Thursday, January 23, 2020

সামুদ্রিক শাস্ত্রে আমাদের হাতের আঙুল

প্রবাদে আছে, চোখ নাকি মনের আয়না! কিন্তু অনেকেরই জানা নেই, হাতের গড়ন দেখেও একজন মানুষ সম্বন্ধে অনেক কিছু জানা যায়।বৃদ্ধাঙ্গুল ছাড়া বাকি চারটে আঙুল, তর্জনী, মধ্যমা, অনামিকা আর কনিষ্ঠা - প্রত্যেকটি একেকটি গ্রহের প্রতিনিধি। এই আঙুলের আকার-প্রকারের বিভিন্নতা মানুষের চরিত্রেও ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
আঙুলের গড়ন দেখে মানুষ চেনার আগে জেনে নিন, কোন আঙুল কোন গ্রহের প্রতিনিধি। তর্জনী - গুরু বা বৃহস্পতি, মধ্যমা - শনি, অনামিকা - রবি বা সূর্য আর কনিষ্ঠা - বুধ গ্রহের প্রতীক।

★ তর্জনী -- এই আঙুল মানুষের উচ্চাকাঙ্খা, নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা আর 'অহম'-এর প্রতীক। এর সাহায্যে কে, কতটা ভাগ্যবান এবং কাজে উন্নতি করবে তা-ও জানা যায়। তর্জনী সাধারণত উচ্চতায় মধ্যমা-র মধ্যভাগ-কে ছুঁয়ে থাকে। কারও আঙুল এর থেকে সামান্য লম্বা হলে বলা হয়, তার নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে। আর তার বৃহস্পতি গ্রহ খুবই শক্তিশালী। আঙুল ছোটো হলে অন্যের দেখানো পথে চলতে কিংবা একা কাজ করতে ভালোবাসে সেই মানুষটি। তর্জনী স্বাভাবিকের থেকে বেশি বড়ো হলে সব বিষয়ে অবহেলা ও ঔদ্ধত্য বেড়ে যায়। আর ছোটো হলে এই বৈশিষ্ট্যগুলোই আর থাকে না। তর্জনী বাঁকা যার, সে খুব চালাক, স্বার্থপর আর খল প্রকৃতির। এই আঙুলের ঠিক নীচেই বৃহস্পতির অবস্থান। গ্রহটি হাতে পূর্ণভাবে বিকশিত (উঁচু) হলে মানুষের মধ্যে নেতৃত্ব দানের ক্ষমতা, নীতিপরায়ণতা ও আত্মাভিমান দেখা যায়। বেশি উঁচু হলে অহঙ্কারী, রাগী, ঈর্ষাপরায়ণ হয়ে ওঠে। নীচস্থ হলে বৃহস্পতির কোনও মৌলিক গুণ ব্যক্তির মধ্যে দেখা যায় না।
★ মধ্যমা -- এই আঙুলের নীচে শনি গ্রহের অবস্থান। এটি সত্য, ন্যায়পরায়ণ, নিয়মানুবর্তিতার প্রতীক। অন্যান্য আঙুলের চাইতে তুলনায় একটু বেশি বড়ো হলে ব্যক্তিটি দায়িত্ববান, গভীর ব্যক্তিত্বশালী এবং উচ্চাকাঙ্খী হবে। আঙুলের উচ্চতা বেশি হওয়া মানে একাকীত্ব পছন্দ। এবং অনেক সময় বাজে কাজেও জড়িয়ে পড়তে পারে। উচ্চতায় ছোটো হলে অলস প্রকৃতির হয়। মধ্যমার প্রথম ভাগ লম্বা হলে আধ্যাত্মবাদের প্রতি আগ্রহ থাকবে। আঙুলের মধ্য ভাগ লম্বা হলে রসায়ন, লোহা সহ নানা ধরনের প্রযুক্তিগত ব্যবসায়-র সঙ্গে যুক্ত থাকবে। তৃতীয় ভাগ লম্বা হলে সেই ব্যক্তি চালাক, স্বার্থপর হয়। খারাপ কাজের সঙ্গে ষুক্ত থাকে। আঙুলের নীচে স্থিত শনিগ্রহের অবস্থান উঁচুতে হলে সেই মানুষ জ্ঞানী হয়। বিচারশক্তির ক্ষমতা প্রবল থাকে এবং ইন্দ্রিয় নিজের বশে থাকে।
★ অনামিকা -- এই আঙুল রবি-র ধারক। এটি আমাদের যশ লাভ, বুদ্ধি ও সৃষ্টিশীল কাজ করতে সাহায্য করে। তর্জনী-র থেকে অনামিকা লম্বা হলে সেই ব্যক্তির যে কোনও বিষয়ে ঝুঁকি নেওয়ার অদ্ভূত ক্ষমতা থাকে। এছাড়া, ফ্যাশন বা ছবির জগতে কাজ করার আগ্রহ দেখা যায়। লম্বায় ছোটো হলে সব অবস্থাতেই সে সন্তুষ্ট। যশ লাভের খুব ইচ্ছাও তার থাকে না। যদিও তর্জনী থেকে অনামিকা লম্বায় ছোটো খুব কমই দেখা যায়। অনামিকার নীচে অবস্থিত রবি গ্রহ পূর্ণ মাত্রায় (উঁচু) থাকলে সব কাজেই সাফল্য, যশ, প্রতিষ্ঠা আসে। ব্যক্তিটি পরিশ্রমী হয় এবং ব্যবসায় উন্নতি করে। ধার্মিক হলেও ধর্মান্ধ হয় না। নিজের যোগ্যতা ও অযোগ্যতা সম্পর্কে যথেষ্ট ওয়াকিবহাল থাকে। এরা যেমন চট করে রেগে যায় তেমনি আবার খুব তাড়াতড়ি শান্তও হয়।
★ কনিষ্ঠা -- বুধ গ্রহের ধারক এই আঙুল। এর মাধ্যমে ব্যক্তির বাকপটুতা, জ্ঞান, বুদ্ধি ও চাতুর্য বোঝা যায়। কণিষ্ঠা অনামিকার প্রথম ভাগের সমান এর উচ্চতা হলে যে কোনও বিষয়েই ব্যক্তির অভিব্যক্তি কম প্রকাশ পায়। ভাবনা এবং কথায় নিজের নিয়ন্ত্রণ থাকে না। ছেলেমানুষী স্বভাবে এর আরও একটি বৈশিষ্ট্য। আর লম্বা হলে আই কিউ তীক্ষ্ণ হয়। খুব ভালো লেখক ও সুবক্তা হয়। কনিষ্ঠা-র নীচু ভাগ চওড়া মানেই খুব বিলাসী।
এছাড়াও, হাতের আঙুলগুলি থেকে নির্দিষ্ট ব্যক্তির মনের ইচ্ছা, আয়ু সম্বন্ধেও জানা যায়। যেমন, যে কোনও আঙুলের অগ্রভাগ দেখে সেই ব্যক্তির ইচ্ছাশক্তি, দ্বিতীয় ভাগ তর্ক করার ক্ষমতা জানা যায়। আঙুলগুলি টান টান সোজা মানেই মানুষটি প্রচণ্ড কঠোর ও জেদি হবেই। এই ধরনের মানুষ অত্যন্ত বিশ্বাসী হলেও কঠোর ও জেদি স্বভাবে জন্য বেশি বন্ধু থাকে না।
আবার হাতের আঙুল খুব নরম মানেই সেই ব্যক্তি অত্যন্ত খরুচে। তবে সহজে এই লোককে বিশ্বাস না করাই ভালো। জেদি হওয়ায় এদের বন্ধুর সংখ্যা কম। নরম মানসিকতার জন্য অনেকেই বন্ধুত্বের আগ্রহ দেখায়। যদিও এরা কঠিন কাজ বা দায়িত্ব নিতে পারে না। বোহেমিয়ন স্বভাবের জন্য এরা নির্দিষ্ট কোনও পরিকল্পনাও নিতে পারে না।
হাত মেলে ধরার সময় যাদের সব আঙুল ৬০ ডিগ্রি-র কোণে খোলা যায় না তারা জ্ঞানী ও কর্ম নিপুণ হয়। যাদের ৯০ ডিগ্রি কোণ পর্যন্তু খোলে তারা অনায়েসে ঝুঁকি নিতে পারে। ১২০ডিগ্রি কোণের আঙুলধারীরা সব সময় অতিরিক্ত ঝুঁকি নিতে অভ্যস্ত। আঙুলের গঠন কোমর-এর মতো হলে সেই ব্যক্তি তর্কে পারদর্শী হলেও শারীরিক সুস্থতা কম থাকে।
আঙুলের ডগা ছুঁচালো হলে প্রখর বুদ্ধিমান হবে। আঙুল আগা-গোড়া চওড়া হলে প্রচণ্ড জেদি হবে। আঙুলের ডগা চৌকো হলে বাজে কাজে জড়িয়ে জেলে যাওয়ারও অসম্ভব নয়। যদিও এরা খুবই বাস্তব মেনে থাকে।

Tuesday, January 7, 2020

মন্ত্র' গুণে দাম্পত্য সুখ

ঝগড়া, মান-অভিমান ছাড়া আবার স্বামী-স্ত্রী-র সম্পর্ক হয় নাকি! তা বলে কোনও জিনিসটাই তো বেশি ভালো নয়। এমন অনেক দম্পতি আছেন, যাঁরা মানসিক শান্তি বিসর্জন দিয়ে কেবল লোকলজ্জা বা সমাজের ভয়ে দীর্ঘদিন এক ছাদের তলায় বাস করে যাচ্ছেন। এটা একেবারেই কাম্য নয়। রোজের দাম্পত্য-কলহ এড়িয়ে বৈবাহিক সম্পর্ককে সুখী করার জন্য এমন কিছু মন্ত্র রয়েছে যা নিষ্ঠার সঙ্গে পালন করলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই উপকার মেলে।
-
রোজ যাঁদের মধ্যে অশান্তি লেগেই থাকে তাঁরা সূর্য ওঠার আগে স্নান সেরে প্রতিষ্ঠিত শিব মন্দিরে গিয়ে মন্ত্র জপ করতে করতে শিব লিঙ্গে নিয়মিত জল ঢালুন। মন্ত্রটি হল -----
-
'ওং নমঃ সম্ভবায় চ ময়ো ভবায় চ নমঃ।
শংকরায় চ ময়স্করায় চ নমঃ শিবায় চ শিবতরায় চ।।'
-
এবং প্রতি সোমবার ভোরে স্নান সেরে 'ওঁ সোমেশ্বরায় নমঃ' মন্ত্র জপ করতে করতে শিবলিঙ্গের মাথায় দুধ মিশ্রিত জল ঢাললেও উপকার পাওয়া যাওয়া। জল ঢালার পর মন্দিরে বসে রুদ্রাক্ষের জপমালা নিয়ে দেবাদিদেব মহাদেবের স্মরণ নিন। পাঁচটি নারকেল শিবমূর্তির সামনে রেখে জপ করুন-- 'ওঁ শ্রী বর প্রদায় শ্রী নমঃ' মন্ত্র। স্ফটিক বা রুদ্রাক্ষের জপমালা হাতে নিয়ে এই মন্ত্র মোট পাঁচ মালা (জপের সময় জপমালার সমস্ত রুদ্রাক্ষ গুণতে হবে। পুরোটা একবার গোণা হলে এক মালা গোণা হল। জপ শেষে নারকেল দেবতার উদ্দেশ্য নিবেদন করুন। (এক মালা = ১০৮ বার)
-
আবার অনেকের মধ্যে ঝগড়া-ঝাঁটি তেমন না হলেও মতের মিল হয় না কখনও। সকালে স্নান সেরে দেবী দুর্গার ছবির সামনে প্রদীপ, ধূপ আর ফুল দিন। এরপর নীচে বলা মন্ত্র ১০৮ বার জপ করুন। ভক্তি ভরে নিয়ম মানলে ২১ দিনের মধ্যে সুফল পাওয়া সম্ভব।
-
মন্ত্র -----
'ধাং ধীং ধুং ধূর্জটে পত্নী
বাং বীং বূং বাগধীশ্বরী।
ক্রাং ক্রীং ক্রূং কালিকা দেবী
শাং শীং শূং মেং শুভং কুরু।।
-
দুঃখ-দারিদ্র্যে জর্জরিত? বা পারিবারিক কলহ রাতের ঘুম কেড়েছে? অর্থের কারণে রোজের দাম্পত্য-কলহ বৈবাহিক সম্পর্ককে কলুষিত করছে? তা হলে এই দুর্গা মন্ত্র জপ করলে সমস্ত বিপত্তি দূর হবে। পরিবারে সুখের বাস হবে।
-
দারিদ্রতা এবং দুঃখ ইত্যাদি দূর করতে মন্ত্র ------
-
দুর্গে স্মৃতা হরসি ভীতিমশেষজন্তোঃ
স্বস্থৈঃ স্মৃতা মতিমতীব শুভাং দদাসি।
দারিদ্র্যদুঃখভয়হারিণি কা ত্বদন্যা সর্বোপকারকরণায় সদার্দ্রচিত্তা।।
-
***প্রত্যেক দিন শ্রী শ্রী চণ্ডীর 'কুঞ্জিকা স্তোত্রম্' পাঠ করতে ভুলবেন না যেন।

সাকার উপাসনার কিছু রেফারেন্স

 নিরাকারবাদী এবং একদল বিধর্মীদের দাবি বেদাদি শাস্ত্রে প্রতিমা পূজা এবং সাকার উপাসনার উল্লেখ নেই। সনাতন ধর্মাবলম্বীরা বেদবিরুদ্ধ মূর্তিপূজা ক...

Popular Posts