Monday, April 29, 2019

সামুদ্রিক শাস্ত্র অথবা জ্যোতিষ শাস্ত্র

ছয়টি বেদাঙ্গের একটি জ্যোতিষ। প্রাচীনকালে জ্যোতিষ অনুসারে শুভ তিথি অনুযায়ী যজ্ঞ করা হত। জ্যোতিঃ অর্থ আলো। বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্র দীপ্তিমান অর্থাৎ এদের জ্যোতি বা আলো রয়েছে। পরবর্তী কালে মানব-জীবনে বিভিন্ন গ্রহ-নক্ষত্রের প্রভাব সম্পর্কে চর্চা শুরু হয় এবং সেই সংক্রান্ত জ্ঞান বা বিদ্যাই জ্যোতিষ বিজ্ঞান বলে পৃথিবীতে পরিচিতি লাভ করে। ভৃগু, পরাশর, জৈমিনি আদি প্রাচীন ঋষিগণকে জ্যোতিষ বিজ্ঞানের প্রবর্তক বলা চলে। তাঁরা জ্যোতিষবিদ্যা বিভিন্ন অঙ্গ বা শাখা-প্রশাখা সৃষ্টি করে গেছেন। তাঁরা উপলব্ধি করেছেন যে, পৃথিবীর নিকটবর্তী নয়টি গ্রহ, বারটি রাশি ও সাতাশটি নক্ষত্র মানুষের জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করে এবং এই প্রভাবই ফলিত জ্যোতিষ বিজ্ঞানের মুখ্য আলোচ্য বিষয়। জাতক ভূমিষ্ঠ হওয়ার সময় এই সব গ্রহ, রাশি ও নক্ষত্রের অবস্থান অনুসারে জাতকের ভাগ্য নিয়ন্ত্রিত হয়। জ্যোতিষ বিজ্ঞান বলে গ্রহগণ নিছক জড় বস্তু নয়। জ্যোতিষ শান্ত্রে গ্রহগণকে দেবতা জ্ঞান করা হয়েছে -- 'গ্রহরূপী জনার্দনঃ'। গ্রহগণ সর্বদা ঘুর্ণায়মান। সনাতনী জ্যোতিষমতে প্রত্যেক মানুষ কোন না কোন গ্রহ দ্বারা প্রভাবিত। গ্রহেরা ঘুরতে ঘুরতে যখন শুভ অবস্থানে থাকে তখন জাতকের শুভ হয় এবং গ্রহগণ যখন অশুভ অবস্থানে থাকে তখন জাতকের অশুভ হয়। নবগ্রহের নাম- ১) রবি, ২) সোম, ৩) মঙ্গল, ৪) বুধ, ৫) বৃহস্পতি, ৬) শুক্র, ৭) শনি, ৮) রাহু ও ৯) কেতু। এই নবগ্রহের মধ্যে সোম, বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্র এই চারটি গ্রহ অধিকাংশ সময় শুভফল প্রদান করে বলে এদেরকে শুভ গ্রহ এবং রবি, মঙ্গল, শনি, রাহু ও কেতু এই পাঁচটি গ্রহ অধিকাংশ সময় অশুভফল প্রদান করে বলে এদেরকে অশুভ গ্রহ বা পাপ গ্রহ বলে। নবগ্রহের রবি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি পুরুষ, চন্দ্র ও শুক্র স্ত্রী এবং বুধ ও শনি ক্লীব বা নপুংসক। রবি একটি রাশিতে ত্রিশ দিন, চন্দ্র সোয়া দুই দিন, মঙ্গল পয়তাল্লিশ দিন, বুধ আঠার দিন, বৃহস্পতি এক বছর, শুক্র আটাশ দিন, শনি আড়াই বছর এবং রাহু-কেতু দেড় বছর অবস্থান করে।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে রবি -- আত্মা, পিতা, রক্ত বর্ণ, কটু (ঝাল) রস, পিত্ত ধাতু, স্বভাব, যশ-খ্যাতি, প্রতিষ্ঠা প্রভৃতির কারক।
চন্দ্র -- মন, মাতা, জল, শুভ্রবর্ণ, লবণ রস, শ্লেষ্মা ধাতু, চঞ্চলতা, চিন্তাশক্তি, সাহিত্য প্রভৃতির কারক।
মঙ্গল -- শক্তি, ভ্রাতৃ, ভূমি, সম্পত্তি, সাহস, পরাক্রম, অগ্নি, লাল বর্ণ, তিক্ত রস, পিত্ত ধাতু প্রভৃতির কারক। 
বুধ -- বুদ্ধি, মাতুল, বাণিজ্য, বাক্-শক্তি, মিশ্র রস, সম ধাতু, হাস্য, শিল্প, সাহিত্য, সবুজ বর্ণ প্রভৃতির কারক।
বৃহস্পতি -- ধর্ম, পুত্র, ধন, জ্ঞান, মিষ্টি রস, কফ ধাতু, হলুদ বর্ণ প্রভৃতির কারক।
শুক্র -- প্রেম, কাম, স্ত্রী, সুখ, অম্ল রস, কফ ধাতু, গীত, কাব্য, শুভ্র বর্ণ প্রভৃতির কারক।
শনি -- দুঃখ, মৃত্যু, বিপদ, কষায় রস, বায়ু ধাতু, অস্ত্র, আধ্যাত্মিকতা, গুপ্তবিদ্যা প্রভৃতির কারক নীল বর্ণ প্রভৃতির কারক।
রাহু -- শত্রু, নিদ্রা, চৌর্য, বিষক্রিয়া, পিতামহ, দ্যুত-ক্রিড়া, বায়ু ধাতু, কাল বর্ণ প্রভৃতির কারক।
কেতু -- মাতামহ, সর্প, দংশন, ক্ষুধা, ধুম্র বর্ণ, ব্রণ ও চর্ম রোগ প্রভৃতির কারক।

সনাতনী জ্যোতিষ বিজ্ঞান বলে গ্রহদের পরস্পরের মধ্যে শত্রুতা ও মিত্রতা রয়েছে। 
  • রবির মিত্র- চন্দ্র, মঙ্গল ও বৃহস্পতি, শত্রু- শুক্র ও শনি এবং সম- বুধ। 
  • চন্দ্রের মিত্র- রবি ও বুধ, শত্রু- নেই এবং সম- মঙ্গল, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি।
  • মঙ্গলের মিত্র- রবি, চন্দ্র ও বৃহস্পতি, শত্রু- বুধ এবং সম- শুক্র ও শনি। 
  • বুধেরমিত্র- রবি ও শুক্র, শত্রু- চন্দ্র এবং সম- শনি, মঙ্গল ও বৃহস্পতি।
  •  বৃহস্পতির মিত্র- রবি, চন্দ্র ও মঙ্গল,শত্রু- বুধ ও শুক্র এবং সম- শনি। 
  • শুক্রের মিত্র- বুধ ও শনি, শত্রু- রবি ও চন্দ্র এবং সম- মঙ্গল ও বৃহস্পতি। 
  • শনির মিত্র- বুধ ও শুক্র, শত্রু- রবি, চন্দ্র ও মঙ্গল এবং সম- বৃহস্পতি। 
  • রাহুর মিত্র- শুক্র ও শনি, শত্রু- রবি, চন্দ্র ও মঙ্গল এবং সম- বুধ ও বৃহস্পতি। 
  • কেতুর মিত্র- রবি ও চন্দ্র, শত্রু- শুক্র ও শনি এবং সম- বুধ ও বৃহস্পতি।
এবার আসুন রাশিদের একটি জেনারেল গুন-দোষ আলোচনা করা যাক। 

  • মেষ রাশির জাতক ভাবপ্রবণ, চঞ্চল, জেদী, ক্রোধী, সামান্য কারণে আনন্দিত বা বিষাদগ্রস্ত, মিষ্টান্নপ্রিয়, ত্যাগী, ধনী, নিজ কর্মে বিশ্বাসী, প্রবল আত্মবোধ ও ইন্দ্রিয়ানুভূতির অধিকারী। 
  •  বৃষ রাশির জাতক স্থুল নেত্রযুক্ত, স্বল্পভাষী, ধীর-স্থীর, ধার্মিক, কুলজনের হিতকারী, তীক্ষ্ণ-বুদ্ধিযুক্ত, অধ্যবসায়ী, পরিশ্রমী, স্থির-প্রতিজ্ঞ, বাস্তববাদী, আধিপত্য বিস্তারকারী ও হিসাবী। 
  • মিথুন রাশির জাতক ধীর-গতিসম্পন্ন, স্পষ্টবাক, পরহিতৈষী, তীক্ষ্ণ-বুদ্ধিযুক্ত, পণ্ডিত, হাস্যযুক্ত, কৌতুকপ্রিয়, আত্ম-প্রশংসাকামী, সমালোচক, গীতবাদ্য অনুরাগী।
  • কর্কট রাশির জাতক চিন্তাশীল, ভাবুক, কল্পনাপ্রবন, উদার, সত্যবাদী, দয়ালু, দেবদ্বিজে ভক্তিপরায়ণ, পণ্ডিত, প্রগতিশীল হলেও পুরাতনপন্থী, দৃঢ়-প্রতীজ্ঞ, ভ্রমণপ্রিয়, আশ্চর্যজনক বিষয়ে আগ্রহশীল, মাতা-পিতার প্রতি ভক্তিপরায়ণ এবং সাহিত্য ও গীতবাদ্যে অনুরাগী।
  • সিংহ রাশির জাতকবিশ্বাসী, ক্রোধী, বন্ধুহীন, উন্নত-বক্ষবিশিষ্ট, খেয়ালী, কর্তৃত্বপ্রিয়, স্বাধীনচেতা, বিলাসী, স্পষ্টবক্তা, অন্যায়ের বিরুদ্ধাচারী, আত্ম-সচেতন ও অমিতব্যয়ী।
  • কন্যা রাশির জাতক ধার্মিক, বালক-স্বভাবযুক্ত, ক্ষমাপরায়ণ, একমনা, তীক্ষ্ণ-বুদ্ধিযুক্ত, সমালোচক, সৎ হলেও ক্ষেত্র বিশেষে কুটিল-স্বভাবযুক্ত, মাতৃভক্ত, সাহিত্য-রসিক এবং রমণীগণের প্রিয়। 
  • তুলা রাশির জাতক কোমল শরীর-বিশিষ্ট, দাতা, বন্ধুবৎসল, সদালাপী, অতিভাষী, দৈব-প্রভাবযুক্ত, বুদ্ধিমান, সামাজিক, ভোগী, বিলাসী, শাস্ত্রজ্ঞ, সঙ্গীতজ্ঞ ও রমণীগণের প্রিয়।
  • বৃশ্চিক রাশির জাতক পণ্ডিত, দৃঢ়মতি, বলশালী, আত্মনির্ভরশীল, কর্মদক্ষ, গম্ভীর, জেদী, ক্রোধী, পরমত অসহিষ্ণু, সর্বদা উদ্বেগযুক্ত ও খলবুদ্ধিসম্পন্ন। 
  • ধনু রাশির জাতক নানা কীর্তিপরায়ণ, কুলগৌরবযুক্ত, বন্ধুলোকের হিতকামী, সূক্ষ্মদৃষ্টিসম্পন্ন, প্রভূত ধন-সম্পদযুক্ত, ধীর গতিসম্পন্ন, ধার্মিক, স্বাধীনচেতা, উচ্চাভিলাসী, কর্তৃত্বপ্রিয়, অহংকারী, ক্ষণক্রোধী, পিতৃধন ত্যাগী, গীতপ্রিয়, মীতব্যয়ী, কখনও ধীর আবার কখনও স্থীর, দ্বিধাভাবগ্রস্ত ও সন্দিগ্ধমনা। 
  •  মকর রাশির জাতক তীক্ষ্ণ-বুদ্ধিযুক্ত, ধীর, আত্মাভিমানী, পরাক্রমযুক্ত, বন্ধুবৎসল, দ্বায়িত্বসম্পন্ন, ভোগবিলাসী, মন্ত্রণা ও বাদানুবাদে দক্ষ, সুনামপ্রিয়, পরদারাসক্ত এবং বাইরে থেকে সহজ-সরল মনে হলেও অমত্মরে কুটিল। 
  • কুম্ভ রাশির জাতক উদ্যমী, একাগ্র চিত্তের অধিকারী, ভাবুক, ধার্মিক, নির্জনতাপ্রিয়, সংস্কারপ্রিয়, জ্ঞাতিবর্গসহ আমোদকারী, পরদারাসক্ত, ধনশালী, গম্ভীর, কুটিল স্বভাবযুক্ত ও নিদ্রাপ্রিয়। 
  • মীন রাশির জাতক ধৈর্যশালী, শামিত্মপ্রিয়, একাগ্র, জ্ঞানী, মানী, আশাবাদী, উদ্ভাবনী শক্তিসম্পন্ন, উদার, ধার্মিক, দ্বিধাভাবগ্রস্ত, স্ত্রী-জয়ী, রমণীপ্রিয়, সাহিত্যরসিক ও ধনেজনে সুখভোগী।
এবার জানা যাক সমুদ্রিক শাস্ত্র মতে জন্ম লগ্ন কি? জন্মের সময় পৃথিবীর নিকটস্থ রাশিকে অর্থাৎ পৃথিবী যে রাশিকে অতিক্রম করছিল সে রাশিকে জন্ম-লগ্ন বলে। এখানে সংক্ষিপ্তাকারে দ্বাদশ প্রকার জন্ম-লগ্নের ফল দেওয়া হল।
  • মেষ লগ্নের জাতক যশস্বী, মানী, পরবৎসল, জ্ঞানী, পরাক্রমশালী, সাহসী, ক্রোধী, কুটচিন্তাশীল, ভোগী ও স্ত্রীপুত্র সুখে সুখী হয়ে থাকে।
  •  বৃষ লগ্নের জাতক গুরুভক্ত, প্রিয়ভাষী, গুণবান, কৃতী, তেজস্বী, সর্বজনপ্রিয়, সুরতক্রিয়া নিপুন, লোভী ও পরস্ত্রীতে অনুরক্ত হয়ে থাকে। 
  •  মিথুন লগ্নের জাতক মান্যগণ্য, যশস্বী, শিক্ষিত, আত্মীয়বৎসল, ত্যাগী, ভোগী, ধনী, কামী, দীর্ঘসূত্রী, সাহিত্যরসিক, সঙ্গীতজ্ঞ, সুবক্তা হয়ে থাকে। 
  •  কর্কট লগ্নের জাতক সর্বজনপ্রিয়, স্বজনপ্রিয়, ধার্মিক, ধনী, ভোগী, পণ্ডিত, ভাষাবিদ, জনসেবক এবং মিষ্টান্ন ও পানীয় দ্রব্যপ্রিয় হয়ে থাকে। 
  •  সিংহ লগ্নের জাতক শত্রুজয়ী, বুদ্ধিমান, উৎসাহী, বলশালী, পরদ্রব্যভোগী, ক্রোধী, স্বল্পপুত্রবিশিষ্ট, জনপ্রিয় ও স্বার্থহীন হয়ে থাকে। 
  •  কন্যা লগ্নের জাতক ধার্মিক, জ্ঞানী, শাস্ত্রজ্ঞ, বিচক্ষণ, অহংকারী, পর্যটক, বক্তা, কামকলাপ্রিয়, সৌভাগ্যশালী ও স্বল্পাহারী হয়ে থাকে।
  •  তুলা লগ্নের জাতক ধীর-স্থির, বহুজনের হিতকারী, বিদ্বান, সৎকর্মে অনুরক্ত, ধনী, মানী, শিল্পকলায় পরিদর্শী ও অল্পভোগী হয়ে থাকে। 
  •  বৃশ্চিক লগ্নের জাতক শৌর্যশালী, বুদ্ধিমান, সৌভাগ্যযুক্ত, ক্রোধী, কামুক, সাহসী, ক্ষুধাতুর, বিবাদকারী ও দুষ্টবুদ্ধিযুক্ত হয়ে থাকে।
  • ধনু লগ্নের জাতক নীতিপরায়ণ, ধার্মিক, শাণিতবাক, বিদ্বান, ধনী, সুখী, জ্ঞানী, বহুলোকের হিতকারী, চাপা-স্বভাব, অহংকারী ও উচ্চাভিলাসী হয়ে থাকে। 
  •  মকর লগ্নের জাতক যশস্বী, ধনী, বহুসন্তানযুক্ত, কপট, কর্মঠ, কষ্টসহিষ্ণু, লোভী, হীনকর্মযুক্ত ও স্বকার্যে তৎপর হয়ে থাকে। 
  •  কুম্ভ লগ্নের জাতক বলশালী, সুখী, বন্ধুযুক্ত, বেদজ্ঞ, সূক্ষ্ম অনুভূতিশীল, তপস্বী, ক্রোধী, চঞ্চল, পরস্ত্রীতে আসক্ত ও নিদ্রালু হয়ে থাকে। 
  •  মীন লগ্নের জাতক অতিশয় জ্ঞানী, দেবতা ও গুরু-পূজক, মানী, ধনী, স্পর্শকাতর, নিঃসঙ্গ জীবনীশক্তিযুক্ত, স্বল্প রোমবিশিষ্ট ও বহুকাল পরীক্ষাকারী হয়ে থাকে।
  •  মিথুন লগ্নের জাতক মান্যগণ্য, যশস্বী, শিক্ষিত, আত্মীয়বৎসল, ত্যাগী, ভোগী, ধনী, কামী, দীর্ঘসূত্রী, সাহিত্যরসিক, সঙ্গীতজ্ঞ, সুবক্তা হয়ে থাকে। 


 জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে নক্ষত্র পরিচয়। মহাকাশে অগণিত নক্ষত্র রয়েছে। তার মধ্যে পৃথিবীর উপর সাতাশটি নক্ষত্রের প্রভাব বিদ্যমান। জ্যোতিষ শাস্ত্রে উল্লিখিত সাতাশটি নক্ষত্রের নাম- ১) অশ্বিনী, 
২) ভরণী, 
৩) কৃত্তিকা, 
৪) রোহিণী,
৫) মৃগশিরা,
৬) আর্দ্রা,
৭) পুনর্বসু,
৮) পুষ্যা,
৯) অশ্লেষা,
১০) মঘা,
১১) পূর্ব-ফাল্গুনী,
১২) উত্তর-ফাল্গুনী,
১৩) হস্তা,
১৪) চিত্রা,
১৫) স্বাতী,
১৬) বিশাখা,
১৭) অনুরাধা,
১৮) জ্যেষ্ঠা,
১৯) মূলা,
২০) পূর্বাষাঢ়া,
২১) উত্তরাষাঢ়া,
২২) শ্রবণা,
২৩) ধনিষ্ঠা,
২৪) শতভিষা,
২৫) পূর্ব-ভাদ্রপদ,
২৬) উত্তর-ভাদ্রপদ ও
২৭) রেবতী।
হিন্দু-পুরাণ মতে এই সাতাশটি নক্ষত্র কোন দীপ্তিমান জড় বস্ত্ত নয়। প্রকৃতক্ষে এই সাতাশটি নক্ষত্র মূলত দক্ষরাজার সাতাশটি কন্যা। চন্দ্র এই সাতাশজন কন্যাকে বিবাহ করেছেন। যা হোক, চন্দ্র পর্যায়ক্রমে একটি রাশিতে আড়াই দিন অবস্থান করেন। চন্দ্র ব্যতীত অন্যান্য গ্রহগণও সাতাশটি নক্ষত্রকে পর্যায়ক্রমে নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে অতিক্রম করেন। নক্ষত্রসমূহকে বিভিন্নভাবে বিভক্ত করা হয়েছে। যেমন ---
উগ্রগণ- পূর্ব-ফাল্গুনী, পূর্বাষাঢ়া, পূর্ব-ভাদ্রপদ, মঘা ও ভরণী নক্ষত্র।
ধ্রুবগণ- উত্তর-ফাল্গুনী, উত্তরাষাঢ়া, উত্তর-ভাদ্রপদ ও রোহিণী নক্ষত্র।
চরগণ- স্বাতী, পুনর্বসু, শ্রবণা, ধনিষ্ঠা ও শতভিষা নক্ষত্র।
ক্ষিপ্রগণ- পুষ্যা, অশ্বিনী ও হস্তা নক্ষত্র।
মৃদুগণ- চিত্রা, অনুরাধা, মৃগশিরা ও রেবতী নক্ষত্র।
তীক্ষ্ণগণ- আর্দ্রা, অশ্লেষা, জ্যেষ্ঠা ও মূলা নক্ষত্র।
মিশ্রগণ-কৃত্তিকা ও বিশাখা।
জ্যোতিষ শাস্ত্র মতে, জন্ম-নক্ষত্র অনুসারে জাতককে বিভিন্ন গ্রহের দশা ভোগ করতে হয়। জ্যোতিষ-শাস্ত্রে দুই প্রকার দশা প্রচলিত, যথা- অষ্টোত্তরী ও বিংশোত্তরী দশা। জাতক কৃষ্ণপক্ষে দিনে ও শুক্লপক্ষে রাতে জন্মগ্রহণ করলে বিংশোত্তরী দশা এবং কৃষ্ণপক্ষে রাতে ও শুক্লপক্ষে দিনে জন্মগ্রহণ করলে অষ্টোত্তরী দশা প্রযোজ্য হবে। অষ্টোত্তরী নিয়মে জাতক রবি (৬ বছর), চন্দ্র (১৫ বছর), মঙ্গল (৮ বছর), বুধ (১৭ বছর), শনি (১০ বছর), বৃহস্পতি (১৯ বছর), রাহু (১২ বছর) ও শুক্র (২১ বছর) এই আটটি গ্রহের দশা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে উক্ত ক্রমে ভোগ করবে। যেমন- কেউ রবির দশায় জন্মগ্রহণ করলে তাকে রবির দশার ভোগ্যকাল শেষে ১৫ বছর চন্দ্রের দশা ভোগ করতে হবে এবং এরপর তাকে ৮ বছর মঙ্গলের দশা ভোগ করতে হবে, এভাবে মৃত্যর পূর্ব পর্যমত্ম তাকে পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন গ্রহের দশা ভোগ করে যেতে হবে।
অষ্টোত্তরী মতে জন্ম-নক্ষত্র কৃত্তিকা, রোহিণী ও মৃগশিরা হলে প্রথমে রবির দশা হবে, আর্দ্রা, পুনর্বসু, পুষ্যা ও অশেস্নষা হলে প্রথমে চন্দ্রের দশা হবে, মঘা, পূর্ব-ফাল্গুনী ও উত্তর-ফাল্গুনী হলে প্রথমে মঙ্গলের দশা হবে, হস্তা, চিত্রা, স্বাতী ও বিশাখা হলে প্রথমে বুধের দশা হবে, অনুরাধা, জ্যেষ্ঠা ও মূলা হলে প্রথমে শনির দশা হবে, পূর্বাষাঢ়া, উত্তরাষাঢ়া, শ্রবণা হলে প্রথমে বৃহস্পতির দশা হবে, ধনিষ্ঠা, শতভিষা ও পূর্ব-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে রাহুর দশা হবে এবং উত্তর-ভাদ্রপদ, রেবতী, অশ্বিনী ও ভরণী হলে প্রথমে শুক্রের দশা হবে।
বিংশোত্তরী মতে, জাতক রবি (৬ বছর), চন্দ্র (১০ বছর), মঙ্গল (৭ বছর), রাহু (১৮ বছর), বৃহস্পতি (১৬ বছর), শনি (১৯ বছর), বুধ (১৭ বছর), কেতু (৭ বছর) ও শুক্র (২০ বছর) এই নয়টি গ্রহের দশা নির্দিষ্ট সময় ব্যবধানে উক্ত ক্রমে ভোগ করবে। কৃত্তিকা, উত্তর-ফাল্গুনী ও উত্তরাষাঢ়া জন্ম-নক্ষত্র হলে প্রথমে রবির দশা হবে, রোহিণী, হসত্মা ও শ্রবণা হলে প্রথমে চন্দ্রের দশা হবে, মৃগশিরা, চিত্রা ও ধনিষ্ঠা হলে প্রথমে মঙ্গলের দশা হবে, আর্দ্রা, স্বাতী ও শতভিষা হলে প্রথমে রাহুর দশা হবে, পুনর্বসু, বিশাখা ও পূর্ব-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে বৃহস্পতির দশা হবে, পুষ্যা, অনুরাধা ও উত্তর-ভাদ্রপদ হলে প্রথমে শনির দশা হবে, অশ্লেষা, জ্যেষ্ঠা ও রেবতী হলে প্রথমে বুধের দশা হবে, মঘা, মূলা ও অশ্বিনী হলে প্রথমে কেতুর দশা হবে এবং পূর্ব-ফাল্গুনী, পূর্বাষাঢ়া ও ভরণী হলে প্রথমে শুক্রের দশা হবে।
এখন অষ্টোত্তরী মতে প্রথম দশার ভোগ্যকাল নির্ণয় প্রসঙ্গে আসা যাক। ধরা যাক, কোন জাতক রোহিণী নক্ষত্রের ৩০ দণ্ডে (১২ ঘণ্টা) জন্মগ্রহণ করেছেন। যেহেতু কৃত্তিকা, রোহিণী ও মৃগশিরা নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করলে জাতকের প্রথমে রবির দশা হয় সেহেতু ঐ জাতক রোহিণী নক্ষত্রে জন্মগ্রহণ করায় তাকে প্রথমে রবির দশা ভোগ করতে হবে। এখন ৩টি নক্ষত্রের জন্য রবির মোট ভোগ্য বছর ৬। তাহলে প্রতিটি নক্ষত্রকে রবি ৬/৩ = ২ বছর করে ভোগ করে। রোহিনী নক্ষত্রের স্থিতিকাল ৬০ দণ্ড (২৪ ঘণ্টা)। বর্তমান নক্ষত্র যে সময় পর্যমত্ম অবস্থান করে তা থেকে পূর্ববর্তী নক্ষত্র যে সময় পর্যন্ত অবস্থান করেছিল তা বিয়োগ করলেই নক্ষত্রে স্থিতিকাল পাওয়া যাবে। যেহেতু ৩০ দণ্ড পর জন্ম হয়েছে সেহেতু সে ৬০ - ৩০ = ৩০ দণ্ড ভোগ করবে। এখন সম্পূর্ণ নক্ষত্র ভোগের জন্য অর্থাৎ ৬০ দণ্ডের জন্য রবির ভোগ্যকাল ২ বছর হলে ৩০ দণ্ডের জন্য রবির ভোগ্যকাল হবে ১ বছর। জন্মের ১ বছর পর রবির ভোগ্যকাল শেষে চন্দ্রের দশা শুরু হবে যা ১০ বছর পর্যন্ত থাকবে। 
বিংশোত্তরী মতে কোন জাতকের জন্ম রোহিনী নক্ষত্রে হলে তাকে প্রথমে চন্দ্রের দশা ভোগ করতে হবে। রোহিনী নক্ষত্রের ২৪ দ-- জন্ম হলে তার নক্ষত্র ভোগ্যকাল হবে ৬০ - ২৪ = ৩৬ দণ্ড। এখন ৬০ দণ্ডের জন্য চন্দ্রের ভোগ্যকাল ১০ বছর হলে ৩৬ দণ্ডের জন্য চন্দ্রের ভোগ্যকাল হবে ৬ বছর। জন্মের ৬ বছর পর চন্দ্রের ভোগ্যকাল শেষে মঙ্গলের দশা শুরু হবে যা ৭ বছর পর্যন্ত থাকবে এবং এভাবে মৃত্যুর পূর্ব পর্যন্ত দশা ভোগ চলতে থাকবে।
জন্ম-রাশি বা জন্ম-লগ্নকে ১ম স্থান ধরে অবশিষ্ট এগারোটি রাশিগুলোকে ২য়, ৩য়, ৪র্থ এই ক্রমে গণনা করে শেষ পর্যমত্ম যে ১২টি স্থান পাওয়া যায় ঐ ১২টি স্থান দ্বারা ১২ প্রকার ভাব ফল নির্ণয় করা হয়। জন্ম-লগ্নের ১ম, ৪র্থ, ৭ম ও ১০ম স্থানকে কেন্দ্র বলে। যেমন মেষ লগ্নের নক্ষত্রে ১ম স্থানে মেষ, ৪র্থ স্থান কর্কট, ৭ম স্থানে তুলা এবং ১০ম স্থানে মকর রয়েছে। সুতরাং ১ম স্থানে, কর্কটের স্থানে, তুলার স্থানে এবং মকরের স্থানে কোন গ্রহ থাকলে তা কেন্দ্রে আছে ধরা হয়। লগ্ন, ৯ম ও ৫ম স্থানকে কোণ বলে এবং ৩য়, ৬ষ্ঠ, ৮ম স্থানকে দুঃস্থান বলে। গ্রহগণ জন্ম-লগ্নের কেন্দ্র ও কোণে বলশালী হয় এবং শুভ ফল প্রদান করে কিন্তুডএূ দুঃস্থানে অশুভ ফল প্রদান করে।
১ম অর্থাৎ জন্ম-লগ্ন ও জন্ম-রাশি থেকে দেহভাব, ৩য় স্থান থেকে ভ্রাতৃভাব, ৪র্থ স্থান থেকে বন্ধুভাব, ৫ম স্থান থেকে পুত্রভাব, ৬ষ্ঠ স্থান থেকে শত্রুভাব, ৭ম স্থান থেকে পতি বা পত্নীভাব, ৮ম স্থান থেকে আয়ু বা নিধনভাব, ৯ম স্থান থেকে ভাগ্য বা ধর্মভাব, ১০ম স্থান থেকে কর্মভাব, ১১শ স্থান থেকে আয়ভাব এবং ১২শ স্থান থেকে ব্যয়ভাব বিচার করা হয়। যেমন- মেষ রাশি বা মেষ লগ্নের ৭ম স্থানে তুলা রাশি অবস্থিত। ৭ম স্থান দ্বারা পতি বা পত্নীযোগ, বিবাহ ও দাম্পত্য-জীবন বিচার করা হয়। এখন মেষ রাশির ৭ম স্থানে অর্থাৎ তুলা রাশিতে যদি শুভ, উচ্চস্থ ও মিত্র গ্রহ অবস্থান করে এবং শুভ গ্রহের দৃষ্টি থাকে তবে ঐ জাতকের পতি বা পত্নী, বিবাহ ও দাম্পত্য-জীবন সুন্দর হবে। এর বিপরীত হলে বিপরীত ফল প্রসব করবে। এভাবে দ্বাদশ স্থানে গ্রহ-নক্ষত্রে অবস্থান অনুসারে দ্বাদশ প্রকার ভাব বিচার করা হয়। দ্বাদশ স্থানের অধিপতি গ্রহের অবস্থান অনুসারেও দ্বাদশ ভাব নির্ণয় করা হয়। যেমন- মেষ রাশির অধিপতি মঙ্গল তাই মঙ্গল হবে লগ্নপতি। মেষ রাশির ২য় স্থানে বৃষ রাশি রয়েছে। বৃষ রাশির অধিপতি শুক্র তাই শুক্র হবে তনুপতি। এই শুক্রের শুভ বা অশুভ দ্বারা তনু বা দেহভাবের শুভাশুভ বিচার করা হয়।
সবশেষে আলোচনা করবো মানুষের হাতের গড়ন নিয়ে। সামুদ্রিক শাস্ত্র মানুষের হাতের গড়ন দেখে তাঁর স্বভাব বলে দেবার অসাধারণ বিদ্যা দান করেছে। 
 
বৃদ্ধাঙ্গুল ছাড়া বাকি চারটে আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা আর কনিষ্ঠা - প্রত্যেকটি একেকটি গ্রহের প্রতিনিধি। এই আঙুলের আকার-প্রকারের বিভিন্নতা মানুষের চরিত্রেও ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
আঙুলের গড়ন দেখে মানুষ চেনার আগে জেনে নিন, কোন আঙুল কোন গ্রহের প্রতিনিধি। তর্জনী - গুরু বা বৃহস্পতি, মধ্যমা - শনি, অনামিকা - রবি বা সূর্য আর কনিষ্ঠা - বুধ গ্রহের প্রতীক।
★ তর্জনী -- এই আঙুল মানুষের উচ্চাকাঙ্খা, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আর 'অহম'-এর প্রতীক। এর সাহায্যে কে, কতটা ভাগ্যবান এবং কাজে উন্নতি করবে তা-ও জানা যায়। তর্জনী সাধারণত উচ্চতায় মধ্যমা-র মধ্যভাগ-কে ছুঁয়ে থাকে। কারও আঙুল এর থেকে সামান্য লম্বা হলে বলা হয়, তার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর তার বৃহস্পতি গ্রহ খুবই শক্তিশালী। আঙুল ছোটো হলে অন্যের দেখানো পথে চলতে কিংবা একা কাজ করতে ভালোবাসে সেই মানুষটি। তর্জনী স্বাভাবিকের থেকে বেশি বড়ো হলে সব বিষয়ে অবহেলা ও ঔদ্ধত্য বেড়ে যায়। আর ছোটো হলে এই বৈশিষ্ট্যগুলোই আর থাকে না। তর্জনী বাঁকা যার, সে খুব চালাক, স্বার্থপর আর খল প্রকৃতির। এই আঙুলের ঠিক নীচেই বৃহস্পতির অবস্থান। গ্রহটি হাতে পূর্ণভাবে বিকশিত (উঁচু) হলে মানুষের মধ্যে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা, নীতিপরায়ণতা ও আত্মাভিমান দেখা যায়। বেশি উঁচু হলে অহঙ্কারী, রাগী, ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে ওঠে। নীচস্থ হলে বৃহস্পতির কোনও মৌলিক গুণ ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায় না।
★ মধ্যমা -- এই আঙুলের নীচে শনি গ্রহের অবস্থান। এটি সত্য, ন্যায়পরায়ণ, নিয়মানুবর্তিতার প্রতীক। অন্যান্য আঙুলের চাইতে তুলনায় একটু বেশি বড়ো হলে ব্যক্তিটি দায়িত্ববান, গভীর ব্যক্তিত্বশালী এবং উচ্চাকাঙ্খী হবে। আঙুলের উচ্চতা বেশি হওয়া মানে একাকীত্ব পছন্দ। এবং অনেক সময় বাজে কাজেও জড়িয়ে পড়তে পারে। উচ্চতায় ছোটো হলে অলস প্রকৃতির হয়। মধ্যমার প্রথম ভাগ লম্বা হলে আধ্যাত্মবাদের প্রতি আগ্রহ থাকবে। আঙুলের মধ্য ভাগ লম্বা হলে রসায়ন, লোহা সহ নানা ধরনের প্রযুক্তিগত ব্যবসায়-র সঙ্গে যুক্ত থাকবে। তৃতীয় ভাগ লম্বা হলে সেই ব্যক্তি চালাক, স্বার্থপর হয়। খারাপ কাজের সঙ্গে ষুক্ত থাকে। আঙুলের নীচে স্থিত শনিগ্রহের অবস্থান উঁচুতে হলে সেই মানুষ জ্ঞানী হয়। বিচারশক্তির ক্ষমতা প্রবল থাকে এবং ইন্দ্রিয় নিজের বশে থাকে।
★ অনামিকা -- এই আঙুল রবি-র ধারক। এটি আমাদের যশ লাভ, বুদ্ধি ও সৃষ্টিশীল কাজ করতে সাহায্য করে। তর্জনী-র থেকে অনামিকা লম্বা হলে সেই ব্যক্তির যে কোনও বিষয়ে ঝুঁকি নেওয়ার অদ্ভূত ক্ষমতা থাকে। এছাড়া, ফ্যাশন বা ছবির জগতে কাজ করার আগ্রহ দেখা যায়। লম্বায় ছোটো হলে সব অবস্থাতেই সে সন্তুষ্ট। যশ লাভের খুব ইচ্ছাও তার থাকে না। যদিও তর্জনী থেকে অনামিকা লম্বায় ছোটো খুব কমই দেখা যায়। অনামিকার নীচে অবস্থিত রবি গ্রহ পূর্ণ মাত্রায় (উঁচু) থাকলে সব কাজেই সাফল্য, যশ, প্রতিষ্ঠা আসে। ব্যক্তিটি পরিশ্রমী হয় এবং ব্যবসায় উন্নতি করে। ধার্মিক হলেও ধর্মান্ধ হয় না। নিজের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকে। এরা যেমন চট করে রেগে যায় তেমনি আবার খুব তাড়াতড়ি শান্তও হয়।
★ কনিষ্ঠা -- বুধ গ্রহের ধারক এই আঙুল। এর মাধ্যমে ব্যক্তির বাকপটুতা, জ্ঞান, বুদ্ধি ও চাতুর্য বোঝা যায়। কণিষ্ঠা অনামিকার প্রথম ভাগের সমান এর উচ্চতা হলে যে কোনও বিষয়েই ব্যক্তির অভিব্যক্তি কম প্রকাশ পায়। ভাবনা এবং কথায় নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ছেলেমানুষী স্বভাবে এর আরও একটি বৈশিষ্ট্য। আর লম্বা হলে আই কিউ তীক্ষ্ণ হয়। খুব ভালো লেখক ও সুবক্তা হয়। কনিষ্ঠা-র নীচু ভাগ চওড়া মানেই খুব বিলাসী।
এছাড়াও, হাতের আঙুলগুলি থেকে নির্দিষ্ট ব্যক্তির মনের ইচ্ছা, আয়ু সম্বন্ধেও জানা যায়। যেমন, যে কোনও আঙুলের অগ্রভাগ দেখে সেই ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তি, দ্বিতীয় ভাগ তর্ক করার ক্ষমতা জানা যায়। আঙুলগুলি টান টান সোজা মানেই মানুষটি প্রচণ্ড কঠোর ও জেদি হবেই। এই ধরনের মানুষ অত্যন্ত বিশ্বাসী হলেও কঠোর ও জেদি স্বভাবে জন্য বেশি বন্ধু থাকে না।
আবার হাতের আঙুল খুব নরম মানেই সেই ব্যক্তি অত্যন্ত খরুচে। তবে সহজে এই লোককে বিশ্বাস না করাই ভালো। জেদি হওয়ায় এদের বন্ধুর সংখ্যা কম। নরম মানসিকতার জন্য অনেকেই বন্ধুত্বের আগ্রহ দেখায়। যদিও এরা কঠিন কাজ বা দায়িত্ব নিতে পারে না। বোহেমিয়ন স্বভাবের জন্য এরা নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনাও নিতে পারে না।
হাত মেলে ধরার সময় যাদের সব আঙুল ৬০ ডিগ্রি-র কোণে খোলা যায় না তারা জ্ঞানী ও কর্ম নিপুণ হয়। যাদের ৯০ ডিগ্রি কোণ পর্যন্তু খোলে তারা অনায়েসে ঝুঁকি নিতে পারে। ১২০ডিগ্রি কোণের আঙুলধারীরা সব সময় অতিরিক্ত ঝুঁকি নিতে অভ্যস্ত। আঙুলের গঠন কোমর-এর মতো হলে সেই ব্যক্তি তর্কে পারদর্শী হলেও শারীরিক সুস্থতা কম থাকে।
আঙুলের ডগা ছুঁচালো হলে প্রখর বুদ্ধিমান হবে। আঙুল আগা-গোড়া চওড়া হলে প্রচণ্ড জেদি হবে। আঙুলের ডগা চৌকো হলে বাজে কাজে জড়িয়ে জেলে যাওয়ারও অসম্ভব নয়। যদিও এরা খুবই বাস্তব মেনে থাকে।

সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts