বিজ্ঞানী টেসলার একটি বিখ্যাত উক্তি থেকে এই তিনটি সংখ্যার বিশেষত্ব প্রথমবার প্রকাশিত হয় । তিনি বলেছিলেন -
বঙ্গানুবাদ - আমরা যদি ৩, ৬ আর ৯ - এর বিশেষত্ব সম্বন্ধে জানতে পারি । তবে আমাদের হাতে চলে আসবে বিশ্বের চাবিকাঠি ।
কিন্তু এই ৩ , ৬ আর ৯ কেন এত বিশেষ ?
প্রথমেই আমাদের বুঝতে হবে আমরা অঙ্কের সূত্র আসলে উদ্ভাবন করি না । আমরা শুধু এটাকে আবিষ্কার করি । প্রকৃতির মধ্যে নিহিত রয়েছে কিছু প্যাটার্ন , সেই প্যাটার্নকে অনুসরণ করে আমরা নির্মাণ করেছি বিভিন্ন গাণিতিক সূত্র । এইজন্য মহাবিশ্বের যেকোনো স্থানে গেলেই আমরা পেতে পারি ২+২=৪ ।
এই প্যাটার্নগুলোর মধ্যে একটি হল - " পাওয়ার অফ ২ বাইনারি সিস্টেম "
অর্থাৎ কোন কিছু এক থেকে শুরু হয়ে ক্রমাগত সেটা একে অপরের দ্বিগুণ হতে থাকে । এই প্যাটার্নকে অনুসরণ করেই আমাদের কোশ এবং ভ্রূণ আস্তে আস্তে বিভাজিত হয় । তাই এই প্যাটার্নকে - ১ , ২, ৪, ৮ , ১৬, ৩২ , ৬৪ , ১২৮ , ২৫৬…… অনেকে বলে থাকে " ভগবানের পরিকল্পনা " ( God's blueprint) ।
এবার এই উপরিক্ত প্যাটার্নের বিশেষত্ব হল -
১
১×২=২
২×২= ৪
৪×২= ৮
১৬ —-> ১+৬ = ৭
৩২ —- > ৩+২ =৫
৬৪ —-> ৬+৪ = ১
১২৮ —- > ১+২+৮ = ২
২৫৬ —-> ২+৫+৬ = ৪
৫১২ —- > ৫+১+২ = ৮
অর্থাৎ পর্যবেক্ষণ করলে বোঝা যাচ্ছে যে - ১, ২, ৪,৮, ৭, ৫ এই প্যাটার্ন বারংবার ফিরে ফিরে আসছে । এটা যেন ওই পেন্ডুলামের ঘড়ির মতো দুলে দুলে ফিরে আসছে তার সেই প্রাথমিক অবস্থায় । আবার আমরা যদি ১ থেকে শুরু করি এবং সেটাকে ক্রমাগত অর্ধেক করতে থাকি তবেও আমরা ঠিক একই প্যাটার্নকে বিপরীত দিক থেকে ফিরে পাব -
১
১/২ = ০.৫ — > ৫
০.৫/২ = ০.২৫ — > ২+৫=৭
০.২৫/২ = ০.১২৫ —- > ১+২+৫ = ৮
কিন্তু ভালো করে লক্ষ্য করলে দেখা যাবে এই প্যাটার্নে তিনটে সংখ্যা অনুপস্থিত - ৩, ৬ আর ৯ । এই তিনটে সংখ্যা যেন এই প্যাটার্নের ঊর্ধ্বে থাকা মুক্ত কোন সত্ত্বা । বিজ্ঞানী মার্ক রোডিন বিশ্বাস করেন - এই তিনটে সংখ্যা বর্ণনা করে ফোরথ বা থার্ড ডায়মেনশনের কোন ভেক্টর , যাকে তিনি নাম দিয়েছিলেন ফ্লাক্স ফিল্ড ।
এবার যদি আমরা ৩ সংখ্যাটিকে নিয়ে তাকে ক্রমাগত দ্বিগুণ করতে থাকি । তবে আমরা পাব -
৩
৩*২ = ৬
৬*২= ১২ — > ১+২ = ৩
১২*২ = ২৪ — > ২+৪ = ৬
এটাও আবার একটা প্যাটার্ন । ৩ আর ৬ -এর মধ্যে দোদুল্যমান একটা প্যাটার্ন । কিন্তু এই প্যাটার্নে ৯ অনুপস্থিত ।
তবে কি ৯ অন্য কোন প্যাটার্নের অন্তর্ভুক্ত ?
হ্যাঁ , একদমই তাই।
এই ৯ সংখ্যাটিকে দ্বিগুণ করলে আমরা পাব -
৯
৯*২ — > ১৮ = ১+৮ = ৯
১৮* ২ — > ৩৬ = ৩+৬ = ৯
অর্থাৎ এই প্যাটার্নে শুধু অস্তিত্ব রয়েছে সংখ্যা ৯ -এর ।
এবার তিনটে প্যাটার্নকে যদি একত্রিত করে পরপর বসাই । তবে আমরা পাব দুটো মেরু । যার একদিকে রয়েছে ১, ২, ৪ আর অপরদিকে রয়েছে ৮, ৭,৫ । বিশ্বের সব কিছু যেন নদীর স্রোতের মতো একবার ১, ২, ৪ থেকে ৮, ৭,৫ দিকে যাচ্ছে আবার ফিরে আসছে ১,২,৪ — এর কাছে । আবার ভালো করে লক্ষ্য করলে বুঝব এই ১,২,৪ - কে আগলে রেখেছে ৩ আর ৮,৭,৫ -কে আগলে রেখেছে ৬ ।
আবার এই ৩ আর ৬ রয়েছে ৯-এর অধীনে ।
৩+৬ = ৯ =৬+৩
১+২+৩+৬+৭+৮+৯ = ৪৫—- > ৪+৫ =৯
১+২+৪+৫+৭+৮ = ২৭ —- > ২+৭= ৯
সুতরাং সব কিছু যেন মিশে রয়েছে ৯ -এর মধ্যে আর ৯ হল সেই একক সত্ত্বা ।
শুধু এটাই নয় আরও অনেক পথ রয়েছে যেগুলো থেকে অনুভব করা গেছে সব কিছুর অভ্যন্তরে লুকিয়ে রেয়েছে ৩ , ৬ আর ৯ ।
যেমন আমাদের সংখ্যাদের মধ্যে -
প্রকৃতির প্রতিসাম্যতার অভ্যন্তরে
আমাদের প্রকৃতির ক্ষেত্রেও তিন এবং ছয় মাত্রার প্রতিসাম্যতাও বেশ স্পষ্টরূপে লক্ষ্য করা যায়। যেমন — মৌমাছির চাঁকে ছয়মাত্রার প্রতিসাম্যতা দেখা যায় ।
সময়কালে
আমাদের ১ ঘন্টাতে ৬০ মিনিট → ৬
১ মিনিটে ৬০ সেকেন্ডে → ৬
১ দিনে রয়েছে ২৪ ঘন্টা → ২+৪=৬
জ্যামিতিক আকৃতিতে
একটা বৃত্তের কোণের মান ৩৬০°
সেই ৩+৬+০=৯
আবার একে অর্ধেক করলে পাওয়া যায় —১৮০°
১+৮+০= ৯
আবার সেটাকে অর্ধেক করলেও পাওয়া যায় — ৯০°
৯+০ =৯
পরমাণুর অভ্যন্তরে
পরমাণু গঠিত হয় তিনটে অংশ দিয়ে — নিউট্রন , প্রোটন আর ইলেকট্রন ।
আবার কোয়ার্ক আর লেপ্টনের ক্ষেত্রে সংখ্যা ৬
আমাদের ঋতুর সংখ্যা ৬
আমাদের বিশ্ব গঠিত হয়েছে তিনটে জিনিস দিয়ে — ডার্ক ম্যাটার , ডার্ক এনার্জি আর সাধারণ বস্তু / ম্যাটার ।
৩ সংখ্যাটাও বেশ অদ্ভুত ।
এটি একমাত্র মৌলিক সংখ্যা , যার পূর্ববর্তী সংখ্যার সমষ্টি ওই সংখ্যাটি নিজে ।
০+১+২=৩
হয়ত চেষ্টা করলে প্রকৃতির মধ্যে আরো বহুক্ষেত্রে আমরা খুঁজে পাব ৩,৬,৯ সংখ্যা তিনটির অস্তিত্ব ।
এগুলো কি নিখাদ কোন কাকতালীয় ঘটনা বা সমাপতন না'কি নিকোলা টেসলার উক্তিই কোন ইঙ্গিত বহন করছে । ভবিষ্যত হয়ত উত্তর দেবে আমাদের।
ধন্যবাদ
তথ্য সূত্রঃ গুগল