Thursday, March 14, 2019

অষ্টসিদ্ধির প্রকাশ বর্ণনা

অষ্টসিদ্ধি হলো এমন এক শক্তি যা যোগীরা কঠোর তপস্যার পরে অর্জন করতে সক্ষম হয়। এই অষ্টসিদ্ধি অর্জনে প্রথমে সদগুরুর আশ্রিত হতে হয় এবং নিজেকে শুদ্ধ, সূচী, একনিষ্ঠ, তপপ্রকোর ও অনাহারী হিসেবে তৈরী করতে হয়। যে যেই গুরুর আশ্রিত হয় তদ্বপর সেই শিষ্য একটি শুভদিনে দীক্ষা গ্রহন করে নিজের স্থান গুরুর কাছে পাকাপোক্ত বা শক্ত করে গুরুকে এই বিশ্বাস দেখাতে হবে যে, হ্যা আমি পারবো আর আমিই উক্ত তপের জন্য পারদর্শী। যখন পরমাধ্য গুরুদেব বুঝতে পারবেন যে, তাঁর শিষ্য তপস্যার জন্য প্রস্তুত; তখনই তিনি যোগাসন পদ্ধতি ও ধ্যান প্রণালীর প্রস্তুতি সম্বন্ধে শিষ্যকে অভ্যাস শুরু করাবে। তখন অভ্যাস যখন নীতি ও ভক্তিতে রুপান্তর হয় তখন যোগী একটি নীরব স্থান সন্ধান করে নিজের কার্যসিদ্ধি পূরণের লক্ষ্যে। অতঃপর যোগী নিজের যোগ অভ্যাস শুরু করে, এই যোগ তপস্যা অনেকের কাছে পাঁচবছর, অনেকের কাছে সাতবছর, অনেকের কাছে দশবছর বা তারও বেশি সময় লেগে যায়। তপস্যা ধ্যান পূর্ণ হয় যোগীর দৃঢ়তা, একনিষ্ঠতা, ধ্যানস্থ সমাধীর তেজোদীপ্তের উপর নির্ভর করে। যখন যোগী অষ্টসিদ্ধি অর্জনে পারদর্শী হয় তখন তিনি মহাযোগীর স্থান অর্জন করে। তখন ঐ মহাযোগী নিজের চাহিদা অনুসারে নিজের তপোবল বাড়াতে চাইলেও পারে এবং নিজেকে সৃষ্টির মহা এক উচ্চ স্থানে প্রতিষ্ঠিত করতে পারে। সৃষ্টির এই চৌদ্দ ভুবনের যেকোনো লোকে তিনি নিজেকে স্থায়ী বাসিন্দা করতে সক্ষম হয়।





ঋগবেদ মতে আমাদের ব্রহ্মান্ডের ১৪টি ভুবন

১। সত্যলোক

২। তপোলোক

৩। জনলোক

৪। মহর্লোক

৫। সপ্তর্ষিলোক

৬। ধ্রুববোক

৭। স্বর্গলোক

০। ভূলোক(পৃথিবী)

৮। অতল

৯। বিতল

১০। সুতল

১১। তলাতল

১২। মহাতল

১৩। রসাতল

১৪। পাতাল

এখন মূল আলাপ হচ্ছে ধ্যানের প্রথম স্তর যাকে অষ্টসিদ্ধি বলা হয়, সেই অষ্টসিদ্ধি কত প্রকার ও কি

কি?

অষ্টসিদ্ধি আট প্রকার যেমনঃ-

১) অণিমা

২) লঘিমা

৩) গরিমা

৪) প্রাপ্তি

৫) প্রাকাম্য

৬) মহিমা বা কামাবসায়িতা

৭) ঈশিত্ব বা ঈশিতা

৮) বশিত্ব বা বশিতা

এই আট প্রকার অষ্টসিদ্ধির প্রকাশ গুলো হলোঃ-

১)অনিমা:- তারা ইচ্ছা করলে অনুর মত ক্ষুদ্র আকার ধারন করতে পারেন অথবা নিজেকে শূণ্য রুপে

পরিণত করতে পারেন। এরকম সিদ্ধি অর্জনকে বলে অনিমা।

২)লঘিমা:- ইচ্ছামতো হালকা জলের উপর হেঁটে যেতে বা শূন্যে ঘুরে বেড়াতে পারেন। এরকম

সিদ্ধি অর্জনকে বলে লঘিমা।

৩)গরিমা:- অত্যন্ত ভারী হতে পারেন, লঘুকরণ ধারণ করা মুহুর্তের ব্যাপার মাত্র। এই সিদ্ধি অর্জনকে
বলে গরিমা।

৪)প্রাপ্তি:- যে কোনও স্থান থেকে যা ইচ্ছা! তাই প্ৰাপ্ত হতে পারেন। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ
জ্ঞান নিজের মুষ্টিবদ্ধ করা শক্তি অর্জন। এরকম সিদ্ধি অর্জনকে বলে প্ৰাপ্তি।

৫)প্রাকাম্য:- কোনও বাসনা চরিতাৰ্থ করতে এবং কখনও নিরাশ না হওয়ার জন্য যে সিদ্ধি অর্জন তাঁকে বলে প্রাকাম্য।

৬)মহিমা বা কামাবসায়িতা:- ইচ্ছামতো বা খামখেয়ালী ভাবে যে কোনও জড়রুপ ধারণ করতে পারেন। নিজের ঐশ্বর্য শক্তি ও তেজ শক্তির প্রভাবকে ক্ষমতাবদ্ধ করা, এই ধরনের সিদ্ধি অর্জনকে বলে মহিমা বা কামাবসায়িতা।

৭)ঈশিতা:- কোনও স্থানে কিছু অদ্ভুত জিনিষ সৃষ্টি করতে পারেন বা ইচ্ছানুসারে কোন জিনিস ধ্বংসও
করতে পারেন। সৃষ্টির নবকিছু আর্বিভাব ও ধ্বংস যাঁর ক্ষমতার আওতায়, এরকম সিদ্ধি অর্জনকে বলে
ঈশিতা।

৮)বশিতা:- জড় উপাদান গুলোকে কেবল ইচ্ছা অনুসারে নিয়ন্ত্ৰণ করতে পারেন। সৃষ্টির প্রতিটি
জীবকে নিজের বশীভূত করা যাঁর একটি দৃষ্টি প্রক্ষেপ মাত্র, এরকম সিদ্ধি অর্জনকে বলে বশিতা।

সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts