Thursday, April 14, 2022

অদ্বৈতবাদ খন্ডনের নামে বাতুলতার জবাব।

 অনলাইন দুনিয়ায় নতুন কিছু মাথামোটার আবির্ভাব হয়েছে যারা সনাতন ধর্মের হাজার হাজার বছরের অদ্বৈত পরম্পরার উপরে প্রশ্ন রেখে নিজেদের ব্যাবসা ফুলিয়ে তুলছে। আমাদের মাঝে বিভেদের যে দেয়াল তাঁর সূত্রপাত হয় এই এদের হাত ধরেই। যবন, ম্লেচ্ছরা ভারতবর্ষে আসার পরেও এদের এই বিভেদের দেয়াল দীর্ঘায়িত করা থামে নাই। যেমন বলা যায় কয়দিন আগেও ইস্কনের এক তথাকথিত সদস্য উনাদেরই আচার্য্যের বানী মুখ ফসকে বলে ফেলেছেন। 


নিম্ন সেই ভিডিওটি 


শুধু তাই নয় এই নির্লজ্জ অহিন্দু ইস্কনের ব্যাক্তিকে অনলাইনে ইস্কনেরই কিছু সদস্য নির্লজ্জ ভাবে সমর্থন দিচ্ছে এবং এর যাবতীয় দোষ ঢাকার ব্যর্থ প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে। 

এদের মতনই আরেক বিভেদবাদী হল দয়ানন্দ সরস্বতীর আর্য সমাজ। এদের অনেক সদস্যই অদ্বৈতবাদের বেসিক না জেনেই একে খন্ডাতে এসে হোঁচট খেয়েছে। এদের একজনের বাতুলতার প্রশ্নে আজকের এই লেখা। 

মুল পোষ্টের লিঙ্ক নিম্নে ( https://www.xn--45baaj2aiao5xbdb.com/2020/12/blog-post_18.html?m=1) 


এবার আমাদের উত্তরের পালা। অনেক বড় এবং শাস্ত্রীয় অনেক ট্যাকনিকাল ভাষা ব্যাবহার করা হয়েছে তাই ধৈর্য্য ধরে জিজ্ঞাসু চোখকে পড়ার অনুরোধ রইলো।  

চলুন শুরু করা যাক।  


দাবী

স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী অমর গ্রন্থ সত্যার্থ প্রকাশে বলেছেন 


জীব ও ব্রহ্মের একতা এবং জগৎ মিথ্যা ইত্যাদিরূপ যে শঙ্করাচার্য্যের মত ছিল তাহা উৎকৃষ্ট মত নহে,তবে যদি শঙ্করাচার্য্য জৈনমত কন্ডনের নিমিত্ত উক্ত মত স্বীকার করিয়া থাকেন তবে অপেক্ষাকৃত ভাল। নবীব বেদান্তীদিগের মতে জগৎ স্বপ্নবৎ,রজ্জুতে সর্প,শুক্তিকায় রজত,মৃগতৃষ্ণিকায় জল,গন্ধর্ব্ব নগর এবং ইন্দ্রজালের সদৃশ এই সংসার মিথ্যা এবং এক ব্রহ্মই সত্য। বাস্তবে নবীন বেদদন্তীগন রজ্জুকে বস্তু এবং সর্পকে অবস্তু মনে করিয়া এই ভ্রমজালে পতিত হইয়াছে। প্রশ্ন আসে সর্প কি বস্তু নহে..? যদি বল রজ্জুতে উহা নাই, তবে দেশান্তরে আছে উহার সংস্কার তোমার হৃদয়ে আছে" অতএব সর্প ও আর অবস্তু রহিলনা । এইরূপ স্থানুতে পুরুষ এবং সুক্তিকায় রজত ইত্যাদির; ব্যবস্থা বুঝিয়া লইতে হইবে। স্বপ্নাবস্থায়ও যাহার ভান (জ্ঞান) হয়, তাহা দেশান্তরে আছে এবং তাহার সংস্কার মনেও (আত্মাতেও) আছে। সুতরাং স্বপ্ন ও বস্তুতে অবস্তুর আরোপণের তুল্য নহে। অত্বৈত্যবাদী দের মতে রজ্জুতে সর্প তিন কালেই নাই অথচ অন্ধকার এবং অল্প প্রকাশের সংযোগে অকস্মাৎ রজ্জুর দর্শন হইলে সর্পভ্রম উপস্থিত হইয়া ভীতিবশতঃ কম্প উপস্থিত হয়। পরে যখন দীপাদি দ্বারা দেখা যায় তখন উক্ত ভয় এবং ভ্রম নিবৃত্ত হইয়া যায়; তদ্রূপ ব্রহ্মে জগতের মিথ্যা প্রতীতি হইয়াছে। ব্রহ্মের সাক্ষাৎকার হইলেই জগতের নিবৃত্তি এবং ব্রহ্মের প্রতীতি হইয়া যায়, যে রূপ সর্পের নিবৃত্তি 


এবং রজ্জুর প্রতীতি হইয়া থাকে। 


উত্তরঃ


এত মাত্রাতিরিক্ত বানানে ভুলে লেখা প্রশ্ন কি তা বুঝতেই মগজ থেকে রক্ত বের হচ্ছে।ধরে নিলাম এখানে তার প্রশ্ন নাই বা থাকলেও সেটা হচ্ছে সত্য বস্তুরই ভ্রম হয় এই। সেরকম কিছু হলে

তিনকালে যা একরূপ থাকে তাই সত্য। বস্তু শব্দে এই আত্মাকে বোঝায়।ব্যবহারিক সত্তা প্রতীত হলেও এদের কালত্রয়ব্যাপী একরূপতা নাই বলে মিথ্যা,অবস্তু। উপমার ক্ষেত্রে রজ্জু ও সর্প উভয়েই ব্যবহারিক সত্তা।একটিকে অপরটি বলে ভুল হয়। এই একের রজ্জুর সত্যজ্ঞান নাহলে সাদৃশ্যবশত অপরের আরোপ হয়।এই অধ্যারোপ দাষ্টার্ন্তিক থেকে বুঝতে পারি সচ্চিদানন্দ ব্রহ্মে অর্থাৎ বস্তুতে,অজ্ঞানাদি সকল জড়বস্তুর আরোপ।জড়পদার্থাদির তিনকালে একরূপতা নাই বলে অবস্তু।

তাছাড়া আরোপ হতে গেলে যে পূর্বের সত্যবস্তু থাকতেই হবে,এমন কোন নিয়মও নাই। কারণ সংশয় বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে বস্তুশূন্য ভ্রমও হয়।মানুষ ভাবে হায়রে আগেও এভাবের ভুল হয়েছিল  এটা স্থাণু না পুরুষ ধ্যাৎ এখনো সেই ভুল হলো। এভাবে বস্তুশূন্য ভ্রম পরম্পরায় অধ্যারোপ হয়।সুতরাং ব্রহ্মে জগদভ্রমের ক্ষেত্রে পূর্বের সত্য জগতের অস্তিত্ব ধরতে হবে এমত টেকে না। কারণ অসত্য জগতের ভ্রমসংস্কারবশত পরবর্তী কালের দৃষ্ট জগৎকে সত্য বলে ভুল হয়।

এছাড়া মনে রাখতে হবে ব্রহ্মে অজ্ঞানের আরোপকে আমরা অনাদি বলেছি।ব্রহ্মে অজ্ঞানের আরোপ হল কারণ নিরপেক্ষ ও অনাদি।আরো মনে রাখা উচিত অধ্যারোপ প্রসঙ্গে সর্বত্র অধিকসত্তাক বস্তুতে  ন্যূনসত্তাক বস্তুর আরোপ হয়। যেমন রজ্জু সর্পের তুলনায় রজ্জুর সত্তা অধিক,কারণ যখন এটা সর্প নয়,রজ্জু এমন জ্ঞান হয় তখন পূর্বক্ষণে থাকা সর্পজ্ঞান বাধিত হয়ে যায়। তেমনি সংসার দশায় রজ্জুর জ্ঞান বাধিত হয় না রজ্জুসর্পের তুলনায় রজ্জু অধিকসত্তাক এবং রজ্জুর তুলনায় ব্রহ্ম অধিকসত্তাক। অতএব ব্রহ্মে রজ্জু অধ্যস্ত এবং রজ্জুতে সর্প অধ্যস্ত। দেখা যাচ্ছে—প্রাতিভাসিক সদ্বস্তু ব্যবহারিক সদ্বস্তুতে আর ব্যবহারিক সদ্বস্ত পারমার্থিক সদ্বস্তুতে আরোপিত হচ্ছে। বেদান্তের মতে আমরা জানি যে, ব্রহ্ম পারমার্থিক সৎ, জগৎপ্রপঞ্চ ব্যাবহারিক সৎ এবং স্বাপ্ন প্রপঞ্চ প্রাতিভাসিক সৎ।


এবার আরো কিছু বিষয়ে বলি জগৎ সমস্ত কিছু পারমার্থিক সত্য হয়।তাহলে বন্ধনও পারমার্থিক সত্য!অনেকে অদ্বৈতবেদান্তবিরোধী আচার্যের মতে পারমার্থিক হলেও নিবৃত্ত হয়।কিন্তু ভুলে যায় পারমার্থিক সত্য তাকেই বলে যে কোনো কালে কোনপ্রকারেই কারোর বাপের হেডম নাই তাকে নিবৃত্ত করার যেমন ব্রহ্মবস্তু। তার ভিন্ন সমস্ত জগৎ ও জাগতিক বন্ধন ও দুঃখাদি,যাদের অস্তিত্ব সত্য বলে প্রতিভাত হয় এবং যারা নিবৃত্ত হয় তারা লৌকিক পারমার্থিক বা ব্যবহারিক। যেসমস্ত মিঞ্চারা এই প্রকার অঙ্গীকার না করলে জগৎ এবং বন্ধন ও সুখদুঃখাদি জাগতিক পদার্থসকল পরমার্থসত্য ব্রহ্মবস্তুর সাথে সমসত্তাযুক্ত হয়ে পড়বে,ফলে তাদের বাধ বা নিবৃত্তি সম্ভব হবে না।কারণ সমসত্তাযুক্ত পারমার্থিক সত্য ব্রহ্মবস্তুর নিত্যতা এবং তার সমসত্তাযুক্ত পারমার্থিক সত্য জগৎ ও সত্য বন্ধনের অনিত্যতা অঙ্গীকারে "অর্দ্ধজরতীয়ন্যায়" প্রসক্ত হয়ে পড়বে। সেই অদ্ভুত বানানে ভুলে ভরা ব্লগারকে হয় " অর্দ্ধজরতীয়ন্যায়" অঙ্গীকার করতে হবে,অথবা জগৎ ও বন্ধনাদি জাগতিক পদার্থের "লৌকিক পারমার্থিকত্ব" স্বীকার করতে হবে। অন্য উপায় নাই। ফলে জগৎ ও জাগতিক পদার্থসকলের অপারমার্থিকত্ব,সুতরাং মিথ্যাত্বই বেচারিদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও স্বীকার্য।জ্ঞানের দ্বারা অজ্ঞানই নিবৃত্ত হয় এটাই বস্তুর স্বভাব। পারমার্থিক সত্য বস্তু,যা অজ্ঞানের কার্য্য তা জ্ঞানের দ্বারা কিপ্রকারে নিবৃত্ত হবে? শ্রীভগবানের প্রসাদে নিবৃত্ত হলেও তার সত্যতা ব্যাবহারিক হবে, পারমার্থিক না।


 


দাবী

মিথ্যা থেকে সত্যে পৌঁছানো যায় কিভাবে?এরকম অনেকের প্রশ্ন আসতে পারে



উত্তরঃ 


এখানে ছোট্ট করে সংকেতে উত্তর দিয়ে দিচ্ছি  ব্যাবহারিক জীবনে অনেক সময় মিথ্যা বস্তু-বোধ এবং অসত্য দর্শনকেও সত্য, শুভ ফলের জনক হতে দেখা যায়। দৃষ্টান্ত-স্বরূপে চিৎসুখ বলেন যে, কোনও উজ্জ্বল মণির ভাস্বর জ্যোতিঃপুঞ্জকে মণি-ভ্রম করে যদি কোন ভ্রান্তদর্শী মণি আহরণ করবার উদ্দেশ্যে ধাবিত হয়, তবে, সে সেখানে মণিটি অবশ্যই পাবে, এবং ঐ মণির দ্বারা জীবনে অনেক কাজও করতে পারবে। এখানে কিন্তু সে মণি দেখে মণি আহরণ করবার জন্য প্রবৃত্ত হয় নাই, মণির উজ্জ্বল জ্যোতিকে মণি ভ্রম করে ধাবিত হয়েছে। ভ্রমই যে এখানে তাঁর স্বার্থ-সিদ্ধির অনুকূল হয়েছে, এটা অস্বীকার করবার উপায় নাই। এরূপ আরও অনেক বিভ্রম দেখা যায়, যাহা ভ্রম হলেও ব্যাবহারিক জীবনে তার কার্যকারিতা কোন বুদ্ধিমান ব্যক্তিই অস্বীকার করতে পারেন না। পৃথিবী বস্তুতঃ সচলা হইলেও পৃথিবী অচলা; পৃথিবী ঘোরে না, সূর্য্য পৃথিবীর চতুর্দিকে ঘুরে বেড়াইতেছে, এরূপ অন্ধ বিশ্বাস কত যুগ যুগান্ত ধরে কত মানুষের চিত্তকে অধিকার করে আছে, এবং ঐরূপ মিথ্যা বিশ্বাস-মূলে কত কাজ কত ভাবে মানুষ করে চলেছে। জীবণে গতিপথে তাঁর ঐ মিথ্যা জ্ঞান তাঁকে নানা প্রকারে সাহায্যই করেছে; জীবনের গতিতে কোনরূপ বাধার সৃষ্টি করে নাই। সুতরাং কেমন করে বলব যে, মিথ্যার কোন প্রকার কার্যকারিতা নাই।





দাবী


এখন কয়েকটি বিষয় বিবেচনা করা দরকার যেমন ব্রহ্মে জগতের ভান কাহার হইয়াছে? নিশ্চয় জীবের এবং এই ভান (জ্ঞান) অজ্ঞানতার কারনে হয়। ইহাও বিচার্য অজ্ঞানতা কোথা হইতে হইয়াছে এবং কোথায় রহিয়াছে..? যদি বল অজ্ঞান অনাদি এবং ব্রহ্মে অবস্থান করে তাহলে 

ব্রহ্মে ব্রহ্ম বিষয়ক অজ্ঞান হইল অথবা অন্য কোন বিষয়ের অজ্ঞান হইল এবং ঐ অজ্ঞান কাহার হইল..?

অবিদ্যা কি সর্ব্বব্যাপী সর্ব্বজ্ঞের গুণ, নিশ্চয় নয় তা অল্পজ্ঞের গুণ হওয়া স্বাভাবিক। তাহা হইলে এক অনন্ত সর্ব্বজ্ঞ চেতন ব্যাতিরেকে অন্য কোন চেতন সত্ব্যার প্রমান মেলে। যদি অল্পজ্ঞ চেতন ব্রহ্ম হইতে ভিন্ন বলিয়া বিশ্বাস কর তাহা হইলে সমীচীন হয়। যদি এক স্থানে ব্রহ্মে অপনার স্বরূপ সম্বন্ধীয় অজ্ঞান হয় তাহা হইলে উক্ত অজ্ঞান সর্ব্বত্র বিস্তৃত হইয়া পড়ে। যেরূএ শরীরের (এক স্থানর) বিষ্ফোটকের পীড়া সমস্ত শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গকে আতুর অপটু করিয়া দেয় তদ্রুপ,ব্রহ্ম ও একদেশে অজ্ঞানী এবং ক্লেশযুক্ত হইলে সমস্ত ব্রহ্মই অজ্ঞানী এবং পীড়াভবনুযুক্ত হইয়া পড়ে


উত্তরঃ


এ ব্লগারের লেখা দেখে বুঝলাম ব্যাক্তি অদ্বৈতবাদ নিয়ে যখন ভূমিকা লিখছিল তা না বুঝে কপি পেস্ট মেরে দিয়েছে। নইলে খণ্ডনের বেলায় এরকম আউল ফাউল লেখার কথা না।

একই চৈতন্য মায়াপ্রতিবিম্বে ঈশ্বর,অবিদ্যাপ্রতিবিম্বে জীব। ঈশ্বর মায়াধীশ,জীব মায়ার অধীনে। বেশি না পঞ্চদশী গ্রন্থ খুলে পড়তে পারেন।

এবার বলি এ মহান দ্বিগিজয়ী পণ্ডিত ব্যক্তি ভক্তশ্রেষ্ঠ জগৎগুরু শ্রীরামানুজাচার্যের থেকে কপি পেস্ট মারার চেষ্টা করছে কিন্তু মডিফাই করতে গিয়ে পুরো বর্বাদ করে দিয়েছে  এককথায় লাইন ছাড়া কথাবার্তা হয়ে গেছে,অথবা নিজেই এরকম অদ্ভুত প্রশ্ন করে রেখেছে।কারণ অদ্বৈতবাদকে আঘাত দিতে গিয়ে বিশিষ্টাদ্বৈতাবাদী, ভেদাভেদবাদী পরিণামবাদীদের আঘাত দিয়ে ফেলেছে। গোমূ% হলে যা হয়। 

ব্রহ্ম অবিদ্যার আশ্রয়। যখন ব্রহ্মকে অবিদ্যার আশ্রয় বলা হয়--তখন সেটাও বলা হয় এই অবিদ্যা মিথ্যাবস্তু,সুতরাং তাতে ব্রহ্মের কোন অন্যথাভাব বা অসঙ্গত্বের হানি হয় না।যেটুকু যা বোধ হয়,তাও মিথ্যাই হয়। আর হ্যাঁ ব্রহ্মের সত্তা ও অবিদ্যার সত্তা সমান না।ব্রহ্ম তিনকালেই একরূপে বর্তমান,আর অবিদ্যা বর্তমানকালে মাত্র বর্তমান বলে বোধ হয়,অর্থাৎ তার প্রতীতি হয় বলে তাকে সৎ বলা হয়।কিন্তু ব্রহ্ম সৎ ই।সুতরাং হে মহাপণ্ডিত ব্রহ্মের সাথে অবিদ্যার বিরোধ কোথায়?রজ্জুকে যে সর্প আশ্রয় করে তাতে কি রজ্জুর সাথে বিরোধ হয়?অবিদ্যা যদি ব্রহ্মের ন্যায় সদ্বস্তু হতো,তা হলে আপনার আজাইরা আপত্তি মানা যেত।

এবার বলি জ্ঞান ও অজ্ঞানের বিরোধ তা বৃত্তিজ্ঞানের সম্বন্ধেই অদ্বৈতবাদী বলেন।যেমন ঘটজ্ঞানকালে ঘটবিষয়ক অজ্ঞান থাকে না,অর্থাৎ ঘটাকার বৃত্তিজ্ঞান ঘটবিষয়ক অজ্ঞানের বিরোধী। ব্রহ্ম তদ্রূপ অজ্ঞানের বিরোধী না,কিন্তু ব্রহ্মবিষয়ক বৃত্তিজ্ঞানই সেই ব্রহ্মবিষয়ক অজ্ঞানের বিরোধী। আর এই ঘটবিষয়ক বা ব্রহ্মবিষয়ক জ্ঞানের পূর্বে ঘটবিষয়ক বা ব্রহ্মবিষয়ক অজ্ঞানই থাকে বলে ঘট বা ব্রহ্ম সেই অজ্ঞান দ্বারা আবৃত বা তিরোহিত বলা হয়। 

যেমন রজ্জুবিষয়ক অজ্ঞান রজ্জুকে তিরোহিতই করে রাখে। কিন্তু বস্তুতঃ রজ্জু তিরোহিত না; তদ্রূপ ব্ৰহ্ম কখনই যথার্থরূপে তিরোহিত না। শুদ্ধ ব্রহ্মে অবিদ্যা কোন কালেই নাই। শুধু প্রপঞ্চদর্শনকালে মিথ্যা সম্বন্ধেই অবিদ্যা স্বীকার করা হয়; আর সেজন্যে তার দ্বারা ব্রহ্মের তাদৃশ তিরোধান হবে না কেন? 

ব্রহ্ম অল্পজ্ঞ হয়ে যাবে ব্রহ্মের হেন হবে তেন হবে এভাবে পারমার্থিক,ব্যবহারিক সব গুলিয়ে ফেললে বড় সমস্যা।

ভ্রম কার? আপনার এই প্রশ্ন দেখেই বুঝা যাচ্ছে ব্যবহারিকের সাথে পারমার্থিকের ভালো খিচুড়ী পাকিয়েছেন।

ভ্রম জীবের। ব্যবহারিক দশাতে যত কল্পনা,ভ্রম,সত্তা,ঈশ্বর,জীব ইত্যাদি এসব। পরমার্থে ব্রহ্ম ব্যতীত কিছুই নেই।তাই এত ভয়ের কিছু নেই।

এরপরের যে পীড়ার কথা বলেছেন যারা পরিণামবাদ স্বীকার করে বা অংশাঅংশী স্বীকার করে বা পারমার্থিক অবিদ্যা স্বীকার করে এসব তাদের এসব প্রশ্ন করেন। 

এখন অনেকের মাথায় এ প্রশ্ন আসতে পারে যেমনটি ব্লগারটির মাথায়ও এসেছে


দাবী

যদি বলা হয় ব্রহ্ম,নিজ ব্রহ্মবিষয় অজ্ঞান হইয়া অর্থাৎ আপনার স্বরূপকে আপনিই ভুলিয়া যান তাহলে তাঁহার ভ্রম হইবার নিমিত্ত কারন অবিদ্যা..!!??


সহজ ভাষায় সে প্রশ্নটি এরকম, সেটি হচ্ছে "অবিদ্যাকে যতই তুচ্ছ বলুন, ব্রহ্মে তা মিথ্যাসম্বন্ধে থাকলেও তার সেই মিথ্যাসম্বন্ধই বা কেন?  শুদ্ধব্রহ্মে প্রতীত হল কেন—এই প্রশ্নের উত্তর কি হতে পারে?


উত্তরঃ 


যতক্ষণ প্রতীত ততক্ষণ এই প্রশ্ন। জাগ্রতাবস্থায় যেমন স্বপ্ন বিষয়ে ‘কেন হইল' প্রশ্ন হয় না—এটাও সেরকম ভ্ৰমান্তে যেমন ‘কেন ভ্রম হল' প্রশ্ন হয় না—এটাও সেরকম। অবিদ্যা এই প্রকার স্বভাবাপন্ন। স্বভাবের উপর প্রশ্ন করলে কে কি উত্তর দিবে? অবিদ্যা এই প্রকারই বলে জানতে হবে।


“আচ্ছা, আপনার ঈশ্বর লীলাময় কেন??" —বললে আপনি কি উত্তর দিবেন? প্রশ্ন তো পাগলেও করে। আর তার কি উত্তর আছে?

 ব্রহ্মাশ্রিত অবিদ্যা এই ভাবে সংসার প্রদর্শন করে এবং ব্রহ্মজ্ঞানে তা বিলুপ্ত হয়; তার বীজ ছিল না এবং বিনাশেও কিছু থাকিবে না—এটাই তাহার স্বভাব; এটা এজন্য অনির্বচনীয়। এতাদৃশ অবিদ্যাদ্বারা ব্রহ্ম সবিশেষ কিরূপে হবেন? যেরূপ সত্তা স্বীকার করিয়া ব্রহ্মে এটা‘কেন প্রতীত হল’ জিজ্ঞাসা করছেন, তাতে ব্রহ্মে এটা প্রতীত হয় নাই বলতেও পারা যায়।”


যারা অদ্বৈতবেদান্তী পণ্ডিত তারা এ নিয়ে আরো ভালো বলতে পারবে। শিবের নাম করে যা অল্প জানি তা থেকেই দিলাম ভুলত্রুটির জন্য অগ্রিম ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি।


হর হর মহাদেব

ওঁ নমঃ শিবায়



সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts