Thursday, February 14, 2019

হস্তরেখায় হাতের রং


হস্তরেখা বিজ্ঞানে যেমন রেখা এবং চিহ্নের সঙ্গে হাত বা নখের বিভিন্ন প্রকার গুরুত্বপূর্ণ। তেমনই হাতের রংও আপনার সম্পর্কে কিছু না কিছু বলে দিতে পারে। যেমন ---

লাল রং - যাঁদের হাত এই রঙের, তাঁরা জীবনে সমস্ত সুখ ভোগ করেন। এঁরা ভাবুক এবং রাগী স্বভাবের হয়ে থাকেন।

গাঢ় গোলাপী - এঁরা সাধারণত ধনী। এঁরা রাগী। এঁদের বুদ্ধি স্থির থাকে না। এঁরা তাড়াতাড়ি খুশি হয়ে যান আবার তাড়াতাড়ি রেগেও যান। এঁদের চিন্তা, ভাবনা পছন্দ, অপছন্দ, সমস্ত কিছু পরিবর্তনশীল। মধ্য আয়ু পর্ন্ত এঁদের উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকে।

হাল্কা গোলাপী - এঁরা উত্তম মানবীয় গুণ সম্পন্ন, ধনী এবং ঐশ্বর্যশালী। এঁদের মধ্যে প্রবল উত্‍‌সাহ থাকে। এদের ধৈর্য অনেক বেশি। দয়া, ক্ষমা এবং প্রেম এঁদের স্বভাবের মূল আধার। এঁরা আশাবাদী এবং প্রসন্নচিত্তের হয়ে থাকেন। এঁরা শিল্প এবং প্রকৃতি প্রেমী।

হলুদ - এঁরা দৃঢ় বিচারের হন না। মানসিক দিক দিয়ে নিরাশাবাদী হয়ে থাকেন। স্বভাবে মধুরতার অভাব থাকে। পায়ের রোগে কষ্ট পান। আলস্যের কারণ উন্নতি করতে পারেন না। জীবন সংঘর্ষপূর্ণ।

বেগুনি অথবা নীল - যাঁদের হাতের রং নীল বা বেগুনি, তাঁরা নিরাশাবাদী। এঁরা জীবনে অনেক সংঘর্ষ করেন। এঁরা একাকীত্ব পছন্দ করেন। রক্ত বিকারে কষ্ট পেয়ে থাকেন। মদ্যপান অথবা অন্যান্য বাসনার কারণে কার্যক্ষমতা বা প্রতিষ্ঠা নষ্ট হতে থাকে। এঁরা সমাজের প্রতি নিজের দায়িত্ব থেকে দূরে থাকেন। এঁরা রুক্ষ স্বভাবের।

হালকা কালো রং - এই রঙের হাতের ব্যক্তিরা কর্মঠ হন না। এঁরা অত্যন্ত রহস্যবাদী। কথাবার্তায় অসত্য তথ্যের সাহায্য নেন। পুরুষার্থের অভাব থাকে। এঁদের ব্যক্তিত্ব নিস্তেজ হয়ে থাকে। এই জাতকেরা স্বাস্থ্য সমস্যায় ঘিরে থাকেন। অর্থের অভাব থাকে। রক্ত বা কফ সম্পর্কিত সমস্যায় জর্জিরত।

নিস্তেজ সাদা - সাদা হাতের লোকেরা উত্‍‌সাহহীন। মানসিক শক্তির অভাব থাকে। এঁরা কর্মঠ হন না।

চমকদার সাদা - এই রঙের যাঁদের হাত, তাঁরা আলৌকিক শক্তির অধিকারী। এঁদের পরাশক্তির জ্ঞান থাকে। বিচারধারায় এঁরা খুব ভারসাম্য বজায় রাখেন। এঁদের বিচারধারা আধ্যাত্মিক। এঁরা শান্তির দূত এবং সুস্বাস্থ্যের অধিকারী।

হাতের রঙের পরীক্ষা করার আগে হাতের স্পর্শ করা উচিত নয়। কারণ হাতের ঘর্ষণ, স্পর্শ, ব্যায়াম, কঠিন শ্রমের ফলে কিছু ক্ষণের জন্য হাতের রং বদলে যেতে পারে। ব্যক্তি যখন সুস্থ থাকে, কোনও সমস্যায় না-থাকে, তখনই পরীক্ষা করা উচিত।

* Prediction করতে আরও বেশ কিছু তথ্যের প্রয়োজন হয় ।

[এই রং চেনা ব্যাপার টা বেশ জটিল, অনেক Practical Experience না থাকলে বোঝা যায় না]

রাশি অনুযায়ী যৌন আকর্ষন

প্রেম, ভালবাসার মতোই যৌনতাও জীবনের সঙ্গে জড়িত৷ তবে, সকলে এই বিষয়ে পারদর্শী হন না৷ তবে, জ্যোতিষশাস্ত্র মতে রাশি বিশেষে যৌনতার তারতম্য ঘটতে পারে৷ কোন রাশি যৌনতায় কতবেশি পারদর্শী তা জেনে নিন৷


মেষ রাশি: মেশ রাশির জাতক জাতিকার জীবনে যৌনতা প্রবল৷ দৈহিক প্রেমের ক্ষেত্রে এই রাশি যেমন শক্তি প্রযোগ করতে পারেন, তেমনই এরা দুর্দান্ত প্রেমিক হিসেবেই পরিচিত হন৷ তবে, যৌনতা টিকিয়ে রাখতে এরা সঙ্গীর সঙ্গে সমান তালে পাল্লা বেশ ভালই দিতে পারেন৷
বৃষ রাশি: এই রাশির জাতক জাতিকারা ভালবাসাকেই জীবনে সবকিছু বলে মনে করেন৷ যৌনতার ক্ষেত্রে এরা খুবই সংবেদনশীল৷ যৌনতা ধরে রাখা বা শক্তি প্রয়োগ করার ক্ষেত্রে এদের জুরি মেলা ভার৷ সহবাসের দিক থেকে এই রাশির মানুষরা ক্লান্তিবিহীন, সদাপ্রস্তুত থাকেন৷
মিথুন রাশি: বুধ গ্রহের প্রভাবে এই রাশির জাতক জাতিকারা সতর্ক, মিষ্টভাষী, আদুরে প্রকৃতির হয়ে থাকেন৷ মুখের কথা দিয়েই অপরকে বশ করতে পারেন এরা৷ এই রাশির মানুষেরা এক্সপেরিমেন্ট্রাল সেক্সে বিশ্বাস করেন৷ এই রাশির প্রেমিক বা প্রেমিকাকে আপনি যেভাবে চান, সেভাবেই আপনার শয্যায় পেতে পারেন৷
কর্কট রাশি: যৌনতার ক্ষেত্রে এই রাশি জাতক-জাতিকার কোন স্থিরতা নেই৷ এরা হঠাৎ করেই উত্তেজনার শিখরে পৌঁছে যান৷ আবার হঠাৎ করেই শান্ত হয়ে যান৷ তাই এই রাশির প্রেমিক বা প্রেমিকার কাছ থেকে প্রচুর সারপ্রাইজ পাওয়ার সুযোগ রয়েছে৷
সিংহ রাশি: প্রেমিক-প্রেমিকা হিসেবে সিংহরাশির এমনিতেই বেশ নাম রয়েছে৷ তবে, এই রাশির জাতক-জাতিকারা দৈহিক সম্পর্কেও বেশ পারদর্শী৷ যে কোন গাঢ় সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই রাশির ইতিবাচক মনোভাব, হাস্যরস ও শারীরিক দক্ষতা অতুলনীয়৷ সিংহ রাশির কাউকে ভালবাসার মানুষ হিসেবে পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার৷
কন্যা রাশি: এই রাশির জাতক-জাতিকার ভালবাসায় কোন খাদ যেমন থাকে না৷ তেমনই দুর্দান্ত সেক্সেও এরা পারদর্শী হন৷ কান, ঠোঁট ও স্তনের অংশে এই রাশির মানুষের সংবেদনশীলতা অতিরিক্ত মাত্রায় বেশি৷ দেহজ ভালবাসার ক্ষেত্রে কোমলতা ও রুক্ষতার মিশেল পছন্দ করেন এরা৷
তুলা রাশি: এই রাশির জাতক-জাতিকারা ‘‘ইউ আর জাস্ট ফ্রেন্ড’ তত্ত্বে বিশ্বাসী৷ শুক্রের প্রভাবে এরা সাধারণত সৌন্দর্য, রহস্যময়তা ও দৈহিক আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকেন৷ প্রেমিক বা প্রেমিকাকে সামান্য স্পর্শ, হাসি বা চোখের চাহনিতেই পটিয়ে ফেলতে পারেন এরা৷ যৌনতার এরা আপনাকে বশে আনতে চাইবে না বরং এরা আপনাকে প্রেমে পড়তে বাধ্য করবে৷
বৃশ্চিক রাশি: প্রবল আবেগ এই রাশির একটি দুর্বলতা৷ এরা কাউকে খুব সহজেই এড়িয়ে চলতে পারেন না৷ এর প্রায় তাদের যৌন জীবনে পড়ে৷ এদের যৌন জীবন উত্তেজনা, যন্ত্রণা ও উচ্ছ্বাসের একটি মিশেল৷ এই রাশির জাতক-জাতিকা খুব সহজেই যে কাউকে বশীভূত করতে পারে৷
ধনু রাশি: এই রাশির জাতক বা জাতিকাকে সঙ্গী হিসেবে পেলে জীবনে মজার অভিজ্ঞতার সূচনা করবে৷ এই রাশির মানুষরা রসিক, এনার্জেটিক ও আশাবাদী হয়ে থাকেন৷ অন্তরঙ্গ মুহুর্তে তারা এই ধরনের গুণের প্রকাশ করে থাকেন৷
মকর রাশি:মকর রাশির জাতক-জাতিকা যেকোন কাজে খুব ভেবে-চিন্তে পা ফেলেন৷ আর যৌনতা হলে তো কথাই নেই৷ প্রথমদিকে অপর সঙ্গীকে আগ্রহ প্রকাশ করতে হলেও পরে তা আনন্দে পরিণত হবে৷ কারণ, এই রাশির মানুষরা যৌনতার দিক থেকে ভীষণ মনোযোগী হয়ে থাকেন৷ এই রাশির প্রেমিক বা প্রেমিকের নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসী মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব মুশকিল৷
কুম্ভ রাশি: এই রাশির জাতক-জাতিকারা বিশেষ বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দেন৷ নিজের মনের মানুষের প্রতি এরা খুব যত্নবান হয়ে থাকেন৷ আপনি যেভাবে তাদের পেতে চান এরা ঠিক সেভাবেই আপনার কাছে ধরা দেবে৷
মীন রাশি: এই রাশির জাতক-জাতিকারা কথায় পারদর্শী৷ এছাড়াও এই রাশির মানুষেরা দৈহিক আকর্ষণে পরিপূর্ণ৷ এদের সামান্য স্পর্শেও আপনি উত্তেজিত হয়ে উঠতে বাধ্য৷ এদের ভালবাসা আপনাকে নিয়ে যেতে পারে অন্য এক জগতে৷

Monday, February 11, 2019

ত্রাটক সাধনায় আত্মচেতনার রহস্য

আগেই বলে নিচ্ছি গুরু ছাড়া এই সাধনা ভুলেও করতে যাবেন না।  যোগ্য যোগগুরু ছাড়া এই অভ্যাস কখনই করা 
উচিৎ নয়, চোখের ক্ষতি হতে পারে।

আত্মচেতনার পর্যালোচনা বিশাল পরিসরে করা যায়। দেশ ও জাতি ভেদে আত্মচেতনা সবারই এক। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটাই সত্য। কিন্তু ব্যক্তি বিশেষে আত্মচেতনা অন্য ক্ষেত্রে নানা রকম হয়ে থাকে। প্রতিটি মন ভিন্ন ভিন্ন চিন্তা করতে পারে। কারণ মনের জগতে বাক স্বাধীনতা রুখতে পারে এমন ক্ষমতাসীন কেউ বসে নেই।
এই যে ধরুন, একজন নগণ্য মানুষ (অবস্থান ও সামাজিক মর্যাদার ভিত্তিতে) নানা রকম ভাবনা-চিন্তা করতে পারে। সেও একটা পরিবারের প্রধান হতে পারে। সেই পরিবারকে সে নিজের রাষ্ট্র মনে করতে পারে। নিজের কথা পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রতি চাপিয়ে দিতে পারে। এটা তার স্বৈরাচারি মনোভাব। আবার পরিবারের সব সদস্যের মতামত নিয়েই যে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে। এই নিজস্ব জগত সবার ক্ষেত্রে একইভাবে প্রয়োগ করা যায়। এক্ষেত্রে পৃথিবীর ধনীর দুলালরাও আলাদা নয়।
যে ব্যক্তি একবেলা খাবার জোগাড় করতে পারে না, সে চিন্তা করে ধনী মানুষের সহানুভূতি সে পাচ্ছে না। এজন্য টাকার অহং নিয়ে যারা আশপাশে বসবাস করে তাদের সে দেখতে পারে না। আবার যারা প্রতিবেলায় প্রচুর খাবার নষ্ট করে কিংবা তাদের কুকুর ডলির খবারে যে খরচ হয় তার হিসাব তারা কষে না। পাশেই এক ব্যক্তির একবেলা খাবার জোটে না তা তার মনোজগতে আঘাত করে না।
হাজার হাজার টাকা খরচ করে যারা প্রতিদিন মাতাল হওয়ার জন্য বারে যায়, যাদের এই পন্থায় টাকা খরচ না করলে রাতের ঘুমটুকু হয় না, তাদের আত্মচেতনাও সেরকম। তারা মনে করে মিডিয়ার কোন সুন্দরীর সঙ্গে রাত কাটালে রাতের সময়টা মূল্যবান হবে, কিভাবে কোন কৌশলে কাজ করলে আরো ৫টা সুন্দরী পরের সপ্তাহে কাছে পাওয়া যাবে-এসব তাদেরই ভাবনা। আত্মচেতনা তাদের এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কারণ তারা বিশাল সম্পদশালী কিংবা বিশাল ক্ষমতাশালীদের কাছের বা হৃদয়ের লোক।
জীবন যাপনের এই ভিন্নতা মানুষকে কাছে টেনে নেয়, আবার মানুষকে দূরেও ঠেলে দেয়। এরমধ্যে মৃত্যু বাসা বাধে ক্ষণে ক্ষণে। অভিনয়স্থল ঠিকই থাকে, অভিনেতারা নতুন হয়। আত্মচেতনার জগতটা ক্ষণে ক্ষণে রঙ বদলাতে থাকে। এসবের পেছনে ক্ষমতাশালী মানুষেরাই সম্পদশালী মানুষেরাই অনুঘটক হিসেবে কাজ করে।
তবে মন মানবিকতা হারিয়ে ফেললে তা সমাজের সুখকে কেড়ে নেয়। মানবিকতার অভাবেই আজকের যুবক তরুণ সমাজ আনন্দ খোজে বিলাসবহুল শপিংমলে। সৃজনশীলতা তাদের টানে না। তাদের কাছ থেকে অপর আত্মা সুখ পায় না। তারা প্রতিনিয়ত অপরকে অবহেলা করে চলে। চেতনার এই যে টানাপোড়েন তা বড়ই বিচিত্র। এজন্যই সাম্য দরকার। যার গান গেয়েছেন মহামানবগণ।
'আত্মচেতনা' হল সেই শক্তি যা নিজে নিজেই কাজ করে চলে। একে ইংরেজীতে (Instinctive Mind) বলা হয়। এই আত্মচেতনা কোন কিছুর বিচার করে না বা সিদ্ধান্তও নেয় না। কিন্তু প্রথম থেকেই এটি সহজবু্দ্ধিতে কাজ করে যায়। কেউ অসুস্থ হলে এটি তাকে সুস্থ করার চেষ্টা করে। যদি আপনি ভীত হন ও হৃৎপিণ্ড দ্রুত লয়ে চলছে এমন হয় তবে এটি হৃৎপিণ্ডের গতিকে ধীর করবে। এটি সবসময় সাধককে ভাল রাখার ও সুরক্ষা দেওয়ার চেষ্টা করে।
'আত্মচেতনা' সাধকের মানসিক শক্তির স্রোত। যখন সাধকের কোন বিপদের আশঙ্কা আসে তখন সে তার আভাস পূর্ব থেকেই দিয়ে দেয়। কখনো কখনো আত্মচেতনা শক্তি তার অতীন্দ্রিয় দৃষ্টির দ্বারা ভবিষ্যৎ- এর বিপদ সম্পর্কে, তা শারীরিক হোক বা মানসিক, সাধককে হুঁশিয়ার করে দেয়।
কোন কাজ করার আগে সেই কাজ সাধকের দ্বারা হবে কিনা সে সম্পর্কে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হলে তখনই আত্মচেতনা শক্তি দ্বারা সে কাজ সহজেই সম্পন্ন করা যাবে। কিন্তু যদি সাধক উক্ত কাজ সম্পূর্ণ করতে পারার ব্যাপারে সন্দিহান হন তবে ঐ শক্তি কিন্তু কাজ করবে না।
যে কোনও প্রকার কঠিন ও আশ্চর্য কাজ করার ক্ষমতা আমাদের মধ্যে সকল সময়ই সুপ্ত অবস্থায় আছে কিন্তু আমরা তাকে জাগাবার চেষ্টাই করি না। সম্মোহিত অবস্থায় কিন্তু সম্মোহনকর্তা আমাদের সেই লুকানো শক্তিকে সজাগ করে অনেক আপাত কঠিন কাজ আমাদের কে দিয়ে করিয়ে নেন। সে কারণে আমাদের জানতে হবে যে সজ্ঞান অবস্থায় আমরা কি ভাবে আমাদের ঐ সুপ্ত শক্তিকে জাগিয়ে তাকে দিয়ে ইচ্ছানুসারে কাজ করাতে পারব।
সম্মোহিত অবস্থায় থাককালীন সমস্ত ইন্দ্রিয়ই অসাধারণ কাজ করে দেখাতে পারে। এই পরিস্থিতিতে কোন অঙ্গের পীড়াও একদম ঠিক হয়ে যেতে পারে। এইভাবে দর্শনেন্দ্রিয়, স্বাদেন্দ্রিয়, ঘ্রাণেন্দ্রিয় শক্তি এত অধিক শক্তিশালী করা যায় যে --- যে কোন প্রকার সুক্ষ্ম পার্থক্যও বুঝতে অসুবিধা হয় না। এমন কি এর দ্বারা জলের পরিবর্তনও বুঝতে পারা যায় অতি সহজে। অতীতের কোন স্মৃতিও মানুষের মন থেকে মুছে ফেলা সম্ভব হয়। এতএব যে মানসিক শক্তি মানুষকে মানুষ্যোত্তর শক্তি প্রদান করে তা মানুষের মধ্যে পূর্ব থেকেই থাকে, কিন্তু মানুষের চেতন শক্তি/মন তা প্রয়োগ করতে বাধা দেয়।
একথা ঠিক নয় যে যেকোন অদ্ভুত বা চমৎকার কাজ শুধুমাত্র সম্মোহিত অবস্থাতে সফল হবে এমন কোন কথা নেই। জাগরিত অবস্থাতেও এমন করা সম্ভব। শুধুমাত্র বিশ্বাসের উপর ভর করে বহু রোগ দূর করা যায়। কোন বাড়ি বা হাসপাতালে আগুন লাগলে সেখানে বছর বছর ধরে পড়ে থাকে প্যারালাইসিস রোগী (চলৎশক্তিহীন) দৌড়ে বাইরে চলে আসে। এটি আত্মচেতনা জাগরিত হবার উদাহরণ মাত্র। মানুষ তার চেতন মনে দৈনিক জীবনের সমস্যার বিষয়ে আবশ্যক সতর্কতা বজায় রখে তবে এরও একটা সীমাবদ্ধতা আছে। কিন্তু বিপদকালে সেই সীমাবদ্ধতার গণ্ডী আত্মচেতনার জাগণের সাথে সাথে সক্রিয় হয়ে অতিক্রম করে যায়। ফলে আপাতদৃষ্টিতে অসম্ভব কাজকে মানুষ সম্ভব করতে পারে। যে ব্যক্তির 'আত্মচেতনা' জাগরিত হয়েছে সে জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই সফলতা লাভ করে। কোন বিষয়ে যদি বিশেষ চেষ্টা নেওয়া যায় এবং তা যদি অত্যন্ত গভীর হয় তবে অবশ্যই সফলতা পাওয়া যায়। প্রত্যেক ব্যক্তির মনোবৈজ্ঞানিক ব্যবহার তার কোন কাজে সফলতা লাভের ক্ষমতার উপর বিশেষ প্রভাব বিস্তার করে। মানুষ তার ব্যক্তিত্বের বিকাশে যতই সচেষ্ট হবে ততই তার মানসিক ক্ষমতার বিকাশ ঘটবে।
অবচেতন মনে শুধুমাত্র ব্যক্তির জ্ঞান এবং অনুভব শক্তিই নেই, তাতে আছে চেতনমন দ্বারা সঞ্চিত বিশাল ভাণ্ডার। মানুষের অধিকারে যে জ্ঞান ও অনুভব শক্তি আছে তা তার চেতনমন দ্বারা অর্জিত। অন্য ব্যক্তি দ্বারা সম্মোহনের সাহায্যে ও নিজ ত্রাটক বিদ্যা অর্জনের মাধ্যমে এই ভাণ্ডারের বিষমতাকে দূর করা যায়।
মানুষ তার প্রতিভার দ্বারা অদ্ভুত মানসিক কাজ করে দেখাতে পারে। তবে এজন্য তাকে মনোবৈজ্ঞানিক বন্ধন থেকে মুক্ত হতে হবে যা মানুষের 'আত্মচেতনা'-কে বেঁধে রাখে। যদি মানুষ তার লক্ষ্য নির্ধারিত করে নেয় তখন সে তার 'আত্মচেতনা'-কে ঠিক সেরূপই জাগরিত করে নিতে পারে যেমনটা সম্মোহিত অবস্থায় হয়। কারণ প্রতিটি ব্যক্তি সম্মোহিত অবস্থায় অবচেতনমনের দ্বারা যে সব কাজ করতে পারে তা সে জাগরিত অবস্থাতেও করতে পারে, সে ক্ষমতা ও তার মধ্যে আছে। যখন এই ক্ষমতা মানুষ পাবে তখন কোন কাজই তার কাছে অসম্ভব বলে মনে হবে না। যদি সে এই ব্যাপারে আংশিক সফলতাও পায় তবু তার স্থান সাধারণ মানুষের থেকে উঁচু স্থানে থাকবে। আত্মচেতনাকে নিয়ন্ত্রণে রেখে মানুষ তার সাহায্যে অনেক অসম্ভব কাজকে সম্ভব করতে পারে। তবে তা তখনই সম্ভব হবে যখন মানুষ তার আত্মচেতনাশক্তিকে অবচেতন বা চেতন মনের অন্তনিহিত প্রভাব থেকে মুক্ত করতে পারবে।
পুরো নিষ্ঠার সঙ্গে স্বাভাবিক ও সহজ ভাবে নিজের 'আত্মচেতন' শক্তির সাথে সম্পর্ক স্থাপনের জন্য প্রতিদিন নিয়ম মতো চেষ্টা করতে হবে। যখনই তা সম্ভব হতে শুরু করবে তখনই সব দিয়ে আরো অধিক সফলতা মিলতে শুরু করবে। এই ভাবে আত্মচেতনার উপর মানুষের নিয়ন্ত্রণ যত বাড়তে থাকবে ততই মানুষ অসম্ভব কাজ অনায়াসে করতে পারবে।
যেমন অভ্যাস ও নিয়মিত শারীরিক দেহচর্চার দ্বারা মাংসপেশী সবল হয় তেমনি মানুষের মানসিক শক্তির বিকাশও সম্ভব হয়। এর জন্য মানুষ তার প্রত্যেক ভাবনা ও ইচ্ছাকে নিজের অধীনে রাখবে এবং 'আত্মচেতনা' শক্তি দ্বারা তা বাস্তবায়িত করবে। এর ফলে কোথাও কোন প্রকার বাধার সম্মুখীন হতে হবে না। এই ভাবে মানুষ নিজের চারিপাশে অনুকূল পরিবেশের সৃষ্টি করতে পারে। আসলে 'আত্মচেতনা' হলে সেই শক্তি যা মানবকে মহামানবে পরিণত করে।
বিভিন্ন আসন বা ব্যায়াম অভ্যাসে শরীরের বিভিন্ন উন্নতি সাধন হলেও ত্রাটক অভ্যাসের মাধ্যমে চোখের দৃষ্টি যতোটা বৃদ্ধি করা সম্ভব তা অন্য কোন পদ্ধতির দ্বারা সম্ভব নয়। চোখ হচ্ছে দেহের পঞ্চ ইন্দ্রিয়ের শ্রেষ্ঠ ইন্দ্রিয়। তাই ত্রাটক অভ্যাসের সময় চোখের উপর বা চোখের সূক্ষ্ম স্নায়ুমণ্ডলী এবং মাংসপেশীর উপর যেন কোন রকম চাপ না পড়ে সেদিকে অবশ্যই সতর্ক দৃষ্টি রাখা উচিত।


পদ্ধতি
---------
যে কোন ধ্যানাসনে বসে প্রথমে মনটাকে সুস্থির করুন। এবার সামনের পরিষ্কার দেয়ালে একটি কালো বিন্দু কিংবা মোমবাতির আলোর সামনে বসে এক নিবিষ্টে তাকিয়ে থাকুন। কিছু সময় পর চোখ দিয়ে অল্প অল্প জল বেরিয়ে আসতে পারে। এজন্যে চিন্তার কোন কারণ নেই। শুধু খেয়াল রাখতে হবে, আশপাশ থেকে অন্য কোন আলো যাতে বেশি পরিমাণে চোখের উপর এসে না পড়ে। এভাবে নির্দিষ্ট দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৪/৫ মিনিট তাকিয়ে থাকার অভ্যাস করুন।
কিছুদিন এই প্রক্রিয়ায় অভ্যাসের পর যে কোন ধ্যানাসনে বসে শরীর সুস্থির রেখে এবার শুধুমাত্র চোখের মণি’কে ধীরে ধীরে একবার ডানদিকে, পরে বামদিকে এবং একবার উপর দিকে, পরে নিচের দিকে নিতে থাকুন। তবে একদিক থেকে অপর দিকে যাবার সময় চোখের মণি’কে সামনের দিকে স্বাভাবিক অবস্থায় অল্প কিছুক্ষণ রাখতে হবে। এভাবে প্রতিটি দিকে সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার চোখের মণি ঘুরানোর অভ্যাস করুন।
আরো কিছুদিন এরকম অভ্যাসের পর এবার চোখের মণি একবার ঘড়ির কাঁটার দিকে কক-ওয়াইজ ঘুরিয়ে এবপর আবার উল্টোদিকে একবার এন্টি কক-ওয়াইজ ঘোরাতে থাকুন। নিজ নিজ সামর্থ্য অনুযায়ী ৫/৬ বার এই প্রক্রিয়াটি অভ্যাস করুন।
যা-ই করুন, কিছুতেই যেন মাত্রাধিক্য না হয়। পরিমাণে কম সংখ্যকবার করা যেতে পারে, কিন্তু বেশি বার করা মোটেও উচিত হবে না। এভাবে অভ্যাসের পর হাতের তালু দিয়ে চোখের উপর হালকা মালিশ করে নিন।
উপকারিতা
-----------------
এই ত্রাটক অভ্যাসে চোখের অনেক রোগ সেরে যায় এবং দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধি পায়। কোন আবেগীয় কারণ ছাড়াই যাদের চোখ দিয়ে জল পড়ে কিংবা ঘুম থেকে উঠার পর চোখে যন্ত্রণা হয়, তাদের জন্য ত্রাটক অভ্যাস বিশেষ ফলদায়ক।

সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts