আগেই বলে নিচ্ছি গুরু ছাড়া এই সাধনা ভুলেও করতে যাবেন না। যোগ্য যোগগুরু ছাড়া এই অভ্যাস কখনই করা
উচিৎ নয়, চোখের ক্ষতি হতে পারে।
উচিৎ নয়, চোখের ক্ষতি হতে পারে।
আত্মচেতনার পর্যালোচনা বিশাল পরিসরে করা যায়। দেশ ও জাতি ভেদে আত্মচেতনা সবারই এক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটাই সত্য। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষে আত্মচেতনা অন্য ক্ষেত্রে নানা রকম হয়ে থাকে। প্রতিটি মন ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করতে পারে। কারণ মনের জগতে বাক স্বাধীনতা রুখতে পারে এমন ক্ষমতাসীন কেউ বসে নেই।
এই যে ধরুন, একজন নগণ্য মানুষ (অবস্থান ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে) নানা রকম ভাবনা-চিন্তা করতে পারে। সেও একটা পরিবারের প্রধান হতে পারে। সেই পরিবারকে সে নিজের রাষ্ট্র মনে করতে পারে। নিজের কথা পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতি চাপিয়ে দিতে পারে। এটা তার স্বৈরাচারি মনোভাব। আবার পরিবারের সব সদস্যের মতামত নিয়েই যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই নিজস্ব জগত সবার ক্ষেত্রে একইভাবে প্রয়োগ করা যায়। এক্ষেত্রে পৃথিবীর ধনীর দুলালরাও আলাদা নয়।
যে ব্যক্তি একবেলা খাবার জোগাড় করতে পারে না, সে চিন্তা করে ধনী মানুষের সহানুভূতি সে পাচ্ছে না। এজন্য টাকার অহং নিয়ে যারা আশপাশে বসবাস করে তাদের সে দেখতে পারে না। আবার যারা প্রতিবেলায় প্রচুর খাবার নষ্ট করে কিংবা তাদের কুকুর ডলির খবারে যে খরচ হয় তার হিসাব তারা কষে না। পাশেই এক ব্যক্তির একবেলা খাবার জোটে না তা তার মনোজগতে আঘাত করে না।
হাজার হাজার টাকা খরচ করে যারা প্রতিদিন মাতাল হওয়ার জন্য বারে যায়, যাদের এই পন্থায় টাকা খরচ না করলে রাতের ঘুমটুকু হয় না, তাদের আত্মচেতনাও সেরকম। তারা মনে করে মিডিয়ার কোন সুন্দরীর সঙ্গে রাত কাটালে রাতের সময়টা মূল্যবান হবে, কিভাবে কোন কৌশলে কাজ করলে আরো ৫টা সুন্দরী পরের সপ্তাহে কাছে পাওয়া যাবে-এসব তাদেরই ভাবনা। আত্মচেতনা তাদের এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কারণ তারা বিশাল সম্পদশালী কিংবা বিশাল ক্ষমতাশালীদের কাছের বা হৃদয়ের লোক।
জীবন যাপনের এই ভিন্নতা মানুষকে কাছে টেনে নেয়, আবার মানুষকে দূরেও ঠেলে দেয়। এরমধ্যে মৃত্যু বাসা বাধে ক্ষণে ক্ষণে। অভিনয়স্থল ঠিকই থাকে, অভিনেতারা নতুন হয়। আত্মচেতনার জগতটা ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলাতে থাকে। এসবের পেছনে ক্ষমতাশালী মানুষেরাই সম্পদশালী মানুষেরাই অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
তবে মন মানবিকতা হারিয়ে ফেললে তা সমাজের সুখকে কেড়ে নেয়। মানবিকতার অভাবেই আজকের যুবক তরুণ সমাজ আনন্দ খোজে বিলাসবহুল শপিংমলে। সৃজনশীলতা তাদের টানে না। তাদের কাছ থেকে অপর আত্মা সুখ পায় না। তারা প্রতিনিয়ত অপরকে অবহেলা করে চলে। চেতনার এই যে টানাপোড়েন তা বড়ই বিচিত্র। এজন্যই সাম্য দরকার। যার গান গেয়েছেন মহামানবগণ।
'আত্মচেতনা' হল সেই শক্তি যা নিজে নিজেই কাজ করে চলে। একে ইংরেজীতে (Instinctive Mind) বলা হয়। এই আত্মচেতনা কোন কিছুর বিচার করে না বা সিদ্ধান্তও নেয় না। কিন্তু প্রথম থেকেই এটি সহজবু্দ্ধিতে কাজ করে যায়। কেউ অসুস্থ হলে এটি তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। যদি আপনি ভীত হন ও হৃৎপিণ্ড দ্রুত লয়ে চলছে এমন হয় তবে এটি হৃৎপিণ্ডের গতিকে ধীর করবে। এটি সবসময় সাধককে ভাল রাখার ও সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে।
'আত্মচেতনা' সাধকের মানসিক শক্তির স্রোত। যখন সাধকের কোন বিপদের আশঙ্কা আসে তখন সে তার আভাস পূর্ব থেকেই দিয়ে দেয়। কখনো কখনো আত্মচেতনা শক্তি তার অতীন্দ্রিয় দৃষ্টির দ্বারা ভবিষ্যৎ- এর বিপদ সম্পর্কে, তা শারীরিক হোক বা মানসিক, সাধককে হুঁশিয়ার করে দেয়।
কোন কাজ করার আগে সেই কাজ সাধকের দ্বারা হবে কিনা সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলে তখনই আত্মচেতনা শক্তি দ্বারা সে কাজ সহজেই সম্পন্ন করা যাবে। কিন্তু যদি সাধক উক্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে পারার ব্যাপারে সন্দিহান হন তবে ঐ শক্তি কিন্তু কাজ করবে না।
যে কোনও প্রকার কঠিন ও আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে সকল সময়ই সুপ্ত অবস্থায় আছে কিন্তু আমরা তাকে জাগাবার চেষ্টাই করি না। সম্মোহিত অবস্থায় কিন্তু সম্মোহনকর্তা আমাদের সেই লুকানো শক্তিকে সজাগ করে অনেক আপাত কঠিন কাজ আমাদের কে দিয়ে করিয়ে নেন। সে কারণে আমাদের জানতে হবে যে সজ্ঞান অবস্থায় আমরা কি ভাবে আমাদের ঐ সুপ্ত শক্তিকে জাগিয়ে তাকে দিয়ে ইচ্ছানুসারে কাজ করাতে পারব।
সম্মোহিত অবস্থায় থাককালীন সমস্ত ইন্দ্রিয়ই অসাধারণ কাজ করে দেখাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কোন অঙ্গের পীড়াও একদম ঠিক হয়ে যেতে পারে। এইভাবে দর্শনেন্দ্রিয়, স্বাদেন্দ্রিয়, ঘ্রাণেন্দ্রিয় শক্তি এত অধিক শক্তিশালী করা যায় যে --- যে কোন প্রকার সুক্ষ্ম পার্থক্যও বুঝতে অসুবিধা হয় না। এমন কি এর দ্বারা জলের পরিবর্তনও বুঝতে পারা যায় অতি সহজে। অতীতের কোন স্মৃতিও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়। এতএব যে মানসিক শক্তি মানুষকে মানুষ্যোত্তর শক্তি প্রদান করে তা মানুষের মধ্যে পূর্ব থেকেই থাকে, কিন্তু মানুষের চেতন শক্তি/মন তা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়।
একথা ঠিক নয় যে যেকোন অদ্ভুত বা চমৎকার কাজ শুধুমাত্র সম্মোহিত অবস্থাতে সফল হবে এমন কোন কথা নেই। জাগরিত অবস্থাতেও এমন করা সম্ভব। শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে বহু রোগ দূর করা যায়। কোন বাড়ি বা হাসপাতালে আগুন লাগলে সেখানে বছর বছর ধরে পড়ে থাকে প্যারালাইসিস রোগী (চলৎশক্তিহীন) দৌড়ে বাইরে চলে আসে। এটি আত্মচেতনা জাগরিত হবার উদাহরণ মাত্র। মানুষ তার চেতন মনে দৈনিক জীবনের সমস্যার বিষয়ে আবশ্যক সতর্কতা বজায় রখে তবে এরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু বিপদকালে সেই সীমাবদ্ধতার গণ্ডী আত্মচেতনার জাগণের সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে অতিক্রম করে যায়। ফলে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব কাজকে মানুষ সম্ভব করতে পারে। যে ব্যক্তির 'আত্মচেতনা' জাগরিত হয়েছে সে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা লাভ করে। কোন বিষয়ে যদি বিশেষ চেষ্টা নেওয়া যায় এবং তা যদি অত্যন্ত গভীর হয় তবে অবশ্যই সফলতা পাওয়া যায়। প্রত্যেক ব্যক্তির মনোবৈজ্ঞানিক ব্যবহার তার কোন কাজে সফলতা লাভের ক্ষমতার উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। মানুষ তার ব্যক্তিত্বের বিকাশে যতই সচেষ্ট হবে ততই তার মানসিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটবে।
অবচেতন মনে শুধুমাত্র ব্যক্তির জ্ঞান এবং অনুভব শক্তিই নেই, তাতে আছে চেতনমন দ্বারা সঞ্চিত বিশাল ভাণ্ডার। মানুষের অধিকারে যে জ্ঞান ও অনুভব শক্তি আছে তা তার চেতনমন দ্বারা অর্জিত। অন্য ব্যক্তি দ্বারা সম্মোহনের সাহায্যে ও নিজ ত্রাটক বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে এই ভাণ্ডারের বিষমতাকে দূর করা যায়।
মানুষ তার প্রতিভার দ্বারা অদ্ভুত মানসিক কাজ করে দেখাতে পারে। তবে এজন্য তাকে মনোবৈজ্ঞানিক বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে যা মানুষের 'আত্মচেতনা'-কে বেঁধে রাখে। যদি মানুষ তার লক্ষ্য নির্ধারিত করে নেয় তখন সে তার 'আত্মচেতনা'-কে ঠিক সেরূপই জাগরিত করে নিতে পারে যেমনটা সম্মোহিত অবস্থায় হয়। কারণ প্রতিটি ব্যক্তি সম্মোহিত অবস্থায় অবচেতনমনের দ্বারা যে সব কাজ করতে পারে তা সে জাগরিত অবস্থাতেও করতে পারে, সে ক্ষমতা ও তার মধ্যে আছে। যখন এই ক্ষমতা মানুষ পাবে তখন কোন কাজই তার কাছে অসম্ভব বলে মনে হবে না। যদি সে এই ব্যাপারে আংশিক সফলতাও পায় তবু তার স্থান সাধারণ মানুষের থেকে উঁচু স্থানে থাকবে। আত্মচেতনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষ তার সাহায্যে অনেক অসম্ভব কাজকে সম্ভব করতে পারে। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন মানুষ তার আত্মচেতনাশক্তিকে অবচেতন বা চেতন মনের অন্তনিহিত প্রভাব থেকে মুক্ত করতে পারবে।
পুরো নিষ্ঠার সঙ্গে স্বাভাবিক ও সহজ ভাবে নিজের 'আত্মচেতন' শক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রতিদিন নিয়ম মতো চেষ্টা করতে হবে। যখনই তা সম্ভব হতে শুরু করবে তখনই সব দিয়ে আরো অধিক সফলতা মিলতে শুরু করবে। এই ভাবে আত্মচেতনার উপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ যত বাড়তে থাকবে ততই মানুষ অসম্ভব কাজ অনায়াসে করতে পারবে।
যেমন অভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক দেহচর্চার দ্বারা মাংসপেশী সবল হয় তেমনি মানুষের মানসিক শক্তির বিকাশও সম্ভব হয়। এর জন্য মানুষ তার প্রত্যেক ভাবনা ও ইচ্ছাকে নিজের অধীনে রাখবে এবং 'আত্মচেতনা' শক্তি দ্বারা তা বাস্তবায়িত করবে। এর ফলে কোথাও কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। এই ভাবে মানুষ নিজের চারিপাশে অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করতে পারে। আসলে 'আত্মচেতনা' হলে সেই শক্তি যা মানবকে মহামানবে পরিণত করে।
এই যে ধরুন, একজন নগণ্য মানুষ (অবস্থান ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে) নানা রকম ভাবনা-চিন্তা করতে পারে। সেও একটা পরিবারের প্রধান হতে পারে। সেই পরিবারকে সে নিজের রাষ্ট্র মনে করতে পারে। নিজের কথা পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতি চাপিয়ে দিতে পারে। এটা তার স্বৈরাচারি মনোভাব। আবার পরিবারের সব সদস্যের মতামত নিয়েই যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই নিজস্ব জগত সবার ক্ষেত্রে একইভাবে প্রয়োগ করা যায়। এক্ষেত্রে পৃথিবীর ধনীর দুলালরাও আলাদা নয়।
যে ব্যক্তি একবেলা খাবার জোগাড় করতে পারে না, সে চিন্তা করে ধনী মানুষের সহানুভূতি সে পাচ্ছে না। এজন্য টাকার অহং নিয়ে যারা আশপাশে বসবাস করে তাদের সে দেখতে পারে না। আবার যারা প্রতিবেলায় প্রচুর খাবার নষ্ট করে কিংবা তাদের কুকুর ডলির খবারে যে খরচ হয় তার হিসাব তারা কষে না। পাশেই এক ব্যক্তির একবেলা খাবার জোটে না তা তার মনোজগতে আঘাত করে না।
হাজার হাজার টাকা খরচ করে যারা প্রতিদিন মাতাল হওয়ার জন্য বারে যায়, যাদের এই পন্থায় টাকা খরচ না করলে রাতের ঘুমটুকু হয় না, তাদের আত্মচেতনাও সেরকম। তারা মনে করে মিডিয়ার কোন সুন্দরীর সঙ্গে রাত কাটালে রাতের সময়টা মূল্যবান হবে, কিভাবে কোন কৌশলে কাজ করলে আরো ৫টা সুন্দরী পরের সপ্তাহে কাছে পাওয়া যাবে-এসব তাদেরই ভাবনা। আত্মচেতনা তাদের এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কারণ তারা বিশাল সম্পদশালী কিংবা বিশাল ক্ষমতাশালীদের কাছের বা হৃদয়ের লোক।
জীবন যাপনের এই ভিন্নতা মানুষকে কাছে টেনে নেয়, আবার মানুষকে দূরেও ঠেলে দেয়। এরমধ্যে মৃত্যু বাসা বাধে ক্ষণে ক্ষণে। অভিনয়স্থল ঠিকই থাকে, অভিনেতারা নতুন হয়। আত্মচেতনার জগতটা ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলাতে থাকে। এসবের পেছনে ক্ষমতাশালী মানুষেরাই সম্পদশালী মানুষেরাই অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
তবে মন মানবিকতা হারিয়ে ফেললে তা সমাজের সুখকে কেড়ে নেয়। মানবিকতার অভাবেই আজকের যুবক তরুণ সমাজ আনন্দ খোজে বিলাসবহুল শপিংমলে। সৃজনশীলতা তাদের টানে না। তাদের কাছ থেকে অপর আত্মা সুখ পায় না। তারা প্রতিনিয়ত অপরকে অবহেলা করে চলে। চেতনার এই যে টানাপোড়েন তা বড়ই বিচিত্র। এজন্যই সাম্য দরকার। যার গান গেয়েছেন মহামানবগণ।
'আত্মচেতনা' হল সেই শক্তি যা নিজে নিজেই কাজ করে চলে। একে ইংরেজীতে (Instinctive Mind) বলা হয়। এই আত্মচেতনা কোন কিছুর বিচার করে না বা সিদ্ধান্তও নেয় না। কিন্তু প্রথম থেকেই এটি সহজবু্দ্ধিতে কাজ করে যায়। কেউ অসুস্থ হলে এটি তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। যদি আপনি ভীত হন ও হৃৎপিণ্ড দ্রুত লয়ে চলছে এমন হয় তবে এটি হৃৎপিণ্ডের গতিকে ধীর করবে। এটি সবসময় সাধককে ভাল রাখার ও সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে।
'আত্মচেতনা' সাধকের মানসিক শক্তির স্রোত। যখন সাধকের কোন বিপদের আশঙ্কা আসে তখন সে তার আভাস পূর্ব থেকেই দিয়ে দেয়। কখনো কখনো আত্মচেতনা শক্তি তার অতীন্দ্রিয় দৃষ্টির দ্বারা ভবিষ্যৎ- এর বিপদ সম্পর্কে, তা শারীরিক হোক বা মানসিক, সাধককে হুঁশিয়ার করে দেয়।
কোন কাজ করার আগে সেই কাজ সাধকের দ্বারা হবে কিনা সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলে তখনই আত্মচেতনা শক্তি দ্বারা সে কাজ সহজেই সম্পন্ন করা যাবে। কিন্তু যদি সাধক উক্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে পারার ব্যাপারে সন্দিহান হন তবে ঐ শক্তি কিন্তু কাজ করবে না।
যে কোনও প্রকার কঠিন ও আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে সকল সময়ই সুপ্ত অবস্থায় আছে কিন্তু আমরা তাকে জাগাবার চেষ্টাই করি না। সম্মোহিত অবস্থায় কিন্তু সম্মোহনকর্তা আমাদের সেই লুকানো শক্তিকে সজাগ করে অনেক আপাত কঠিন কাজ আমাদের কে দিয়ে করিয়ে নেন। সে কারণে আমাদের জানতে হবে যে সজ্ঞান অবস্থায় আমরা কি ভাবে আমাদের ঐ সুপ্ত শক্তিকে জাগিয়ে তাকে দিয়ে ইচ্ছানুসারে কাজ করাতে পারব।
সম্মোহিত অবস্থায় থাককালীন সমস্ত ইন্দ্রিয়ই অসাধারণ কাজ করে দেখাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কোন অঙ্গের পীড়াও একদম ঠিক হয়ে যেতে পারে। এইভাবে দর্শনেন্দ্রিয়, স্বাদেন্দ্রিয়, ঘ্রাণেন্দ্রিয় শক্তি এত অধিক শক্তিশালী করা যায় যে --- যে কোন প্রকার সুক্ষ্ম পার্থক্যও বুঝতে অসুবিধা হয় না। এমন কি এর দ্বারা জলের পরিবর্তনও বুঝতে পারা যায় অতি সহজে। অতীতের কোন স্মৃতিও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়। এতএব যে মানসিক শক্তি মানুষকে মানুষ্যোত্তর শক্তি প্রদান করে তা মানুষের মধ্যে পূর্ব থেকেই থাকে, কিন্তু মানুষের চেতন শক্তি/মন তা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়।
একথা ঠিক নয় যে যেকোন অদ্ভুত বা চমৎকার কাজ শুধুমাত্র সম্মোহিত অবস্থাতে সফল হবে এমন কোন কথা নেই। জাগরিত অবস্থাতেও এমন করা সম্ভব। শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে বহু রোগ দূর করা যায়। কোন বাড়ি বা হাসপাতালে আগুন লাগলে সেখানে বছর বছর ধরে পড়ে থাকে প্যারালাইসিস রোগী (চলৎশক্তিহীন) দৌড়ে বাইরে চলে আসে। এটি আত্মচেতনা জাগরিত হবার উদাহরণ মাত্র। মানুষ তার চেতন মনে দৈনিক জীবনের সমস্যার বিষয়ে আবশ্যক সতর্কতা বজায় রখে তবে এরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু বিপদকালে সেই সীমাবদ্ধতার গণ্ডী আত্মচেতনার জাগণের সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে অতিক্রম করে যায়। ফলে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব কাজকে মানুষ সম্ভব করতে পারে। যে ব্যক্তির 'আত্মচেতনা' জাগরিত হয়েছে সে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা লাভ করে। কোন বিষয়ে যদি বিশেষ চেষ্টা নেওয়া যায় এবং তা যদি অত্যন্ত গভীর হয় তবে অবশ্যই সফলতা পাওয়া যায়। প্রত্যেক ব্যক্তির মনোবৈজ্ঞানিক ব্যবহার তার কোন কাজে সফলতা লাভের ক্ষমতার উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। মানুষ তার ব্যক্তিত্বের বিকাশে যতই সচেষ্ট হবে ততই তার মানসিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটবে।
অবচেতন মনে শুধুমাত্র ব্যক্তির জ্ঞান এবং অনুভব শক্তিই নেই, তাতে আছে চেতনমন দ্বারা সঞ্চিত বিশাল ভাণ্ডার। মানুষের অধিকারে যে জ্ঞান ও অনুভব শক্তি আছে তা তার চেতনমন দ্বারা অর্জিত। অন্য ব্যক্তি দ্বারা সম্মোহনের সাহায্যে ও নিজ ত্রাটক বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে এই ভাণ্ডারের বিষমতাকে দূর করা যায়।
মানুষ তার প্রতিভার দ্বারা অদ্ভুত মানসিক কাজ করে দেখাতে পারে। তবে এজন্য তাকে মনোবৈজ্ঞানিক বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে যা মানুষের 'আত্মচেতনা'-কে বেঁধে রাখে। যদি মানুষ তার লক্ষ্য নির্ধারিত করে নেয় তখন সে তার 'আত্মচেতনা'-কে ঠিক সেরূপই জাগরিত করে নিতে পারে যেমনটা সম্মোহিত অবস্থায় হয়। কারণ প্রতিটি ব্যক্তি সম্মোহিত অবস্থায় অবচেতনমনের দ্বারা যে সব কাজ করতে পারে তা সে জাগরিত অবস্থাতেও করতে পারে, সে ক্ষমতা ও তার মধ্যে আছে। যখন এই ক্ষমতা মানুষ পাবে তখন কোন কাজই তার কাছে অসম্ভব বলে মনে হবে না। যদি সে এই ব্যাপারে আংশিক সফলতাও পায় তবু তার স্থান সাধারণ মানুষের থেকে উঁচু স্থানে থাকবে। আত্মচেতনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষ তার সাহায্যে অনেক অসম্ভব কাজকে সম্ভব করতে পারে। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন মানুষ তার আত্মচেতনাশক্তিকে অবচেতন বা চেতন মনের অন্তনিহিত প্রভাব থেকে মুক্ত করতে পারবে।
পুরো নিষ্ঠার সঙ্গে স্বাভাবিক ও সহজ ভাবে নিজের 'আত্মচেতন' শক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রতিদিন নিয়ম মতো চেষ্টা করতে হবে। যখনই তা সম্ভব হতে শুরু করবে তখনই সব দিয়ে আরো অধিক সফলতা মিলতে শুরু করবে। এই ভাবে আত্মচেতনার উপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ যত বাড়তে থাকবে ততই মানুষ অসম্ভব কাজ অনায়াসে করতে পারবে।
যেমন অভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক দেহচর্চার দ্বারা মাংসপেশী সবল হয় তেমনি মানুষের মানসিক শক্তির বিকাশও সম্ভব হয়। এর জন্য মানুষ তার প্রত্যেক ভাবনা ও ইচ্ছাকে নিজের অধীনে রাখবে এবং 'আত্মচেতনা' শক্তি দ্বারা তা বাস্তবায়িত করবে। এর ফলে কোথাও কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। এই ভাবে মানুষ নিজের চারিপাশে অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করতে পারে। আসলে 'আত্মচেতনা' হলে সেই শক্তি যা মানবকে মহামানবে পরিণত করে।
বিভিন্ন আসন বা ব্যায়াম অভ্যাসে শরীরের বিভিন্ন উন্নতি সাধন হলেও ত্রাটক অভ্যাসের মাধ্যমে চোখের দৃষ্টি যতোটা বৃদ্ধি করা সম্ভব তা অন্য কোন পদ্ধতির দ্বারা সম্ভব নয়। চোখ হচ্ছে দেহের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের শ্রেষ্ঠ ইন্দ্রিয়। তাই ত্রাটক অভ্যাসের সময় চোখের উপর বা চোখের সূক্ষ্ম স্নায়ুমণ্ডলী এবং মাংসপেশীর উপর যেন কোন রকম চাপ না পড়ে সেদিকে অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত।
পদ্ধতি
---------
যে কোন ধ্যানাসনে বসে প্রথমে মনটাকে সুস্থির করুন। এবার সামনের পরিষ্কার দেয়ালে একটি কালো বিন্দু কিংবা মোমবাতির আলোর সামনে বসে এক নিবিষ্টে তাকিয়ে থাকুন। কিছু সময় পর চোখ দিয়ে অল্প অল্প জল বেরিয়ে আসতে পারে। এজন্যে চিন্তার কোন কারণ নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, আশপাশ থেকে অন্য কোন আলো যাতে বেশি পরিমাণে চোখের উপর এসে না পড়ে। এভাবে নির্দিষ্ট দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৪/৫ মিনিট তাকিয়ে থাকার অভ্যাস করুন।
কিছুদিন এই প্রক্রিয়ায় অভ্যাসের পর যে কোন ধ্যানাসনে বসে শরীর সুস্থির রেখে এবার শুধুমাত্র চোখের মণি’কে ধীরে ধীরে একবার ডানদিকে, পরে বামদিকে এবং একবার উপর দিকে, পরে নিচের দিকে নিতে থাকুন। তবে একদিক থেকে অপর দিকে যাবার সময় চোখের মণি’কে সামনের দিকে স্বাভাবিক অবস্থায় অল্প কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এভাবে প্রতিটি দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার চোখের মণি ঘুরানোর অভ্যাস করুন।
আরো কিছুদিন এরকম অভ্যাসের পর এবার চোখের মণি একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে কক-ওয়াইজ ঘুরিয়ে এবপর আবার উল্টোদিকে একবার এন্টি কক-ওয়াইজ ঘোরাতে থাকুন। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার এই প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
যা-ই করুন, কিছুতেই যেন মাত্রাধিক্য না হয়। পরিমাণে কম সংখ্যকবার করা যেতে পারে, কিন্তু বেশি বার করা মোটেও উচিত হবে না। এভাবে অভ্যাসের পর হাতের তালু দিয়ে চোখের উপর হালকা মালিশ করে নিন।
---------
যে কোন ধ্যানাসনে বসে প্রথমে মনটাকে সুস্থির করুন। এবার সামনের পরিষ্কার দেয়ালে একটি কালো বিন্দু কিংবা মোমবাতির আলোর সামনে বসে এক নিবিষ্টে তাকিয়ে থাকুন। কিছু সময় পর চোখ দিয়ে অল্প অল্প জল বেরিয়ে আসতে পারে। এজন্যে চিন্তার কোন কারণ নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, আশপাশ থেকে অন্য কোন আলো যাতে বেশি পরিমাণে চোখের উপর এসে না পড়ে। এভাবে নির্দিষ্ট দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৪/৫ মিনিট তাকিয়ে থাকার অভ্যাস করুন।
কিছুদিন এই প্রক্রিয়ায় অভ্যাসের পর যে কোন ধ্যানাসনে বসে শরীর সুস্থির রেখে এবার শুধুমাত্র চোখের মণি’কে ধীরে ধীরে একবার ডানদিকে, পরে বামদিকে এবং একবার উপর দিকে, পরে নিচের দিকে নিতে থাকুন। তবে একদিক থেকে অপর দিকে যাবার সময় চোখের মণি’কে সামনের দিকে স্বাভাবিক অবস্থায় অল্প কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এভাবে প্রতিটি দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার চোখের মণি ঘুরানোর অভ্যাস করুন।
আরো কিছুদিন এরকম অভ্যাসের পর এবার চোখের মণি একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে কক-ওয়াইজ ঘুরিয়ে এবপর আবার উল্টোদিকে একবার এন্টি কক-ওয়াইজ ঘোরাতে থাকুন। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার এই প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
যা-ই করুন, কিছুতেই যেন মাত্রাধিক্য না হয়। পরিমাণে কম সংখ্যকবার করা যেতে পারে, কিন্তু বেশি বার করা মোটেও উচিত হবে না। এভাবে অভ্যাসের পর হাতের তালু দিয়ে চোখের উপর হালকা মালিশ করে নিন।
উপকারিতা
-----------------
এই ত্রাটক অভ্যাসে চোখের অনেক রোগ সেরে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কোন আবেগীয় কারণ ছাড়াই যাদের চোখ দিয়ে জল পড়ে কিংবা ঘুম থেকে উঠার পর চোখে যন্ত্রণা হয়, তাদের জন্য ত্রাটক অভ্যাস বিশেষ ফলদায়ক।
-----------------
এই ত্রাটক অভ্যাসে চোখের অনেক রোগ সেরে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কোন আবেগীয় কারণ ছাড়াই যাদের চোখ দিয়ে জল পড়ে কিংবা ঘুম থেকে উঠার পর চোখে যন্ত্রণা হয়, তাদের জন্য ত্রাটক অভ্যাস বিশেষ ফলদায়ক।