শ্লোক সংখ্যা ১৪০৬১টা,মাহাত্য সহ মোট শ্লোক ১৪৭৬৪টা।অনেকে প্রশ্ন করতে পারেন কোনস্কন্ধে কতটা অধ্যায় ও শ্লোকআছে ??? তাই সেটাও দিলাম আপনাদের জানার জন্য-
১ম স্কন্ধে ১৯টি অধ্যায় ও ৮০৯টাশ্লোক আছে।
২য় স্কন্ধে ১০টি অধ্যায় ও ৩৯১টাশ্লোক আছে।

৩য় স্কন্ধে ৩৩টি অধ্যায় ও ১৩১৭টাশ্লোক আছে।
৪র্থ স্কন্ধে ৩১টি অধ্যায় ও১৪৪৫টা শ্লোক আছে।
৫ম স্কন্ধে ২৬টি অধ্যায় ও ৬৬৮টাশ্লোক আছে।
৬ষ্ঠ স্কন্ধে ১৯টি অধ্যায় ও ৮৫১টাশ্লোক আছে।
৭ম স্কন্ধে ১৫টি অধ্যায় ও ৭৫০টাশ্লোক আছে।
৮ম স্কন্ধে ২৪টি অধ্যায় ও ৯৩১টাশ্লোক আছে।
৯ম স্কন্ধে ২৪টি অধ্যায় ও ৯৬৪টাশ্লোক আছে।
১০ম স্কন্ধে ৯০টি অধ্যায় ও৩৯৪৮টা শ্লোক আছে।
১১দশ স্কন্ধে ৩১টি অধ্যায় ও১৩৬৭টা শ্লোক আছে।
১২দশ স্কন্ধে ১৩টি অধ্যায় ও৫৬৬টা শ্লোক আছে।

মানে মাহাত্ম বাদে অধ্যায়৩৩৫টা ও শ্লোক ১৪০৬১টা। শুরুতে মাহাত্ম্যমে অধ্যায় আছে ৬টিও শ্লোক আছে প্রায় ৫০৪টা। শেষের মাহাত্ম্যমে অধ্যায় আছে ৪টিও শ্লোক আছে প্রায় ১৯৯টা।মানে মাহাত্ম্যমসহ অধ্যায় প্রায়৩৪৫টা ও মাহাত্ম্যমসহ শ্লোকআছে প্রায় ১৪৭৬৪টা।মানে এই গ্রন্থ পুরোটাই ভেজালে পরিপূর্ণ। আর এটা কোনসনাতন ধর্মের শাস্ত্রই না । এবং শ্রী ব্যাস রচিত না।

কাজেই এইসব নব্য কৃৈষ্ণবদের রচিত গ্রন্থ থেকে সাবধান থাকবেন।
হর হর মহাদেব। 

সমুদ্রপুত্র রাজা গৌড় গোবিন্দ ও শ্রীহট্ট

  সিলেটের   ‎ গৌড় গোবিন্দ এবং আজকের   ‎ শাহজালাল বিভিন্ন তথ্যপঞ্জী এবং পরবর্তিতে আবিষ্কৃত তাম্রফলক ও শিলালিপি থেকে সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস স...

Popular Posts