Saturday, January 16, 2021

মহাভারত কি সত্যি ঘটনা ??

 মহাভারতকে অনেক সময় হোমারের লেখা ইলিয়ড ও ওডিসের মত ফিকশন বলা হয়, কিন্তু বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য ও তাঁর বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর মহাভারত ও তার সময়কালের সপক্ষে জোড়ালো যুক্তি পাওয়া যায়। প্রত্নতত্ত্ব মিথ্যা বলে না, তবে interpretation ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে ।

১৯৫২ সালে প্রখ্যাত প্রত্নতত্ত্ববিদ বি বি লাল ইন্দ্রপ্রস্থ ও হস্তিনাপুরের খননকার্য করে বেশ‌ কিছু তত্ত্ব আমাদের সামনে উপস্থাপনা করেন। এই সময় হস্তিনাপুর, কুরুক্ষেত্র, মথুরা, পানিপথ, তিলাপাত, বাগপাত, বৈরাত…এসমস্ত অঞ্চলে বেশ কিছু painted Grey wire pottery এর নিদর্শন তিনি পান, যার সময়কাল সি ১৪ কার্বন ডেটিং অনুযায়ী ১০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ। যা যা প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে তাতে মনে হয় এটি একটা কৃষি ও পশুপালন নির্ভর জনবসতি ছিল।

বি বি লাল

মৎস ও বায়ু পুরান অনুযায়ী রাজা নিচাক্সু যিনি রাজা পরীক্ষিতের( অভিমন্যুর পুত্র ও অর্জুনের পৌত্র) পঞ্চম বংশধর, তাঁর সময় এক ভয়ঙ্কর বন্যা হয় হস্তিনাপুরে। ফলে জনবসতি হস্তিনাপুর পরিত্যাগ করে কৌশাম্বীতে(এলাহাবাদ/প্রয়াগরাজ) পলায়ন করে। সত্যি সত্যিই হস্তিনাপুরের খননকার্যের এক ভয়ঙ্কর সর্বগ্ৰাসী বন্যার নিদর্শন পাওয়া যায় যা মৎস ও বায়ু পুরানের বর্নিত বন্যার সত্যতা যাচাই করে।

আজকের দিল্লির পুরানা‌ কিলা যা আফগান‌ শাসক ও শূর বংশের প্রতিষ্ঠাতা শের শাহ শূরীর সময় তৈরি হয়, কথিত আছে সেইখানেই ছিল পান্ডবদের রাজধানী ইন্দ্রপ্রস্থ। শুধু কি কথিত? সামস সিরাজ আলফির রচিত তারিখ ই ফিরোজশাহি তে ইন্দ্রপ্রস্থের উল্লেখ আছে, এই শহরকে একটি পরগনার মূল প্রশাসনিক ভবন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পশ্চিম দিল্লির নারায়না গ্ৰামের থেকে পাওয়া ১৪০০ শতাব্দীর সময়কালীন লিপিতে ইন্দ্রপ্রস্থের উল্লেখ আছে। এছাড়াও ১৬০০ শতাব্দীতে আকবরের সময়ে আবুল ফজলের লেখা আইন ই আকবরীতে লেখা আছে যেখানে এখন‌ হুমায়ুনের দূর্গ আছে, সেখানে একসময় ইন্দ্রপ্রস্থ নামে একটি নগরী ছিল যা পান্ডবদের রাজধানী ছিল। এই ১৯০০ শতাব্দী পর্যন্ত পুরানা কিলার ভেতরে ইন্দ্রপাত বলে একটা ছোট্ট গ্ৰাম ছিল, এখন যার অস্তিত্ব নেই। এই পুরানা কিলা অঞ্চলে খননকার্য চালিয়ে বেশ কিছু প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া গেছে যার বয়স প্রায় চারশত খ্রীষ্টপূর্বাব্দ।

বি বি লালের এই সময়কালকে সম্পূর্ণ নসাৎ করছে খুব সাম্প্রতিককালের একটি খননকার্য যা প্রত্নতত্ত্ববিদ সঞ্জয় মঞ্জুলের নেতৃত্বে হয়েছে। ২০১৯ অক্টোবর মাসে ইকোনমিক টাইমসে প্রকাশিত একটি রিপোর্ট অনুযায়ী এই নতুন খননকার্য দিল্লি থেকে ৬৮ কিলোমিটার দূরে সানাউলি নামের একটি জায়গায় করা হয়। এখানে একটি ঘোড়ায় টানা রথ পাওয়া গেছে, এছাড়া ochre coloured pottery, যুদ্ধের বর্ম, মশাল এবং তলোয়ার পাওয়া গেছে। এগুলোর এক্স রে পরীক্ষা, ত্রিমাত্রিক স্ক্যানিং, photogrammetry, GPR survey ইত্যাদি বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা করা হয়েছে নিদর্শনগুলোর সময়কাল সম্পর্কে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য। তাতে যে সময়কাল উঠে আসছে তা চমকে দেওয়ার মত। নিদর্শনগুলো ১৫০০ থেকে ২০০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পুরোনো, অর্থাৎ সিন্ধু সরস্বতী সভ্যতার সমসাময়িক!

সানাউলির প্রত্নতাত্ত্বিক খননকার্য।

যে নিদর্শন পাওয়া গেছে তার মধ্যে ঘোড়ার লাগাম রয়েছে, রথের চাকা ও তাম্রনির্মিত ত্রিভুজাকৃতি বস্তু পাওয়া গেছে। সঞ্জয় মঞ্জুলের কথা অনুযায়ী এটা ঋকবৈদিক যুগ ও পরবর্তী যুগের সভ্যতার একটা মিসিং লিঙ্ক। হস্থিনাপুরের যে বন্যার কথা বললাম, বি বি লালের মতামত অনুযায়ী তা প্রায় ৮০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের ঘটনা। এই বন্যার কবলে থেকে পালিয়ে কুরুবংশের বাকিরা কৌশাম্বীতে তাদের রাজধানী স্থাপনা করে, শুরু হয় ভাৎসা বা ভামসা রাজবংশের। এই বংশের রাজা উদয়ন ভগবান বুদ্ধের সমসাময়িক (৫৫০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) ও বৌদ্ধ ধর্মের পৃষ্ঠপোষক। ইনি কুরুবংশের উনিশতম উত্তরাধিকারী। ভাসার লেখা স্বপ্নবাসবদত্তা নাটকে এনার উল্লেখ পাওয়া যায়।

সঞ্জয় মঞ্জুল কুরু বংশের ক্রোনোলজি ঘেঁটে একটা তত্ত্ব দিয়েছেন। তাঁর কথায় প্রতিপা থেকে ধৃতরাষ্ট্র, পান্ডু, যুধিষ্ঠিরা হয়ে একেবারে কুরুবংশের ৩৬ তম উত্তরাধিকারী খেমাকা(তিনি ইরামিত্রর সন্তান) পর্যন্ত প্রতি রাজাকে পঞ্চাশ বছর করে সময় দিলেও মহাভারতের যুদ্ধের একটা মোটামুটি সময় পাওয়া যায় যা ১৭৫০ খ্রীষ্টপূর্বে গিয়ে দাঁড়াবে।

দ্বারিকার খননকার্য:- ভারতে সমুদ্র প্রত্নতত্ত্বের পথপ্রদর্শক এস আর রাও এর দ্বারিকা খননকার্য মহাভারতে সত্যতার পক্ষ সবথেকে বড় প্রমান। এস আর রাও লিখছেন:

"The discovery of the legendary city of Dwaraka which is said to have been founded by Sri Krishna, is an important landmark in the history of India. It has set to rest the doubts expressed by historians about the historicity of Mahabharata and the very existence of Dwaraka city. It has greatly narrowed the gap in Indian history by establishing the continuity of the Indian civilization from the Vedic Age to the present day."

এস আর রাও।

দ্বারিকা নগরীর থেকে উপবৃত্তীয়, ত্রিভুজাকৃতি, চতুর্ভুজাকৃতি বিভিন্ন নিদর্শন পাওয়া যায় যা সমুদ্রের তলদেশের ৬ মিটার গভীরে অবস্থিত। এছাড়া এই গভীরতায় প্রস্তর নির্মিত বেশ কিছু জাহাজের নোঙর পাওয়া গেছে যা দ্বারিকা নগরীর প্রাচীন ও সমৃদ্ধ সমুদ্রবন্দর হওয়াকেই ইঙ্গিত করছে। এই অঞ্চলে খননকার্যে যেমন underwater photography র ব্যবহার হয়েছে, তেমনি ৭৫ মাইক্রন পলিওস্টার ফিল্মের উপড় ড্রয়িং এর সাহায্যও নেওয়া হয়েছে। এই অঞ্চলে গোমতী নদীর ধারায় গভীরতা বজায় রাখবার জন্য সরকার কর্তৃক নিয়মিত ড্রেজিং হয়, তাই এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনগুলির ওপড় sediment পড়ে গিয়েছিল, ফলে পরিস্কার করতে ব্রাশের ব্যবহার করতে হয়।

প্রাচীন‌ দ্বারিকা নগরীর ধ্বংসাবশেষ।

কি কি পাওয়া গেছে দ্বারিকায় সমুদ্রগর্ভ থেকে?

বালি পাথরের তৈরি প্রাচীন দুর্গের দেওয়াল, স্তম্ভ, ত্রিভুজাকৃতি নির্মাণের অংশ, পতাকা গাঁথার জন্য ব্যবহার হওয়া প্রস্থরনির্মিত ফ্ল্যাগপোস্ট। কিছু সীল ও কিছু লিপি পাওয়া গেছে যা ১৫০০ খ্রীষ্টপূর্ব পুরাতন, কিছু pottery পাওয়া গেছে যার কার্বন ডেটিং করে জানা যাচ্ছে এগুলো ৩৫২৮ খ্রীষ্টপূর্ব পুরাতন। এস আর রাও কে যখন এ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হয় তখন তিনি মজা করে বলেন কেবল শ্রীকৃষ্ণের নাম লেখা সাইনবোর্ড পাওয়া যায় নি।

প্রাচীন‌ দ্বারিকা নগরীর ধ্বংসাবশেষ।

স্যার এস আর রাও ২০০০ সালে সংস্কৃতি মন্ত্রকের কাছে স্থানটিকে প্রত্নতাত্ত্বিকভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটি স্থান বলে ঘোষনা করার আবেদন জানান, ও জায়গাটিকে একটি প্রত্নতাত্ত্বিক ভ্রমনস্থান ও তীর্থক্ষেত্রে পরিণত করার আবেদন জানান। প্রস্তাবিত সম্পূর্ণ প্রজেক্টের খরচ ছিল ১৪ কোটি টাকা। সরকার খরচের ভয়ে আর উদ্যোগ নেয়নি।

এস আর রাও বলছেন:

The fort walls of the first town of Dawarka said to have been founded at kurusthali in Bet Dwarka island have been traced onshore and in the sea and also dated by thermoluminescence dating method to 16th century B C".

১৯৭৯-১৯৮০ র সময়ে প্রথম দ্বারিকাধীশ মন্দিরের কাছে খনন শুরু হয়। এই সময় প্রথম এখান‌ থেকে ক্ষয়প্রাপ্ত প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন ও pottery পাওয়া যা এই অঞ্চলে প্রায় নয় হাজার বছর আগে সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে যাওয়া নগরীর ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরে। পরে ১৯৮৮ সালে আবার খনন হয়। এর কিছু নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল…সমুদ্রনারায়ন মন্দির পর্যন্ত একটা বিস্তীর্ণ এলাকায় খোঁজ চালানো হয় প্রাচীন প্রস্তর নির্মিত নগর দুর্গের প্রাচীরের সন্ধান পাওয়া জন্য। এছাড়াও ঠিক কি কারনে এতবড় একটা নগরী সমুদ্রগর্ভে তলিয়ে গেল তাঁর কারণ জানা ও মহাভারতের হরিবংশ যাতে দ্বারিকা নগরীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র বিস্তারিত বর্ননা পর্যন্ত দেওয়া আছে তার সপক্ষে কোনো প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন পাওয়া যায় কিনা সেই চেষ্টা করা।

এস আর রাও দ্বারিকা নগরী সম্পর্কে বলছেন:

There were two fortification walls. One in the lower terrace and another in the middle terrace. The walls which are extended over a length of 4 km on the eastern shore are mostly destroyed by sea action. The walls of the lower terrace are of massive dressed sand stone blocks while that of the upper terrace are of rubble. The houses and other public buildings, built of smaller size stones within the enclosure are all destroyed and levelled up by the encroachment of the sea. These structures lie in a depth of 7 to 19 meters, below the present mean sea level, during the last 5000 years".

মূল দ্বারিকা নগরী ৬ টি ব্লকের ওপর প্রতিষ্ঠিত। দুটি ব্লক ডানদিকে ও চারটি ব্লক বামদিকে। ছটা সেক্টরই বালিপাথর নির্মিত প্রাচীর দ্বারা ঘেরা। এছাড়া জাহাজের নোঙরের উপস্থিতি দ্বারিকা নগরীর সমুদ্র বাণিজ্যের দিকে ইঙ্গিত করে। হরিবংশে দ্বারিকাকে বারো যোজন জুড়ে বিস্তৃত নগরী বলা হয়েছে। বর্তমান খননকার্যের ফলে‌ পাওয়া দ্বারিকা নগরী অনেকটাই ওই মাপের। এখানে প্রস্তরে খোদাই করা বিষ্ণুমুর্তি পাওয়া গেছে ও একরকমের সীল পাওয়া গেছে। হরিবংশে বলা আছে প্রাচীন ‌দ্বারিকা নগরীর নাগরিকেরা একরকম সীল ব্যবহার করত, খননকার্যের ফলে পাওয়া পুরাতাত্ত্বিক সীল অনেকটাই এই‌ বর্নিত ‌সীলের মত।

এই সেই সীল যা দ্বারিকা নগরীর সমুদ্রগর্ভ থেকে পাওয়া যায়।

শ্রী কোটাভেঙ্কাটাচালামের লেখা Age of Mahabharata বইতে চারটি প্রাচীন লিপির কথা উল্লেখ আছে।

প্রথম লিপিতে বলা হচ্ছে মহারাজ পরীক্ষিতের মৃত্যুর ( ৩০৪১ খ্রীষ্টপূর্ব) পর রাজা হন জনমেজয়া। ৩০১৩-৩০১৪ খ্রীষ্টপুর্বে এক পূর্ণ কৃষ্ণপক্ষের দিনে তিনি দুটি গ্ৰাম ও দুটি ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান দান ‌করছেন রামসীতার পূজোর পর।

দ্বিতীয় লিপি একটি তাম্রলিপি যা কেদারনাথ মন্দিরের কাছাকাছি হিমালয়ের থেকে পাওয়া গেছে, সেখানেও কেদারনাথ স্বামীর পূজোর পর রাজা জনমেজয়া দান‌ করছেন এরকম উল্লেখ আছে।

তৃতীয় লিপিটি অবশ্য তত প্রাচীন‌ নয়। ৬৩৪ খ্রীষ্টাব্দে রাজা দ্বিতীয় পুলকেশী আমলে একটি শিব মন্দিরের গায়ে এই লিপি পাওয়া যাতে মহাভারতের পরবর্তী রাজাদের উল্লেখ আছে। মন্দিরটি ধারোয়াড় জেলায় অবস্থিত।

চতুর্থ লিপিটি খ্রীষ্টপূর্ব ৪৭৭-৪৭৬ বছরের পুরনো। রাজা সুধন্যের উল্লেখ আছে এতে। রাজা সুধন্য কুরুবংশের বংশধর যিনি গুজরাট অঞ্চলে শাসন‌ করতেন।

কিছু যৌক্তিক তর্ক….

১. প্রাচীন‌‌ সংস্কৃত সাহিত্যে 'পুরান' ও 'ইতিহাসা'…এই দুটি শব্দ বহুল ব্যবহৃত হয়ে থাকে। 'পুরান' অর্থে প্রাচীন ইতিহাস ও 'ইতিহাসা' অর্থে সাম্প্রতিক ইতিহাস। মহাভারত একটি 'ইতিহাসা'। যদি কোনো ফিকশন‌ লিখতেই হতো তবে ব্যাসদেব 'কাব্য' বা 'কথা'..এই টার্মটি ইউজ করতে পারতেন।

২. চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য প্রভু শ্রীকৃষ্ণের ১৩৮ তম প্রজন্ম, আমি বলছি না…স্বয়ং মেগাস্থিনিস বলে গেছেন তাঁর ইন্ডিকা গ্ৰন্থে।

৩. আদিপর্বে ঋষি মনু থেকে শুরু করে ৫০ টি রাজবংশের পরপর উল্লেখ আছে। 'কাব্য'/ফিকশন লিখতে হলে এত বিস্তারিত পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনার প্রয়োজন থাকে না..ইত্যাদি।

কাজেই যুক্তি আছে, তাঁর খন্ডনও আছে, কিন্তু এত বড় একটা সাহিত্যিক ঐশ্বর্যকে স্রেফ ওয়ার্ক অফ ফিকশন বলে দেগে দেওয়াটা ঠিক নয়।

footnote:

 https://m.economictimes.com/news/politics-and-nation/mahabharata-much-older-say-asi-archaeologists/amp_articleshow/71658119.cms 

http://mahabharathascience.blogspot.com/p/material-evidence-supporting-time-of.html?m=1

Thursday, January 7, 2021

মহাভারত ও আধুনিক সমর অস্ত্র

 পরমানু বোমার আবিষ্কর্তা রবার্ট ওপেনহাইমার ভগবদ গীতা পাঠ করার পর সংস্কৃত ভাষা শেখার উদ্যোগ নেন। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল অনুবাদ না পাঠ করে মূল সংস্কৃত ভাষায় মহাভারত পাঠ করা। মহাভারত ও ভগবদ গীতা তাঁকে এত প্রবলভাবে প্রভাবিত করে যে তিনি বিভিন্ন প্রসঙ্গে ব্যক্তিগত জীবনে মহাভারত ও রামায়নের quote ব্যবহার করতেন, ঠিক এই সময়ে মহাভারতে বর্ণিত ব্রহ্মাস্ত্রের বিবরণ তাকে গভীরভাবে আকর্ষন করে।

Robert Oppenheimer

মহাভারতে ব্রহ্মাস্ত্রের এই বর্ণনা দেওয়া আছে…

১০,০০০ সূর্যের মত প্রজ্বল্যমান এক অস্ত্র যার প্রয়োগে মৃতদেহ পর্যন্ত ভীষণভাবে পুড়ে যাবে, চুল ও নখ খসে পড়বে, মাটির পাত্র চৌচির হয়ে ফেটে যাবে, উড়ন্ত পাখিরা সাদা হয়ে যাবে(পড়ুন উড়ন্ত অবস্থায় মারা যাবে)। কয়েকঘন্টা পর সমস্ত খাদ্যবস্তু infected হয়ে যাবে।

পরমানুর বোমার effect এর থেকে নিখুঁত বিবরণ বোধহয় আর হয় না। মহাভারতে আরো উল্লেখ আছে

যে বস্তু, স্থান বা পাত্রের ওপর ব্রহ্মাস্ত্রের প্রয়োগ হবে তা সম্পূর্ণ ধ্বংস হবে, ভূমি চাষবাসের অযোগ্য হয়ে পরবে, সে ভূমিতে বৃষ্টি হবেনা বহুকাল, মানুষ ও সমস্ত প্রাণীর জননক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাবে বহু বছরের জন্য।

Trinity test:- আমেরিকার প্রথম পরীক্ষামূলক পরমানুর পরীক্ষণ…..ট্রিনিটি টেস্ট, নামটা এসেছে John Donne এর লেখা কবিতা থেকে। ১৯৪৫ সালের ১৬ই জুলাই হোয়াইট স্যান্ড প্রুভিং গ্ৰাউন্ডে এই টেস্ট সফলভাবে সমাধা হয়। এই টেস্টের পর অকুস্থল থেকে এক বিশেষ প্রকার কাঁচ জাতীয় পদার্থ পাওয়া যায় যা বিজ্ঞানীদের কাছে সম্পূর্ণ অপরিচিত ছিল। পরমানুর বোমার বিস্ফোরণে প্রচন্ড উত্তাপ(৩০৯০ ডিগ্ৰি ফারেনহাইট অথবা ১৭০০‌ডিগ্ৰি সেলসিয়াস) সৃষ্টি হওয়ার ফলে বালির রুপান্তর ঘটে ওই পদার্থ তৈরি হয় যার নাম দেওয়া হয় ট্রিনিটি টেস্ট এর নাম অনুযায়ী 'ট্রাইনাইটাইট'।

Trinity test

Trinitite

সাংবাদিক সম্মেলনে যখন ওপেনহাইমারকে প্রশ্ন করা হয় এই ধরণের বোমার বিস্ফোরণ পূর্বে আর কখনও হয়েছিল কিনা তার উত্তরে তিনি বলেন " yes, in modern times".এই বক্তব্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়, তিনি যে প্রাচীন হিন্দু গ্ৰন্থ মহাভারতের উল্লেখ করেছিলেন সেটা খুব স্পষ্ট। এই বক্তব্যের থেকে বোঝা যায় পরমানুর বোমার জনকের মহাভারতের সত্যতা বিষয়ে কোনো সন্দেহ ছিল না, অন্তত মহাভারতের Mythology বা Myth নামক প্রোপাগান্ডায় তিনি বিশ্বাসী ছিলেন‌ না।

পরমানু বোমার প্রথম সফল পরীক্ষণের পর অদ্ভুত এক মনস্থিতি হয় রবার্ট ওপেনহাইমারের। উচ্ছাসের বদলে এক বিচিত্র বিষাদ গ্ৰাস করে তাঁকে। এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন…

"We knew the world would not be the same. A few people laughed, a few people cried, most people were silent. I remembered the line from the Hindu scripture, the Bhagwad Geeta

.... Vishnu is trying to persuade the Prince that he should do his duty and to impress him takes on his multi-armed form and says, "Now, I am become Death, the destroyer of worlds." I suppose we all thought that one way or another."

ভগবদ গীতার এই অংশটির কথাই তিনি বলতে চাইছিলেন…

Reference : Bhagwat Gita - 11th Chapter, 32nd Verse
कालोऽस्मि लोकक्षयकृत्प्रवृद्धो लोकान्समाहर्तुमिह प्रवृत्तः।
ऋतेऽपि त्वां न भविष्यन्ति सर्वे येऽवस्थिताः प्रत्यनीकेषु योधाः॥११- ३२॥

এবার রাজস্থানের একটা খননকার্যের কথা বলবো। এই‌ খননকার্য কোনো আর্কিওলজিক্যাল প্রজেক্টের অঙ্গ নয় বরং নেহাতই কাকতালীয়। একটি হাউজিং প্রজেক্টের জন্য খোঁড়াখুঁড়ি করতে গিয়ে যোধপুরের ১০ মাইল পশ্চিমে উত্তর রাজস্থানের একটি তিন বর্গ কিলোমিটার এলাকায় মাটির নিচে গোলাকৃতি ভাবে খুব হাই গ্ৰেড রেডিওঅ্যাকটিভি ও তেজস্ক্রিয় ছাই এর অস্তিত্ব পাওয়া যায়। পরে এই প্রজেক্ট বন্ধ হয়ে যায় ও এখানে ভারতীয় ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশনের ল্যাবরেটরি তৈরি হয় ড্রোন মাউন্টেড রেডিওঅ্যাকটিভ সেন্সর তৈরির জন্য। ১৯৮৩ সালে ন্যাশানাল ক্যান্সার রেজিস্ট্রি রিপোর্ট অনুযায়ী সারা দেশের মধ্যে যোধপুরেই সর্বাধিক লিউকেমিয়া, হাড়, ত্বক ও প্রস্টেট ক্যান্সারের রেকর্ড পাওয়া যায়।

হরপ্পা ও মহেঞ্জোদারোর কথা নিশ্চয়ই অনেকে শুনেছেন। ১৯২০ র দশকে এই সাইটগুলোতে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়, এই দুটি সাইট প্রায় গড়পড়তা ২৫০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পুরোনো। এখানে একটি মাউন্ডে প্রায় ৪৪ টি কঙ্কালের অবশেষে পাওয়া যায়, যা থেকে মহেঞ্জোদারোর নাম হয়( মহেঞ্জোদারো= Mound of dead)। এই কঙ্কালগুলো স্টাডি করে সেখান থেকে তথ্য পাওয়া যায় যে কঙ্কালগুলিতে যে পরিমাণ রেডিওঅ্যাকভিটি পাওয়া গেছে তা প্রাকৃতিক তেজস্ক্রিয়তার থেকে প্রায় পঞ্চাশ গুন বেশি, অনেকটা হিরোশিমা নাগাসাকির বিস্ফোরণের সমতুল।(David W Davenport (Italy) in his book published in 1979 "2000 a.C. Distruzione atomica" (Atomic Destruction in 2000 BC)।বিষয় হলো এই প্রাচীন‌ কঙ্কালগুলিকে ঘিরে ট্রিনিটি টেস্ট এ পাওয়া সেই বিশেষ ট্রাইনাইট্রাইটের সন্ধান পাওয়া গেছে যা অত্যন্ত উচ্চ তাপে বালি থেকে রুপান্তরিত হয়ে তৈরি হয়।

মহেঞ্জোদারোর রেডিওঅ্যাকটিভ কঙ্কাল

এখন বিষয় হলো রামায়ন ও মহাভারতে অনেক রকম দৈবী অস্ত্র ও শস্ত্রের কথা রয়েছে, এর মধ্যে সবথেকে কমন হলো ব্রহ্মাস্ত্র। মহাভারতে ও রামায়নে এই অস্ত্রের ব্যবহারের উল্লেখ একাধিকবার ‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌‌রয়েছে। আসুন জেনে নিই অস্ত্র ও শস্ত্রের মধ্যে পার্থক্য কি?

শস্ত্র:- physical weapon যা সবসময় যোদ্ধার সঙ্গী, কোনো ধাতু দিয়ে তৈরি, যেমন তীর ও ধনুক, তরবারি, গদা ইত্যদি। শস্ত্র যে দৈবী হতে পারে না তা নয়, যেমন অর্জুনের গান্ডীব ধনুক বা কর্ণের বিজয় ধনুক, বা রাবনের তরবারি চন্দ্রহাস যা পরমেশ্বর ভগবান শিব তাকে সন্তুষ্ট হয়ে প্রদান‌ করেন।

অস্ত্র:- অস্ত্র হলো celestial weapon বা divine weapon, অর্থাৎ দৈবী অস্ত্র। এই অস্ত্রের চাবিকাঠি হলো মন্ত্রশক্তি। এক একটি অস্ত্রের জন্য এক একটি আলাদা আলাদা মন্ত্র। যেমন ব্রহ্মাস্ত্রের মন্ত্র হলো গায়ত্রী মন্ত্র, কিন্তু এই মন্ত্র তো এখনও জানা রয়েছে, তাহলে এখন এই অস্ত্র আমরা পেতে পারিনা কেন? তার কারণ এই মন্ত্র জানা থাকলেও মন্ত্র পাঠের পদ্ধতি আমাদের জানা নেই।

শব্দ দুরকম হয়, শ্রুত ও অশ্রুত। এই অশ্রুত শব্দতরঙ্গ আমাদের শ্রুতিগোচর হয় না। বেদে শব্দকে বলা হয় 'নাড়া ব্রহ্ম' এবং অশ্রুত শব্দকে বলা হয় 'অনাহত নাড়া'। এই অনাহত নাড়া বা অশ্রুত শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে মন্ত্রপাঠ করলে বায়ুর সবথেকে purest form যাকে ether বলে তাতে তরঙ্গ সৃষ্টি হয়। এটা মন্ত্রপাঠের প্রথম ধাপ। এরপর এইভাবে মন্ত্রের সোজা পাঠ করে সিদ্ধি পেতে হয়। তারপর মন্ত্রের উল্টো পাঠ/reverse reading করে পুনরায় সিদ্ধি পেতে হয়। কিন্তু এই মন্ত্রশক্তিকে অস্ত্ররুপে ব্যবহার করতে গেলে একজন শিক্ষক লাগে, যিনি এই ব্রহ্মাস্ত্র আহ্বানের সঠিক পদ্ধতি শিখিয়ে দেন। মনে রাখবেন, ছাত্র সিদ্ধি অর্জন করতে না পারলে শুধু অস্ত্রবিদ্যা কোনো কাজে আসবে না।

এবার mechanism নিয়ে আলোচনা করা যাক। শব্দ কম্পন তৈরি করে, এই কম্পনের ফলে উৎপন্ন তরঙ্গকে কাজে লাগানো যায়। খুব উচ্চ মাত্রার শব্দে জানালার কাঁচ ভেঙে যায় এটা খুব সহজ পরীক্ষার মাধ্যমেই প্রমাণ করা যায়। এই অস্ত্রবিদ্যার পুরোটাই শব্দের প্রভাবে উৎপন্ন তরঙ্গকে বিভিন্ন ভাবে প্রয়োগ করা এবং প্রকৃতির সংহারক শক্তিগুলোকে ব্যবহার করার শিক্ষা। কুন্ডলিনীর কথা হয়ত শুনেছেন। আমাদের শরীরে যে শক্তিচক্রগুলো রয়েছে তার সবথেকে নীচের চক্রটি হল মূলাধার, সাধনার শুরুতে এই চক্রে শক্তির সঞ্চার হয়। সেই শক্তি সাধনার উচ্চতর স্তরে ক্রমে উপরের চক্রগুলিকে ভেদ করতে করতে এসে জমা হয় সর্বোচ্চ চক্র সহস্র চক্রতে। এখানে এই শক্তির প্রচন্ড বিস্ফোরণে সমস্ত মায়া(illusion) কেটে যায়, ফলে ব্রহ্মজ্ঞান লাভ হয়, একেই বলে 'অহম্ ব্রহ্মস্মি' বা 'আমিই ব্রহ্ম'।‌ এই সর্বোচ্চ চক্রে মন্ত্রশক্তি ধারণ করার পর সেটিকে যেকোনো object এর উপর চালনা করলে তা ব্রহ্মাস্ত্রে পরিণত হতে পারে।

আচ্ছা কল্পনায় ব্রহ্মাস্ত্র দেখতে কিরকম হয়? এরকম, তাই তো….

ভুল, ব্রহ্মাস্ত্র এরকম ও হতে পারে…

দুটো গল্প বলি…..রামায়নে প্রভু শ্রী রাম ইন্দ্রপুত্র জয়ন্তর দিকে একটা ঘাসের টুকরো তাক করে তাতে ব্রহ্মাস্ত্রের মন্ত্র অভিসিক্ত করে ছেড়েছিলেন মা সীতার অপমানের শোধ নেওয়ার জন্য। আবার মহাভারতে অশ্বথ্বামা একটি অনুরুপ ঘাসের টুকরো নিয়ে তাকে মন্ত্রাভিসিক্ত করে উত্তরার গর্ভে প্রক্ষেপ করে।

ভগবান ব্রহ্মার আরো দুটি অস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়…একটি ব্রহ্ম শিরাস্ত্র অন্যটি ব্রহ্মদন্ড অস্ত্র। এগুলো ব্রহ্মাস্ত্রের upgraded version। ব্রহ্মাস্ত্রে ভগবান ব্রহ্মার একটি মস্তক প্রকট হয়, সেখানে ব্রহ্ম শিরাস্ত্রে ভগবান ব্রহ্মার চারটি মস্তক প্রকট হয়, অর্থাৎ ব্রহ্মাস্ত্রের থেকে ব্রহ্ম শিরাস্ত্র চর্তুগুন শক্তিশালী, অর্থাৎ পরমানু ফিশন বম্ব এবং ফিউশন হাইড্রোজেন বম্ব এর মধ্যে যে পার্থক্য । এবার আসি ভগবান ব্রহ্মার সবথেকে শক্তিশালী অস্ত্র ব্রহ্মদন্ড অস্ত্রের প্রসঙ্গে। এই অস্ত্র মূলত একটি ডিফেন্স শিল্ড, অর্থাৎ যেকোনো দৈবী অস্ত্রের বিরুদ্ধে আত্মরক্ষার হাতিয়ার। এই অস্ত্রের offensive প্রয়োগ নীতিবিরুদ্ধ, offensive প্রয়োগে ভগবান ব্রহ্মার পাঁচটি মস্তক প্রকট হয় (এই পঞ্চম মস্তকের শিরচ্ছেদ পরমেশ্বর ভগবান‌ শিব করেছিলেন) যা চোদ্দটি আকাশগঙ্গা অর্থাৎ milky way ধ্বংস করার ক্ষমতা রাখে । পুরানে ঋষি বশিষ্ঠ ও ঋষি বিশ্বামিত্রের মধ্যে এক বিচিত্র যুদ্ধের বর্ণনা রয়েছে, যেখানে ঋষি বিশ্বামিত্র বশিষ্ঠের বিরুদ্ধে একাধিক দৈবী অস্ত্র প্রয়োগ করেন, কিন্তু ঋষি বশিষ্ঠ ব্রহ্মাদন্ড অস্ত্রের প্রয়োগে সমস্ত অস্ত্রকে নিরোধ করেন। ব্যাখ্যা আছে এই অস্ত্রের আহ্বানে সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংস হওয়ার সময় কোনো ধ্বংসাবশেষও পরে থাকবে না।

ভগবান ব্রহ্মার মতোই পরমেশ্বর ভগবান শিবের উপাসনায় কিছু অস্ত্র লাভ করা যায়, যার মধ্যে সবথেকে প্রখ্যাত ও শক্তিশালী অস্ত্র হলো পাশুপাত অস্ত্র। পরমেশ্বর ভগবান শিবের একটি গণের নাম হলো পশুপতিনাথ, পাশুপাত অস্ত্র সেই পশুপতি গণের manifestation। রামায়নে এই অস্ত্র ভগবান রাম এবং অতিমহারথী রাবনপুত্র ইন্দ্রজিৎ এর কাছে ছিল, মহাভারতে একমাত্র অর্জুন ব্যতীত এই অস্ত্রের শিক্ষা অন্য কারো ছিল বলে জানা যায় না। পাশুপাত অস্ত্র কি? পাশুপাত অস্ত্র একটি জ্ঞান, স্বয়ংপরমেশ্বর ভগবান শিব অর্জুনকে বলেছিলেন রণভূমিতে অধর্মী ছাড়াও এমন অনেক শত্রু থাকে যারা ধর্মের পথে থাকে‌। ধর্মানুসারী এমন শত্রুর বিনাশ করতে গেলেই পাশুপাত অস্ত্রের প্রয়োজন হয়। এই অস্ত্র শুধু তীরের মাধ্যমে নয়, নেত্র, শব্দ এবং মনের মাধ্যমেও প্রক্ষেপ করা সম্ভব। আসুন জেনে নিই পাশুপাত অস্ত্র লাভ করার জন্য কোন মন্ত্রে সিদ্ধ হতে হয়……

नमो भगवते महापाशुपताय, अतुलवीर्यपराक्रमाय, त्रिपंचनयनाय, नानारूपाय, नानाप्रहरणोद्यताय, सर्वांगरंक्ताय, मनीसांजनचयप्रख्याय,श्मशानवेतालप्रियाय, सर्वविघ्न- निकृन्तनरताय, सर्वसिद्धिप्रधान, भक्तानुकंपिनेऽसंख्यवक्त्रभुज- पादय, तस्मिन् सिद्धाय, वेतालवित्रासिने, शाकिनी क्षोभजनकाय, व्याधिनिग्रहकारिणे पापभंजनाय, सूर्यसोमाग्निर्नत्राय, विष्णुकवचाय, खड्गवज्रहस्ताय, यमदंडवरुणपाशाय, रुद्रशूलाय,ज्वलज्जिह्वाय, सर्वरोगविद्रावणाय, ग्रहनिग्रहकारिणे दुष्टनाशक्षयकारिणे।

कृष्णपिंगलाय फट्। हुंकारााय फट्। वज्रहस्ताय फट्। शक्तये फट्। दंडाय फट्। यमाय फट्। खड्गाय फट्। निर्गतये फट्। वरुणाय फट्। वज्राय फट्। पाशाय फट्। धवजाय फट्। अंकुशाय फट्। गदय फट्। कुबेराय फट्। त्रिशूलाय फट्। मुद्गाय फट्। चक्राय फट्। पद्माय फट्। नागाय फट्। ईशानाय फट्। खेटकाय फट्। मुंडाय फट्। मुंडाय फट्। कंकालाख्याय फट्। पिबिछकाय फट्। क्षुरिकाय फट्। ब्रह्माय फट्। शक्त्यय फट्। गणाय फट्। सिद्धाय फट्। पिलिपिबछाय फट्। गंधर्वाय फट्। पूर्वाय फट्। दक्षिणाय फट्। वामाय फट्। पश्चिमाय फट्। मंत्राय फट्। शाकिन्य फट्। योगिन्यय फट्। दंडाय फट्। महादंडाय फट्। नमोऽय फट्। शिवाय फट्। ईशानाय फट्। पुरुषाय फट्। आघोराय फट्। सद्योजाताय फट्। हृदयाय फट्। महाय फट्। गरुड़ाय फट्। राक्षसाय फट्। दनवाय फट्। क्षौंनरसिंहाय फट्। त्वष्ट्य फट्। सर्वाय फट्। न: फट्। व: फट्। प: फट्। फ: फट्। भ: फट्। श्री: फट्। पै: फट्। भू: फट्। भुव: फट्। स्व फट्। मह: फट्। जन: फट्। तप: फट्। सत्यं फट्। सर्वलोक फट्। सर्वपाताल फट्। सर्वतत्तव फट्। सर्वप्राण फट्। सर्वनाड़ी फट्। सर्वकारण फट्। सर्वदेव फट्। द्रीं फट्। श्रीं फट्। हूं फट्। स्वां फट्। लां फट्। वैराग्याय फट्। कामाय फट्। क्षेत्रपालाय फट्। हुंकाराय फट्। भास्कराय फट्। चन्द्राय फट्। विघ्नेश्वराय फट्। गौ: गा: फट्। भ्रामय भ्रामय फट्। संतापय संतापय फट्। छादय छादय फट्। उन्मूलय उन्मूलय फट्। त्रासय त्रासय फट्। संजीवय संजीवय फट्। विद्रावय विद्रावय फट्। सर्वदुरितं नाशय नाशय फट्।। (অগ্নি পুরাণ, ৩২২ নং শ্লোক)।

উচ্চারণ….

Om namo Bhagwate Maha Paashupataya Atula-Bala-veerya-Paraakramaaya Tripancha-Nayanaaya Naanaa-Roopaaya Naanaa-Praharno-Dyaataaya Sarvaanga Raktaaya Bhinnaanjana Chaya-Prakhyaaya Shama-Shaan-Vetaalpriyaaya Sarvaa-VighnaNikrantana-Rataaya Sarva-Siddhi-Pradaaya Bhaktaanu-Kampine-Asankhya-Vaktra-Bhuja-paadaaya Tasmin Siddhaaya Vetaal-Vitraasine Shaakini-Chhobha-Jankaaya Vyaadhi-Nigraha-KaarinePaap-Bhanjanaaya Surya-Somaagni-Netraaya Vishnu KavachaayaKhadaga-Vajrahastaaya Yam-Danda-Varun-PaashaayaRudrashoolaaya Jvala-Jihvaaya Sarvarog-Vidraavanaaya Graha-Nigraha-Kaarine Dust-Nagachhaya KaarnineOm Krishna-Pingalaaya Phat , Hoonkaaraastrayaya Phat, VajraHastaaya Phat , Shaktaye Phat, Dandaaya Phat, Yamaaya Phat,Khadagaaya Phat, Nairitaaya Phat, Varunaaya Phat, VajraayaPhat, Paashaaya Phat, Dhvajaaya Phat, Ankushaaya Phat,Gadaaye Phat, Kuberaaye Phat, Trishulaaye Phat, MudgaraayaPhat, Chakraaya Phat, Padmaaya Phat, Naagaastraya Phat,Eshaanaaya Phat, Khetkastraaya Phat, Mundaaya Phat,Mundaastraaya Phat, KanaKaalaastraaya Phat, PichhikaastraayaPhat, Churikaastraaya Phat, Brahmaastraaya Phat,Shaktyastraaya Phat, Ganaastraaya Phat, Siddhaastraaya Phat,Pili-Pichhaastraaya Phat, Gandharvaastraya Phat, PurvaastrayePhat, Dakshinaastraya Phat, Vaamaastraya Phat, PashimaastrayaPhat, Mantraastraaya Phat, Shakinyaastraaya Phat,Yoginyastraaya Phat, Dandaastraya Phat, Mahaa-DandaastraayaPhat, Namoastraaya Phat, Shivaastraaya Phat, Eeshaanaastraya

Phat, Purushaastraaya Phat, Aghoraastraaya Phat,Sadyojaataastraaya Phat, Hridyaastraaya Phat, MahaastraayaPhat, Garudaastraaya Phat, Raakshasaastraaya Phat,Danavaastraaya Phat, Chhau Narsingaastraaya Phat,Tvastastraaya Phat, Sarvaastraaya Phat, Nah Phat, Vah Phat, PahPhat, Fah Phat, Mah Phat, Shreeh Phat, Peh Phat, Bhooh Phat,Bhuvah Phat, Svah Phat, Mah Phat, Janah Phat, Tapah Phat,Satyam Phat, Sarvalok Phat, Sarvapaataal Phat, Sarvatatva Phat,Sarvapraana Phat, Sarvanaadi Phat, Sarvakaaran Phat, SarvadevaPhat, Hreem Phat, Shreem Phat, Doom Phat, Sroom Phat, SvaamPhat, Laam Phat, Vairaagyaaya Phat, Mayaastraaya Phat,Kaamaastraaya Phat, Chhetra-Paalaastraaya Phat,Hoonkaaraastraya Phat, Bhaaskaraastraaya Phat,Chandraastraaya Phat, Vighneshwaraastraaya Phat, Gaum GaamPhat, Strom Straum Phat, Haum hom Phat, BhraamayaBhraamaya Phat, Santaapaya Santaapaya Phat, ChhaadayaChhaadaya Phat, Unmoolaya Unmoolaya Phat, Traasaya TraasayaPhat, Sanjeevaya Sanjeevaya Phat, Vidraavaya Vidraavaya Phat,Sarvaduritam Naashaya Naashaya Phat.

সাবধানবাণী: - এই মন্ত্রে সিদ্ধি পাওয়ার জন্য সাধককে কঠোর তপস্যা করতে হয়…এই মন্ত্রের অসম্পূর্ণ পাঠে সিদ্ধিলাভ তো হয় নাই বরং অতীতের সমস্ত পূণ্য কর্মফল নষ্ট হয়ে যায়।

এই অস্ত্র অমোঘ, এর প্রয়োগ নিজের থেকে উচ্চ বা সম শক্তিশালী যোদ্ধার ওপর প্রয়োগ করাই বাধ্যতামূলক…কোনো নিম্নশক্তি সম্পন্ন যোদ্ধার ওপর প্রয়োগ করা কঠোরভাবে নীতিবিরুদ্ধ।

পরমেশ্বর ভগবান শিবের আরো দুই অস্ত্র হলো রুদ্রাস্ত্র এবং মহেশ্বর অস্ত্র। রুদ্রাস্ত্রের প্রয়োগ ১১ রুদ্রের ক্ষমতা অস্ত্রে সঞ্চারিত হয় ও মহাপ্রলয় ডেকে আনে। মহেশ্বর অস্ত্র পরমেশ্বর ভগবান শিবের তৃতীয় নয়নের শক্তি, এটির প্রয়োগে মহাদেবের তৃতীয় নয়নের শক্তি শত্রুর ওপর প্রয়োগ হয়ে শত্রুর সম্পূর্ণ বিনাশ ঘটায়।

পদ্ম পুরাণে পরমেশ্বর ভগবান শিবের আরেকটি অস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায় যা হল শাম্ভব অস্ত্র। কথিত আছে একবার এক বিশেষ পরিস্থিতিতে গুরু পরশুরামের নির্দেশে ভগবান ইন্দ্রের সাথে যুদ্ধ করতে গিয়ে দাতাবীর কর্ণ এই অস্ত্রের প্রয়োগ করতে উদ্যত হন ইন্দ্রের বজ্রাস্ত্রের প্রত্তুতরে, কিন্তু ইন্দ্র ভুল স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে নেওয়ায় এই অস্ত্রের প্রয়োগ হয় নি শেষপর্যন্ত। এই অস্ত্রের প্রয়োগে মহাদেব নটরাজ রুপে স্বয়ং সয়ম্ভূ হয়ে শত্রুর বিনাশ করেন, এই অস্ত্রের প্রয়োগে সমস্ত সৃষ্টি ধ্বংস হতে পারে।

এবার আসি রক্ষাকর্তা ভগবান বিষ্ণুর প্রসঙ্গে। ভগবান বিষ্ণুর অস্ত্রের মধ্যে সুদর্শন চক্রের পরই সবথেকে শক্তিশালী অস্ত্র নারায়নী অস্ত্র। মহাভারতে এই নারায়নী অস্ত্রের জ্ঞান‌ অশ্বথ্বামার কাছে ছিল, সে এই অস্ত্রের প্রয়োগ করায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সমস্ত পান্ডব সেনাকে সমর্পণ করার নির্দেশ দেন। এই অস্ত্রের প্রয়োগে ১১ রুদ্র, চক্র, গদা তথা অসংখ্য বিধ্বংসী অস্ত্র শত্রুপক্ষের ওপরে নিক্ষিপ্ত হতে থাকে। প্রতিরোধের সাথে সাথে এই অস্ত্রের ধ্বংসলীলাও ক্রমশ বাড়তে থাকে। এই অস্ত্রকে শান্ত করার একমাত্র উপায় সম্পূর্ণ সমর্পণ। আসুন এই অস্ত্রের আহ্বান মন্ত্র জেনে নিই…..

ভগবান‌ বিষ্ণুর আরেক অমোঘ অস্ত্র হলো বৈষ্ণবাস্ত্র…এই অস্ত্রকে আপনি আধুনিক hypersonic re entry ballistic projectiles এর সাথে তুলনা করতে পারেন। আধুনিক মিসাইলের মতো এই অস্ত্রের প্রয়োগ সরাসরি শত্রুর দিকে তাক করে না‌ করে সোজা আকাশের দিকে করাই নিয়ম। এই অস্ত্র সোজা আকাশমুখী হয়ে তারপর শত্রুর দিকে রি ডাইরেক্টেড হয়ে হাইপারসনিক গতিতে ছুটে এসে তার বিনাশ করে দেবে। এই অস্ত্রের বিশিষ্টতা তার গতিতে, শত্রুপক্ষকে কাউন্টার ডিফেন্স করার সময় দেয় না এই দৈবী অস্ত্র।

এবার আসি ভগবান ইন্দ্রের প্রসঙ্গে। ভগবান ইন্দ্রের মূলত তিনটি অস্ত্র আছে…বজ্রাস্ত্রইন্দ্রাস্ত্র এবং বাসবী শক্তি। বজ্র তৈরী হয়েছিল দধিচি মুনীর হাড় থেকে, শ্বেতকেতু নামক দৈত্যের বিনাশের জন্য ভগবান বিষ্ণুর পরামর্শে দধিচী মুনি স্বেচ্ছায় তার দেহদান করেন, তার হাড় দিয়ে এই অস্ত্র তৈরি হয়। বজ্র অত্যন্ত অমোঘ অস্ত্র…এই অস্ত্রের প্রয়োগে প্রচন্ড হাই ভোল্টেজ ইলেক্ট্রিসিটি তৈরি হয় যা শত্রুর সম্পূর্ণ বিনাশ করে দেয়। বজ্রাস্ত্রের প্রয়োগ ভগবান শ্রী রাম করেছিলেন রাক্ষসী তারকার ওপর। ইন্দ্র দেবের দ্বিতীয় অস্ত্র হলো ইন্দ্রাস্ত্র, এই অস্ত্রের প্রয়োগে আকাশ থেকে অসংখ্য বান বর্ষন হতে থাকে, ফলে শত্রুপক্ষের সৈন্যের দ্রুত বিনাশ হয়ে যায়।

ইন্দ্র দেবের তৃতীয় অস্ত্রের নাম হলো বাসবী শক্তি….বাসবী শক্তির বৈশিষ্ট্য হলো একে একবার কোনো শত্রুর নাম করে প্রয়োগ করলে তার বিনাশ হবেই, এতটাই অব্যর্থ এই অস্ত্র। মহাভারতে ভগবান ইন্দ্র এই অস্ত্র প্রদান করেছিলেন কর্ণকে তার কবজ ও কুন্ডল দানের বিনিময়ে। কর্ণ এই অস্ত্র অর্জুনের ওপর প্রয়োগ করার জন্য রেখেছিল, কিন্তু তা ঘটৎকচের ওপর প্রয়োগ করে ফেলে।

একটু রামায়নের প্রসঙ্গে আসি…একটা অস্ত্রের নাম করবো…. গন্ধর্ব অস্ত্র, এই অস্ত্রের প্রয়োগ ভগবান শ্রী রাম রাবনের সেনার ওপর করেছিলেন, মূহুর্তে রাবনের চোদ্দ হাজার সেনার বধ হয়ে যায়। এই অস্ত্র একটা illusion তৈরি করে, চারদিকে নিজের মিত্র শক্তিকেও শত্রু বলে মনে হয়, তাই শত্রুসেনা নিজেদের মধ্যে মারপিট করতে করতেই মারা যায়।

নাগাস্ত্র….এই অস্ত্র দুরকম হয়। নাগাস্ত্রের প্রয়োগে অসংখ্য বিষাক্ত নাগ শত্রুর দিকে ধেয়ে যায়, এবং তীব্র বিষের শত্রুর বিনাশ করে দেয়। এই অস্ত্রকে কাটা যায় গড়ুর অস্ত্রের প্রয়োগে। আরেকটি হলো নাগপাশ অস্ত্র….এই অস্ত্রের প্রয়োগে বিষাক্ত নাগ শত্রুকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে….রামায়নে এই অস্ত্রের প্রয়োগ মেঘনাদ‌ করেছিল শ্রীরাম ও লক্ষনের ওপর।

আগ্নেয়াস্ত্র….এটি একটি অত্যন্ত কমন অস্ত্র যা প্রায় রামায়ন ও মহাভারতের সমস্ত যোদ্ধার কাছেই ছিল। এই অস্ত্রের প্রয়োগে আকাশ থেকে প্রবল আগুনের বর্ষা হতে থাকতো, এই আগুনের মাত্রা ইচ্ছামতো বাড়ানো বা কমানো যেত। মহাভারতে অর্জুনের কাছে এই অস্ত্রের নিয়ন্ত্রনের অদ্ভুত ক্ষমতা ছিল….এই অস্ত্রকে কাটা যায় বরুনাস্ত্র দিয়ে, যা প্রচন্ড অকালবৃষ্টি ও বায়ুর বেগ এনে আগুনকে নিয়ন্ত্রন করে।

পর্বত অস্ত্র…এই অস্ত্রের প্রয়োগে আকাশ থেকে পাথরের বোল্ডার বর্ষন হতে থাকতো। মোহিনী অস্ত্র…এই অস্ত্র মায়াজাল কাটতে সাহায্য করতো, মহাভারতে দাতাবীর কর্ণের কাছে এই অস্ত্র ছিল।

সূর্যাস্ত্র…এই অস্ত্রের প্রয়োগে এক সূর্যের সমান তেজ উৎপন্ন হতো‌ এবং ভয়ানক অগ্নিবর্ষন‌ হতো। এই অস্ত্রের ক্ষমতা আগ্নেয়াস্ত্রের থেকেও বহুগুণ বেশি…কিন্তু এই অস্ত্রের প্রয়োগে প্রকৃতির ওপর ভয়ানক প্রভাব পরতো, মাটির উর্বরতা নষ্ট হয়ে যেত, জলের উৎস শুকিয়ে যেত, সমস্ত প্রাণের উৎস নষ্ট হয়ে যেত।

আরেকটা বিশেষ অস্ত্রের বিবরণ দিয়ে শেষ করি…রামায়নে রাবন যুদ্ধের অন্তিম চরণে তাঁর সমস্ত জ্ঞান ও তপস্যার বল দিয়ে একটি আসুরিক অস্ত্র প্রয়োগ করে। এই অস্ত্রকে কাটার জন্য ভগবান‌ শ্রী রাম এক অদ্ভূত অস্ত্রের সন্ধান করেন…তিনি একটি বানের সন্ধান করে তাতে ব্রহ্মাস্ত্র, ব্রহ্মদন্ড অস্ত্র ও ইন্দ্রাস্ত্র এই তিন দৈবী অস্ত্রের শক্তি সঞ্চালিত করেন। এই অস্ত্রের নাম স্বর্ণরুপী ব্রহ্মাস্ত্র…এই অস্ত্রের ক্ষমতা দেখে ত্রিলোকের সমস্ত দেব দেবী, যক্ষ ও প্রত্যেক জীব আচম্বিত হয়ে উঠেছিল।

এছাড়াও সম্মোহন অস্ত্র, পর্যণ্য অস্ত্র, মানবাস্ত্র ইত্যাদি বহু অস্ত্রের উল্লেখ পাওয়া যায়। মহাভারতের এই অদ্ভূত অস্ত্রসম্ভার আমাদের অবাক করে, মোহিত করে।

সমুদ্রপুত্র রাজা গৌড় গোবিন্দ ও শ্রীহট্ট

  সিলেটের   ‎ গৌড় গোবিন্দ এবং আজকের   ‎ শাহজালাল বিভিন্ন তথ্যপঞ্জী এবং পরবর্তিতে আবিষ্কৃত তাম্রফলক ও শিলালিপি থেকে সিলেটের প্রাচীন ইতিহাস স...

Popular Posts