এই লেখাটি গোঁড়া বৈষ্ণবদের উদ্দেশ্যে লেখা । ইস্কন নামক এক নব্য বৈষ্ণব গোষ্ঠী সবসময় প্রচার করে আসছে যে , দুর্গা নাকি কৃষ্ণের দাসী !! তাদের বলতে চাই -- আপনারা নিজেদের কথা যত সত্য হয় বলুন । কিন্তু অন্যের সম্বন্ধে কথা বলতে গেলে দৃঢ় শাস্ত্র যুক্তি দিয়ে কথা বলবেন । যদি বিচার করতে চান তবে আসুন বিচার করি ।
দুর্গা পূজা বছরে দুই বার হয় । শরৎকালে আর বসন্তকালে । বসন্তকালে হয় বলে এর নাম বাসন্তী পূজা । বৈষ্ণবদের অন্যতম প্রধান শাস্ত্র ব্রহ্মবৈবত্ত পুরাণে আছে --
পুরা স্তুতা সা গোলোকে কৃষ্ণেণ পরমাত্মনা ।
সংপূজ্য মধুমাসে চ প্রীতেন রাসমণ্ডলে ।। ( প্রকৃতি খণ্ড ৬৬/২ ) ।
" পূর্বকালে গোলোকে রাসমণ্ডলে বসন্তকালে পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণ সর্বপ্রথম দুর্গা পূজা করেছেন । দ্বিতীয়বার বিষ্ণু এবং পরে ব্রহ্মা দুর্গা পূজা করেছেন " ।
শরৎকালে অকাল বোধনের মাধ্যমে দুর্গা পূজা করেছেন ভগবান রামচন্দ্র ।
বৈষ্ণবদের সবথেকে প্রধান শাস্ত্র ভাগবত পুরাণে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ তাঁর যোগমায়া শক্তি দুর্গাকে বলছেন -- তুমি পৃথিবীতে নানা নামে পূজিত হবে এবং ভক্তগণ তোমাকে নানা পূজা সামগ্রীর দ্বারা তোমার আরাধনা করবে । ( ভাগবত , ১০/২/ ১০-১২ ) ।
মহাভারতের যুদ্ধের পূর্বে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দুর্গা স্তব করতে আদেশ করে । ( মহাভারত , ভীষ্মপর্ব , ২৩/ ৪-১৬ ) ।
পরম বৈষ্ণব শ্রীজীব গোস্বামী ভাগবতের ব্যাখ্যায় বলেছেন --
যঃ কৃষ্ণ সৈব দুর্গা স্যাৎ
যা দুর্গা কৃষ্ণ এব সঃ ।। ( শ্রী জীব গোস্বামী , ব্রহ্ম সংহিতা -টীকা -ধৃত গৌতমীয় কল্পবচন )
অর্থাৎ , যে কৃষ্ণ , সেই দুর্গা । যে দুর্গা , সেই কৃষ্ণ ।। উহারা অভিন্ন । শক্তিমান ও শক্তি যেমন অভিন্ন , সেই ভাবেই , কৃষ্ণ ও দুর্গা এক ও অভিন্ন ।
তিনি আরও বলেছেন --
অতঃ স্বয়মেব শ্রীকৃষ্ণস্বরূপ শক্তিরুপেন দুর্গানাম --- অর্থাৎ , শক্তিরূপিণী দুর্গার নামই স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণস্বরূপ ।।
অথচ আজ কি আমাদের বৈষ্ণব সমাজ দুর্গা পূজা করে ? হয়তো অনেকেই করে । তারা বলেন -- দুর্গা নাকি কৃষ্ণের দাসী !!! আপনি জানেন কি -- স্বয়ং নিত্যানন্দ প্রভুর বাড়িতে আজও জাঁকজমকের সহিত দুর্গা পুজা হয় ।।
স্বয়ং মহাপ্রভু মা দুর্গার রুপ ধরে ভক্তদের দর্শন দিয়েছেন । ( চৈতন্য ভাগবত , ১৮ অধ্যায় ) ।
----দুর্গারুপী গৌরহরি স্তব----
জননী আবেশ বুজিলেন সর্বজনে ।
সেইরূপে সভে স্তুতি পড়ে , প্রভু শুনে ।।
জয় জয় জগত জননী , মহামায়া
দুঃখিত জীবেরে দেহ চরণের ছায়া ।।
জয় জয় অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড কোটীশ্বরী
তুমি যুগে যুগে ধর্ম রাখ অবতরি ।।
ব্রহ্মা , বিষ্ণু , শিবে তোমার মহিমা
বলিতে না পারে অন্যে কে দিবেক সীমা ।।
জগত স্বরূপা তুমি , তুমি সর্ব শক্তি
তুমি শ্রদ্ধা , দয়া , লজ্জা , তুমি বিষ্ণু ভক্তি ।।
যত বিদ্যা সকল তোমার মূর্তি ভেদ
সর্ব প্রকৃতির শক্তি তুমি কহে বেদ ।।
নিখিল ব্রহ্মাণ্ড গনের সর্ব মাতা
কে তোমার স্বরূপ কহিতে পারে কথা ।।
তুমি ত্রিজগৎ হেতু গুনত্রয়ময়ি
ব্রম্মাদি তোমারে নাহি জানে , এই কহি ।।
সব্বাশ্রয়া তুমি সর্ব জীবের বসতি
তুমি আদ্যা অবিকারা পরমা প্রকৃতি ।।
জগত জননী তুমি দ্বিতীয়া রহিতা
মহী রুপে তুমি সর্ব জীব পাল মাতা ।।
জল রুপে তুমি সর্ব জীবের জীবন
তোমা স্মরিলে খণ্ডে অশেষ বন্ধন ।।
সাধুজন গৃহে তুমি লক্ষ্মী মূর্তিমতী
অসাধুর ঘরে তুমি কালরুপাকৃতি ।।
তুমি সে করাহ ত্রিজগতে সৃষ্টি স্থিতি
তোমা না ভজিলে পায় ত্রিবিধ দুর্গতি ।।
তুমি শ্রদ্ধা বৈষ্ণবের সর্বত্র উদয়া
রাখহ জননী দিয়া চরণের ছায়া ।।
তোমার মায়ায় মগ্ন সকল সংসার
তুমি না রাখিলে মাতা কে রাখিবে আর ।।
সবার উদ্ধার লাগি তোমার প্রকাশ
দুঃখিত জীবের মাতা কর নিজ দাস ।।
ব্রহ্মাদির বন্দ্য তুমি সর্বভূত বুদ্ধি
তোমা স্মরিলে সর্ব মন্ত্রাদির শুদ্ধি ।।
এইমত স্তুতি করে সকল মহান্ত
বর মুখ মহাপ্রভু শুনয়ে নিতান্ত ।। ( চৈতন্য ভাগবত , ১৮ অধ্যায় )।
প্রখ্যাত বৈষ্ণব আচার্য শিরোমণি ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী তাঁর জগত জননী কালী মাতা তত্ত্বে বলেছেন ---
যঃ গৌর সৈব কালী স্যাৎ
যা কালী গৌর এব সঃ ।।
অর্থাৎ -- যে গৌরাঙ্গ সেই কালী , যে কালী সেই গৌরাঙ্গ ।।
আবার , শাস্ত্রে আছে -- কলৌ কৃষ্ণ কলৌ কৃষ্ণা জাগ্রত পন্নগী --- কলিকালে কৃষ্ণ এবং কালী জাগ্রত । কালীর বীজমন্ত্র ক্রীং এবং কৃষ্ণের বীজমন্ত্র ক্লীং । উভয় বীজমন্ত্রের অর্থ একই ।
ঋক বেদের দশম মণ্ডলের ১২৫ নং সূক্তটি দেবী সূক্ত । সেখানে স্পষ্ট মহাশক্তির কথা উল্লেখ রয়েছে ।
বেদে মা দুর্গার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে -- দুর্গাং দেবীং শরণম অহং প্রপদ্যে । ( ঋক বেদ ৪/২/১২) ।
ঋকবেদের ৪/২/৩ মন্ত্রে কালী মাতার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে । সেখানে কালী কে স্বয়ং ভগবতী বলা হয়েছে ।
অথর্ববেদের মুণ্ডক উপনিষদে কালী মাতার উল্লেখ রয়েছে ।
সামবেদের কেন উপনিষদে উমা / পার্বতীর কথা উল্লেখ রয়েছে ।
সুতরাং কোন যুক্তিতে আপনারা দুর্গা পূজার বিপক্ষে বলেন ।
স্বয়ং বিচার করুন । আমরা কোন পথে আছি ???
পুরা স্তুতা সা গোলোকে কৃষ্ণেণ পরমাত্মনা ।
সংপূজ্য মধুমাসে চ প্রীতেন রাসমণ্ডলে ।। ( প্রকৃতি খণ্ড ৬৬/২ ) ।
" পূর্বকালে গোলোকে রাসমণ্ডলে বসন্তকালে পরমাত্মা শ্রীকৃষ্ণ সর্বপ্রথম দুর্গা পূজা করেছেন । দ্বিতীয়বার বিষ্ণু এবং পরে ব্রহ্মা দুর্গা পূজা করেছেন " ।
শরৎকালে অকাল বোধনের মাধ্যমে দুর্গা পূজা করেছেন ভগবান রামচন্দ্র ।
বৈষ্ণবদের সবথেকে প্রধান শাস্ত্র ভাগবত পুরাণে স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণ তাঁর যোগমায়া শক্তি দুর্গাকে বলছেন -- তুমি পৃথিবীতে নানা নামে পূজিত হবে এবং ভক্তগণ তোমাকে নানা পূজা সামগ্রীর দ্বারা তোমার আরাধনা করবে । ( ভাগবত , ১০/২/ ১০-১২ ) ।
মহাভারতের যুদ্ধের পূর্বে স্বয়ং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ অর্জুনকে দুর্গা স্তব করতে আদেশ করে । ( মহাভারত , ভীষ্মপর্ব , ২৩/ ৪-১৬ ) ।
পরম বৈষ্ণব শ্রীজীব গোস্বামী ভাগবতের ব্যাখ্যায় বলেছেন --
যঃ কৃষ্ণ সৈব দুর্গা স্যাৎ
যা দুর্গা কৃষ্ণ এব সঃ ।। ( শ্রী জীব গোস্বামী , ব্রহ্ম সংহিতা -টীকা -ধৃত গৌতমীয় কল্পবচন )
অর্থাৎ , যে কৃষ্ণ , সেই দুর্গা । যে দুর্গা , সেই কৃষ্ণ ।। উহারা অভিন্ন । শক্তিমান ও শক্তি যেমন অভিন্ন , সেই ভাবেই , কৃষ্ণ ও দুর্গা এক ও অভিন্ন ।
তিনি আরও বলেছেন --
অতঃ স্বয়মেব শ্রীকৃষ্ণস্বরূপ শক্তিরুপেন দুর্গানাম --- অর্থাৎ , শক্তিরূপিণী দুর্গার নামই স্বয়ং শ্রীকৃষ্ণস্বরূপ ।।
অথচ আজ কি আমাদের বৈষ্ণব সমাজ দুর্গা পূজা করে ? হয়তো অনেকেই করে । তারা বলেন -- দুর্গা নাকি কৃষ্ণের দাসী !!! আপনি জানেন কি -- স্বয়ং নিত্যানন্দ প্রভুর বাড়িতে আজও জাঁকজমকের সহিত দুর্গা পুজা হয় ।।
স্বয়ং মহাপ্রভু মা দুর্গার রুপ ধরে ভক্তদের দর্শন দিয়েছেন । ( চৈতন্য ভাগবত , ১৮ অধ্যায় ) ।
----দুর্গারুপী গৌরহরি স্তব----
জননী আবেশ বুজিলেন সর্বজনে ।
সেইরূপে সভে স্তুতি পড়ে , প্রভু শুনে ।।
জয় জয় জগত জননী , মহামায়া
দুঃখিত জীবেরে দেহ চরণের ছায়া ।।
জয় জয় অনন্ত ব্রহ্মাণ্ড কোটীশ্বরী
তুমি যুগে যুগে ধর্ম রাখ অবতরি ।।
ব্রহ্মা , বিষ্ণু , শিবে তোমার মহিমা
বলিতে না পারে অন্যে কে দিবেক সীমা ।।
জগত স্বরূপা তুমি , তুমি সর্ব শক্তি
তুমি শ্রদ্ধা , দয়া , লজ্জা , তুমি বিষ্ণু ভক্তি ।।
যত বিদ্যা সকল তোমার মূর্তি ভেদ
সর্ব প্রকৃতির শক্তি তুমি কহে বেদ ।।
নিখিল ব্রহ্মাণ্ড গনের সর্ব মাতা
কে তোমার স্বরূপ কহিতে পারে কথা ।।
তুমি ত্রিজগৎ হেতু গুনত্রয়ময়ি
ব্রম্মাদি তোমারে নাহি জানে , এই কহি ।।
সব্বাশ্রয়া তুমি সর্ব জীবের বসতি
তুমি আদ্যা অবিকারা পরমা প্রকৃতি ।।
জগত জননী তুমি দ্বিতীয়া রহিতা
মহী রুপে তুমি সর্ব জীব পাল মাতা ।।
জল রুপে তুমি সর্ব জীবের জীবন
তোমা স্মরিলে খণ্ডে অশেষ বন্ধন ।।
সাধুজন গৃহে তুমি লক্ষ্মী মূর্তিমতী
অসাধুর ঘরে তুমি কালরুপাকৃতি ।।
তুমি সে করাহ ত্রিজগতে সৃষ্টি স্থিতি
তোমা না ভজিলে পায় ত্রিবিধ দুর্গতি ।।
তুমি শ্রদ্ধা বৈষ্ণবের সর্বত্র উদয়া
রাখহ জননী দিয়া চরণের ছায়া ।।
তোমার মায়ায় মগ্ন সকল সংসার
তুমি না রাখিলে মাতা কে রাখিবে আর ।।
সবার উদ্ধার লাগি তোমার প্রকাশ
দুঃখিত জীবের মাতা কর নিজ দাস ।।
ব্রহ্মাদির বন্দ্য তুমি সর্বভূত বুদ্ধি
তোমা স্মরিলে সর্ব মন্ত্রাদির শুদ্ধি ।।
এইমত স্তুতি করে সকল মহান্ত
বর মুখ মহাপ্রভু শুনয়ে নিতান্ত ।। ( চৈতন্য ভাগবত , ১৮ অধ্যায় )।
প্রখ্যাত বৈষ্ণব আচার্য শিরোমণি ডঃ মহানামব্রত ব্রহ্মচারী তাঁর জগত জননী কালী মাতা তত্ত্বে বলেছেন ---
যঃ গৌর সৈব কালী স্যাৎ
যা কালী গৌর এব সঃ ।।
অর্থাৎ -- যে গৌরাঙ্গ সেই কালী , যে কালী সেই গৌরাঙ্গ ।।
আবার , শাস্ত্রে আছে -- কলৌ কৃষ্ণ কলৌ কৃষ্ণা জাগ্রত পন্নগী --- কলিকালে কৃষ্ণ এবং কালী জাগ্রত । কালীর বীজমন্ত্র ক্রীং এবং কৃষ্ণের বীজমন্ত্র ক্লীং । উভয় বীজমন্ত্রের অর্থ একই ।
ঋক বেদের দশম মণ্ডলের ১২৫ নং সূক্তটি দেবী সূক্ত । সেখানে স্পষ্ট মহাশক্তির কথা উল্লেখ রয়েছে ।
বেদে মা দুর্গার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে -- দুর্গাং দেবীং শরণম অহং প্রপদ্যে । ( ঋক বেদ ৪/২/১২) ।
ঋকবেদের ৪/২/৩ মন্ত্রে কালী মাতার স্পষ্ট উল্লেখ রয়েছে । সেখানে কালী কে স্বয়ং ভগবতী বলা হয়েছে ।
অথর্ববেদের মুণ্ডক উপনিষদে কালী মাতার উল্লেখ রয়েছে ।
সামবেদের কেন উপনিষদে উমা / পার্বতীর কথা উল্লেখ রয়েছে ।
সুতরাং কোন যুক্তিতে আপনারা দুর্গা পূজার বিপক্ষে বলেন ।
স্বয়ং বিচার করুন । আমরা কোন পথে আছি ???